বাংলাদেশ ফ্লাইং একাডেমির পাহাড় সমান দুর্নীতি

রাজশাহী : বাংলাদেশ ফ্লাইং একাডেমির পাহাড় সমান দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও অবহেলার জন্য আমি আজ আমার একমাত্র মেয়েকে হারালাম। তাই বাংলাদেশ ফ্লাইং একাডেমির নানা অব্যস্থাপনার তথ্য ও প্রমাণাদি সংগ্রহ করা হয়েছে। খুব শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবো। এছাড়া ঘটনার দীর্ঘদিন পার হওয়ার পরেও তদন্ত রিপোর্ট না দেয়ার তীব্র সমালোচনা করেন তিনি।

সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট এলাকার একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে এ সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী হযরত শাহমখদুম বিমানবন্দরে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তু হয়ে প্রশিক্ষণার্থী নিহত তামান্না রহমান হৃদির বাবা ডা. আনিসুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে এ সব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আন্তর্জাতিক নিয়মানুযায়ী ফ্লাইং একাডেমি এবং সিভিল অ্যাভিয়েশনসহ যেকোনো বিমানবন্দরের রানওয়েতে ২৪ ঘণ্টা ফায়ার সার্ভিস টিম, রেসকিউ টিম ও অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখার কথা, যাতে কোনো দুর্ঘটনার দুই মিনিটের মধ্য ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়। কিন্তু রাজশাহী বিমানবন্দরে যখন দুর্ঘটনা ঘটে তখন সেখানে কিছুই ছিল না। ঘটনার পর স্থানীয়রা এগিয়ে আসলেও ২১ মিনিট পর ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা এগিয়ে আসেন। ততক্ষণে মেয়ে তামান্না পুড়ে কয়লা হয়ে যায়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলাদেশ ফ্লাইং একাডেমি তিন দশকেরও বেশি পুরানো এয়ারক্রাফট এবং প্রায় ভাঙা প্লেন দিয়ে প্রশিক্ষণার্থীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয় নষ্ট সিটবেল্ট, নষ্ট হুইল, পুরানো ক্ষয়ে যাওয়া ইঞ্জিন দিয়ে। সেইসঙ্গে বাংলাদেশ ফ্লাইং একাডেমির চিফ ইঞ্জিনিয়ার মনিরুজ্জামান কোনো ধরনের সার্টিফিকেট ছাড়াই এখানে প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্বে রয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বিএমএর রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সভাপতি ডা. তবিবুর রহমান শেখ, রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হেদায়েতুল্লাহ, বিএমএ রাজশাহীর সভাপতি ডা. দীপক কুমার মোহান্ত উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, রাজশাহীতে বাংলাদেশ ফ্লাইং একাডেমি অ্যান্ড সিভিল অ্যাভেয়েশনের স্যাসনা-১৫২ প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে তামান্না রহমান (২২) নামে এক পাইলটের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় প্রশিক্ষক লে. কর্নেল (অব) সাঈদ কামাল গুরুতর আহত হয়েছে।

উল্লেখ্য, ১ এপ্রিল বুধবার দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে প্রশিক্ষক লে. কর্নেল (অব) সাঈদ কামাল বাংলাদেশ ফ্লাইং একাডেমি অ্যান্ড সিভিল অ্যাভেয়েশনের স্যাসনা-১৫২ প্রশিক্ষণ বিমান নিয়ে প্রশিক্ষার্থী পাইলট তামান্না রহমানকে নিয়ে উড্ডয়ন করেন। ১টা ৫৮ মিনিটের মাথায় যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে জরুরি অবতরণের সময় রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে। এতে বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। ওই আগুনে প্রশিক্ষনার্থী পাইলট তামান্না রহমান দগ্ধ হয়ে মারা যান।

গুরুতর দগ্ধ হন প্রশিক্ষক সাইদ কামাল। সাইদ কামালকে সিএমএইচে ভর্তি করা হয় পরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। ঘটনার পর তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও সে কমিটির রিপোর্ট আলোর মুখ দেখেনি।



মন্তব্য চালু নেই