ডিমলায় ডিগ্রী পড়ুয়া ছাত্রীর আত্মহত্যা : এলাকায় শোকের ছায়া
হামিদা আক্তার, ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি : ৭ অক্টোবর সোমবার ভোরে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পল্লীতে এক ডিগ্রী পড়–য়া ছাত্রীর মনের আক্ষেপে আত্মহত্যা করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সে উপজেলার নাউতারা ইউনিয়নের উত্তর আকাশ কুড়ি (১নং ওর্য়াড) গ্রামের মমতাজ উদ্দিনের দ্বিতীয় কন্যা
মারজানা আক্তার (২৫)। ডিমলা ইসলামিয়া ডিগ্রী কলেজের ১ম বর্ষের ছাত্রী। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, মৃত মারজানা আক্তার এর ৪ ভাই ও ৪ বোন। সে বাবার দ্বিতীয় কন্যা। পারিবারের সদস্যরা দাবী করেন, মারজনার মানসিক সমস্যা থাকায় সে শয়ন ঘরে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
তবে এলাকাবাসীরা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে মারজানার ঋতৃ¯্রাব বন্ধ ছিলো। এ ঘটনায় দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন চিকিৎসা করেও কোন ফল হয়নি তার। ফলে নিরুপায় হয়ে কথিত কবিরাজের কাছে গিয়ে ঋতু বন্ধ থাকার কথা খুলে বলে। এ সময় ঐ কথিত কবিরাজ তাকে বলেন,তুমি হিজরায় পরিণত হয়েছে। তোমার এত লেখা পড়ে কি হবে। তোমার জীবনটাই বৃথা। তোমার কোন দিন বিয়ে হবে না।
এসব কথা শুনে মারজানা মনের কথা মনে রেখে বাড়ীতে এসে কাউকে কোন কথা না বলে রাতে খাবার খেয়ে স্বাভাবিক ভাবে তার নিজ ঘরে ঘুমিয়ে পড়ে। পরে সে মনের আক্ষেপে আত্মহত্যা করেছে বলে অনেকেই ধারনা করছেন। তবে মৃত মারজানার বাবা মমতাজ উদ্দিন কন্যাহারা শোকে মুহ্যমান। তার বাড়ীতে গিয়ে সংবাদকর্মীরা মারজানার আত্মহত্যার কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতি রাতেই ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠে আমার বড় আদরের মেয়ে মারজানা ওযুর পানি এনে দিতো। সেও নিয়মিত নামায আদায় করতো।
কিন্তু আজ ভোরে ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার ওযুর পানি নেই। আমার মা মারজানাকে ডাকলেও ও সাড়া দেয় না। পরে ঘরে ঢুকে দেখি আমার মা আর নেই। সে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে আছে। এলাকাবাসীর সাথে কথা হলে তারা জানান, মেয়েটি খুবই পর্দায় থাকতো। কখনও পাড়া প্রতিবেশীদের বাড়ীতে দেখা যেত না। তার মুখ সহজেই কেউ দেখতে পেত না। সে ছোট বেলা থেকে পাচঁ ওয়াক্ত নামায আদায় করতো। পরহেজগার ছিল সে। এ কারনে তার আত্মহত্যায় ও তার অকাল মৃর্ত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এ ঘটনায় এলাকার হাজার হাজার নারী পুরুষের ঢল নেমেছে মৃত মারজানাকে দেখতে। শোকের মাতমে এলাকাবাসীর চোখের জ্বলে পুরো এলাকা ভারী হয়ে উঠেছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত নাউতারা ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম লেলিন বলেন,পরিবার থেকে বলা হচ্ছে মেয়েটির মানসিক সমস্যা ছিলো, এ জন্য সে আত্মহত্যা করেছে। তিনি বলেন, এ আত্মহত্যায় কাহারো কোন অভিযোগ নেই। একই কথা বলেন ঐ ওর্য়াডের ইউপি’র সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্যা বিলকিস আক্তার।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (বিকাল-২.৩০) পর্যন্ত ডিমলা থানা পুলিশের এসআই সাহাবুদ্দিন সঙ্গীয় র্ফোসসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে লাশের প্রাথমিক সুরুতহাল রিপোর্ট করছিলেন। এ ব্যাপারে ডিমলা থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, ঐ ছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনায় কোন অভিযোগ না পাওয়া যায়নি। ফলে লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য চালু নেই