ডিমলায় সহস্রাধিক বিঘা জমিতে ভুট্টার ফলন হয়নি : চাষীরা দিশেহারা

হামিদা আক্তার, নীলফামারী থেকে : এবারে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানী ইউনিয়নের বাইশ পুকুর মৌজায় তিস্তার চরে প্রায় সহ¯্রাধিক একর জমিতে ভূট্টার ফলন হয়নি। একারনে ঐ এলাকার ভূট্টা চাষীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। ঋনের দায়ে পড়ে অনেকটা বিপাকে পড়েছে এসব হতদরিদ্র কৃষকেরা।

হাজার হাজার বিঘা জমির ভূট্টা এবারে নষ্ট হয়েছে এ খবরের ভিক্তিতে বাইশপুকুর এলাকায় সরজমিনে গিয়ে কথা হয় এসব ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সাথে। ক্ষতিগ্রস্ত ভূট্টাচাষী সেনার আলী, আবুল কালাম, লাল্টা মামুদ,রশিদুল,আবুল কাশেম,হালিমুর,হামিদুল ইসলাম, হায়দার আলী, ইলিয়াস, তছলিম উদ্দিন,বুলবুলসহ আরো অনেক জানান, এবারে আমরা সর্বশান্ত হয়ে গেছি। আমাদের মধ্যে কেউ কেউ ৩ বিঘা থেকে শুরু করে ৩০ বিঘা পর্যন্ত ভূট্টা আবাদ করেছি।

কিন্তু ক্ষেতে ভূট্টার গাছ আছে, মোচা আছে কিন্তু দানা নেই। এর কারন হিসেবে চাষীরা বলছে এবারের ভূট্টার বীজ ছিলো নষ্ট। বীজ ভালো না থাকায় ভূট্টার ফলন হয়নি। তারা বলে বেশীভাগ জমিতে এবারে কাররী-৫০ জাতের রাসেল সীডস কোম্পানীর ভূট্টার বীজ লাগানো হয়েছে। আর সেটাই এবার নষ্ট বীজ ছিলো। গেলোবার কাবরী- ৫০ বীজের ফলন ভালো হওয়ায় এবারে কৃষকরা এই বীজের উপড় ঝুকে পড়েছিলো।

এ কারনে প্রায় অধিকাংশ চাষী এই বীজ ক্ষেতে লাগায়। কিন্তু বিধি বাম। ফলন হয়নি। তবে কিছু কিছু কৃষক ভূট্টা চাষী বলে কাবরী-৫০’র পাশাপাশি কিছু জমিতে শক্তিমান, মিরাকেল, ৯৮১ ওএস এগ্রো লিঃ, জাতের বীজও ভালো ফলন হয়নি। তবে কাবরী-৫০ পুরোটাই নষ্ট থাকায় কোন জমিতে ফলন হয়নি। কৃষকদের তথ্যমতে, তিস্তার চরে বাইশপুকুর মৌজায় প্রায় ২ হাজার বিঘা জমিতে ভূট্টা ফলন হয়নি। ফলে পথে বসেছে শতশত পরিবার।

এসব পরিবারের সদস্যরা সার, বীজ হালচাষ থেকে শরু করে সব কিছুই বাকীতে এমনকি চাষীরা বিভিন্ন এনজিও’র কাছে লাখ লাখ টাকা ঋন নিয়ে ভূট্টা চাষ করেছেন। এবারে এ ঋন শোধ হবে কি করে ? চাষীদের সব কিছু বিক্রি করেও অনেকের ঋন পরিশোধ হবে না।

এ কারনে বিপাকে পড়েছে ভূট্টা চাষীরা। সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে গত ২১ মার্চ মঙ্গলবার বিকালে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন কবীর ও কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তপন চন্দ্র রায় সরজমিনে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের খোঁজখবর নেন। ঘুরে ঘুরে দেখেন নষ্ট ভূট্টা ক্ষেতগুলি।

তাৎক্ষনিক ভাবে সংবাদকর্মীদের উপস্থিতিতে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এসব বীজ বিক্রেতা, ডিলার ও কোম্পানীর প্রতিনিধিদের মাঠে ডেকে এনে এর কারন জানতে চান। এসময় তিনি সংবাদকমীদের কাছে বলেন, যদি কারও গাফিলাতি কিংবা বীজ নষ্টের কারনে এটা হয়ে থাকে তাহলে তদন্ত করে আইনানুক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি কৃষকদের ধৈর্য্যধারনের পরাপর্শ দেন। বিষয়টি যথাযথ ভাবে ক্ষতিয়ে দেখা হবে মর্মে উপস্থিত সকল কৃষকদের আশ্বস্ত করেন।



মন্তব্য চালু নেই