ডায়াবেটিস নির্মূলে যাদুকরী পাতা নিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের ভীড়

হামিদা আক্তার, ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি : বিভিন্ন অনলাইন ও নিউজ প্রিন্ট পত্রিকায় ডায়াবেটিস নির্মূলে যাদকরী পাতা আবিস্কার করেছে এক ডায়াবেটিক রোগী। এ খবর প্রকাশের পর থেকে ডায়াবেটিস নির্মূল যাদুকারী সেই পাতা নিতে দুর দুরান্ত থেকে ভীর করছে শতশত মানুষ। পাতার জন্য ডায়াবেটিক রোগী ও গাছের পাতা আবিস্কারক মোজাম্মেল হক সর্দারের বাড়ীতে দেখা গেছে ডায়াবেটিক রোগীর ঢল। এ প্রসঙ্গে কথা হয় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার মৃত তাইজুদ্দিনের ছেলে ডায়াবেটিস রোগী মোজাম্মেল হক সর্দার (৪৮) এর সাথে, তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন মিডিয়া খবর প্রকাশের পর থেকে আমার মোবাইল ফোনে শত শত কল আসতে শুরু করে। আমি উপায়ন্তর না পেয়ে ফোনটি বন্ধ রাখতে বাধ্য হই। কিন্তু তারপরও সেদিন থেকে আমার খাওয়া ও ঘুমানো হচ্ছে না। সার্বক্ষনিক মানুষ ভীর করছে পাতার জন্য। আগে আমি হয়ত গাছের পাতা এনে দিতে পারতাম কিন্তু এখন বেশী চাহিদা হওয়ায় গাছের পাতাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। মানুষের চাপের কারনে আমাকে দুর দুরান্ত থেকে গাছ খুঁজে বের করে পাতা আনতে হচ্ছে। এখন আমার খরচ বেড়েছে। পাতা সংগ্রহে আমার সাথে থাকছে প্রতিদিন ৫/৭ জন মানুষ। এসব পাতা ভালো ভাবে ধুয়ে ঠিক করে মানুষকে দিতে বাসায় সবসময় কাজ করছে ৩/৪ জন মহিলা। শ্রমিকদের প্রতিদিন দিতে হচ্ছে প্রায় ৩ হাজার টাকা। কিন্তু আমি রোগীর কাছে কোন টাকা নেই না। এভাবে তো আমি দেউলিয়া হতে বসেছি। এখন কি করবো তাও বুঝতে পারছি না।

এদিকে সংবাদ প্রকাশের পর থেকে প্রশাসনের সর্বস্তরের কর্মকর্তাগণ আমার কাছে পাতা নিয়ে গেছেন। এদেরন মধ্যে কেউ কেউ নিজেরাই ডায়াবেটিক রোগী। এ সময় ভোর ৪ টায় রওনা দিয়ে এসে হাজির সিরাজগঞ্জ জেলা ও উপজেলার শিমলা গ্রামের বাসিন্দা গ্রাম ডাক্তার আব্দুল মঞ্জু তালুকদারের পুত্র গ্রাম ডাক্তার চান মিয়া (৫৬)। তিনি হাতে একটি পত্রিকা নিয়ে এসে বলেন, আমি অনেক দুর থেকে এসেছি শুধু ডায়াবেটিস নিমূল করতে পাতা নিতে। এত কষ্ট করে এসেছি শুধু নিজেকে একটু ভারো রাখতে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেকেই আবার চিঠি দিয়ে দিয়ে মোবালইল নম্বর পাঠিয়েছেন। পাতা নিতে চাঁন। এমনই একজন চট্টগ্রামের ফটিকছরি উপজেলা হিসাব রক্ষক অফিসের আমান উল্লাহ। গাছের পাতায় ডায়াবেটিস নির্মূলের খবরে তোলপাড় শুরু হয়েছে জেলার সবত্রই। একের পর এক ডায়াবেটিস রোগী সুস্থ হওয়ার খবরে শত শত মানুষ ছুটে যাচ্ছে মোজাম্মেল হকের বাড়িতে। উপজেলা সদরের আলম ফিলিং স্টেশনের পশ্চিমে মোজাম্মেল হক সর্দারের বাড়ি। ডায়াবেটিস রোগীরা তার কাছে গেলেই তিনি গাছের পাতা এনে দিচ্ছেন। তবে কারো কাছে টাকা নিচ্ছেন না। উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন মোজ্জাম্মেল হক ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত ছিলেন। ডাক্তারের ওষুধ খেলে কিছুটা সুস্থ থাকলেও পরবর্তীতে আবার বেড়ে যায়। অবশেষে তিনি নিজেই বিভিন্ন গাছের লতাপাতার রস খাওয়া শুরু করে। মাত্র ১৫ দিন একটানা সেই গাছের পাতার রস খেয়ে পরীক্ষাগারে গিয়ে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করে বুঝতে পারেন তার ডায়াবেটিস ১৯ পয়েন্ট হতে ৬ পয়েন্টে নেমে এসেছে। পরবর্তীতে তিনি ডাক্তারী ওষুধ খাওয়া একবারেই ছেড়ে দেন। বর্তমানে তার ডায়াবেটিস একেবারেই নির্মূল এবং নিয়ন্ত্রণে।

আওয়ার নিউজের টিম খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, এ গাছকে ডাকা হয় গাইনূরা নামে। বৈজ্ঞানিক নাম গাইনূরা প্রোকাম্বেন্স। এটা চীন এবং সুইজারল্যান্ডে স্থানীয়ভাবে ডান্ডালিউয়েন নামেও বেশ পরিচিত। আমেরিকা, সিঙ্গাপুর, চীন, মালেয়শিয়া, থাইল্যান্ডসহ বিশ্ব জয় করে এ এন্টি ডায়াবেটিস গাছ এখন পাওয়া যাচ্ছে বাংলাদেশে। বিভিন্ন অভিজাত নার্সারিতে মিলবে গাইনূরার চারা। এছাড়া রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পাশেও ভ্যানে করে এ গাছের চারা বিক্রি করতে দেখা গেছে। চীন ও সুইজারল্যান্ডের বিজ্ঞানীদের দাবি- প্রতিদিন খালিপেটে ২টি পাতা সেবনে শতভাগ নিয়ন্ত্রণে থাকবে ডায়াবেটিস ও ব্লাড প্রেসার। চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, সম্পূর্ণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত এন্টি ডায়াবেটিস এ গাছটির পাতা এবং পাতার রস সেবনে ডায়াবেটিস সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। গাছটির ২টি পাতা প্রতিদিন খালি পেটে সেবনে শুধু সুগার এবং কোলেস্টেরলই নিয়ন্ত্রণে আসে না, তরতাজা রাখে কিডনি, লিভার এবং নিয়ন্ত্রণে রাখে ব¬াড প্রেসার। এছাড়া সুগার স্বভাবিক মাত্রার তুলনায় আরো কমিয়ে হাইপোগ¬ামিয়ার বিপদ থেকেও রক্ষা করে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে এ গাছের পাতা। তবে ইনসুলিন ব্যবহারকারী এবং গ্যাস্ট্রিক আক্রান্তদের ক্ষেত্রে সকালে খালি পেটে ২টি পাতা এবং রাতে শোবার আগে ২টি পাতা সেবন করতে হবে। চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের মতে, প্রথম দুই মাস ডায়াবেটিস-এর নিয়মিত ওষুধের পাশাপাশি খালি পেটে ২টি পাতা সেবন করতে হবে। দুই মাস পর থেকে শুধু ২টি করে গাছের পাতা খেলেই চলবে। ভেষজ ওষধি গুণসম্পন্ন এ গাছটি বেঁচে থাকে ২৫ বছর। সর্বোচ্চ ৩ ফুট লম্বা হয়। এরপর ডালাপালা বিস্তার করে জঙ্গলের মতো হয়ে যায়। তবে এ গাছে সকাল-বিকাল নিয়মিত পানি দিতে হয়। স্যাঁতস্যাতে পরিবেশ এ গাছের জন্য বেশ উপযোগি। সর্বনি¤œ১০ ইঞ্চি টবে গোবরের সার ও মাটি মিশিয়ে চারা রোপন করতে হবে। বছরে অন্তত দুই বার মিশ্র সার ব্যবহার করতে হয়। তবে সরাসরি মাটিতে এটা বেশ ভালো হয়।



মন্তব্য চালু নেই