মুক্তিযোদ্ধা হয়েও তালিকায় নাম নেই সাইয়্যেদার রহমানের
কিশোরগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই বাচাই শুরু
খাদেমুল মোরসালিন শাকীর, কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধি॥ নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই বাচাই শুরু হয়েছে।
শনিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সম্মেলন কক্ষে আনুষ্ঠানিক ভাবে যাচাই বাছাই শুরু করা হয়। এ সময় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সম্মেলন কক্ষের সামনে উপস্থিত থেকে যাচাই বাছাই প্রক্রিয়া উপলব্ধি করেন। উপজেলার ৮৫ জনের যাচাই বাছাই কার্যক্রম মোট ৪ দিনে অনুষ্টিত হবে। ১১ ফেব্রুয়ারী সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ২৮জন মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষাতকার গ্রহন করা হয়। সাক্ষাতকার গ্রহন করেন জামুকার প্রতিনিধি,কিশোরগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির সভাপতি ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা কেফায়েত হোসেন। সদস্য সচিব হিসাবে দায়িত্বপালন করেন কিশোরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম মেহেদী হাসান জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রতিনিধি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন নীলফামারী জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সহকারী কমান্ডার এ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হক প্রমূখ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন লাল মুক্তিবার্তার সদস্য ও ভারতীয় তালিকার মুক্তিযোদ্ধারা। মুক্তিযোদ্ধা কেফায়েত হোসেন বলেন,সমস্ত কিছুর উর্দ্ধে থেকে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় যাচাই বাছাই কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে। তবে দেশ স্বাধীন হওয়ার ৬১বছরে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেন মুক্তিযোদ্ধা সাইয়্যেদার রহমান। তিনি ১৯৫৫ সালের ১১ মে কিশোরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের মধ্য রাজীব (হিন্দুপাড়ায়) পিতা মৃত আইন উদ্দিন ও মাতা কফিরণ নেছার ঘরে জন্ম গ্রহন করেন। মুক্তিযোদ্ধা সাইয়্যেদার রহমান সাক্ষাতকার শেষে হাউমাউ করে কেঁদে বলেন, মুক্তিযুদ্ধে আমার শরীরে পাকা হানাদার বাহিনীর গুলি আমার কোমড়ের একপাশ দিয়ে ঢুকে অন্যপাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। তবুও আমার কপালে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম আসেনি। অবশেষে তার (সাইয়েদার রহমানের) পক্ষে স্বাক্ষ্য দিয়ে দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আফছার আলী,আলিমুর রহমান,আব্দুল গণি ও তমিজ উদ্দিন। মুক্তিযোদ্ধা আফছার আলী বলেন,যারা সঠিক মুক্তিযোদ্ধা তাদের নাম তালিকায় না থাকলে প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে যাব। আমি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে আরেকজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা সাইয়্যেদার রহমানের পক্ষে স্বাক্ষ্য দিয়েছি। তিনি জোড় দাবী করে বলেন,এখনো অনেক ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম আনতে চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছে তাদেরকে যেন কোনভাবে তালিকায় নাম দেয়ার সুপারিশ করা না হয়। মুক্তিযোদ্ধা সাইয়্যেদার রহমান বলেন,মুক্তি যুদ্ধে অংশ নিয়েও আমার কপালে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম আসেনি। সারাজীবন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বাসভবনে কাজ করে সৎ পথে উপার্জন করে ২ ছেলে ও ২ মেয়েকে মানুষ করেছি। এখন শেষ ইচ্ছা মৃত্যুর আগে যেন সঠিক মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করতে পারি। দেশ স্বাধীন করেছি,রক্ত দিয়েছি,হানাদার মুক্ত বাংলাদেশ গড়েছি। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম নিয়ে আসতে কাউকে কোন ঘুষ বা অসৎ কিছু করতে চাই না। তিনি এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগীতা কামনা করেন।
মন্তব্য চালু নেই