রাজশাহীর আই এইচ টি ভবন

ঝুঁকির মধ্যে বসবাস ৬৪ টি পরিবারের

রাজশাহী: রাজশাহী মহানগরীর লক্ষীপুর এলাকায় চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী পরিবার-পরিজনদের নিয়ে পরিত্যক্ত ভবনে দীর্ঘদিন থেকে চরম ঝুঁকিতে বসবাস করছেন। এদের অধিকাংশই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল এবং ইনস্টিটিউট অব হেল্থ টেকনোলজিতে (আই এইচ টি) কর্মরত। যেকোন সময় ঘটতে পারে ভবন ধসের মত ভয়াবহ দুর্ঘটনা। তাই দ্রুত পূনর্বাসন চান নিম্ন আয়ের এসব মানুষগুলো।

জানা গেছে, মহানগরীর প্রানকেন্দ্রে অবস্থিত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আই ডি এবং বক্ষব্যাধি হাসপাতাল ও আই এইচ টি’র চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের পরিবারের বসবাসের জন্য এ সব হাসপাতাল নির্মানের সময় আবাসিক ভবন নির্মান করা হয়। আজ থেকে প্রায় ২৫ বছর আগেই আবাসিক ভবনগুলো বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ে । ফলে কর্তৃপক্ষ পরিত্যাক্ত ঘোষনা করেন। তা সত্ত্বে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নি¤œ আয়ের কর্মচারীরা পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছের।

সূত্র আরো জানায়, স্বাধীনাত্তোর কালে রামেক হাসপাতাল, আইএইচটি ও বক্ষব্যাধি হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের পরিবারের বসবাসের জন্য আই ডি হাসপাতাল ও বক্ষব্যাধি হাসপাতাল সংলগ্ন আইএইচটির আবাসিক ভবন তৈরী করা হয়। এ ভবনগুলো একতলা থেকে তিন তলা বিশিষ্ট। তার মধ্যে চারটিতে হাসপাতাল ও আইএইচটির ৩২ জন কর্মচারী পরিবার নিয়ে বসবার করছেন। বাকি চারটিতে বসবাস করছে ৩২ পুলিশ সদস্যের পরিবার। সব মিলিয়ে ৮ টি ভবনে ৬৪টি পরিবার বসবাস করছে।

সেখানকার অধিবাসী আএইচটির সোহরাব হোসেন নামের এক কর্মচারী জানান, প্রায় দশ বছর যাবৎ এখানে বসবাস করছি। ভবন এত নাজুক অবস্থা জেনেও কর্তৃপক্ষ সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেয়নি। গত বছর ভূমিকম্পে গোটা ভবনটি কেঁপে উঠেছিল, আমরা সবায় ছুটোছুটি করে নিচে নেমে এসেছিলাম। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কোন কাজ হয়নি। তিনি আরও জানান, বর্তমানে ভবনের সমস্তকিছু খুলে গেছে। ছাদের পাটাতন ,ভবনের প্লাস্টার, জানালা, দরজা পানি ও টয়লেটের পাইপ লাইন খুলে মলমূত্র পড়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, সামান্য বৃষ্টিতেই ঘরে পানি ঢুকে পড়ছে। তাছাড়া ভবনের গায়ে আগাছা জন্মে সাপ ও পোকামাকড় ঘরে ঢুকে পড়ে।

DSC06203

ভবনের আরেক বাসিন্দা মো. খন্দকার জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরেই এ ভবনের একটি ফ্লাটে থাকেন। আগে বেতন থেকে ভাড়া বাবদ অর্থ কেটে নেয়া হতো। তবে বর্তমানে বিনা পয়সায় থাকতে পারায় জীবনের ঝুকি নিয়ে সেখানে তিনি পরিবারসহ বসবাস করে আসছেন বলে জানান তিনি।

এদিকে, ভবনগুলোতে পুলিশ সদস্যের বসবাস প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সেখানকার বাসিন্দারা জানান, আগে এ সব পরিত্যাক্ত ভবনে নানা অপকর্ম হত। ছিনতাইকারী ও সন্ত্রাসীদের আখড়া ছিল। ওই সময় পুলিশ কমিশনারের অনুমতিক্রমে সেখানে পুলিশ সদস্যদের বসবাস শুরু হয়। সেই থেকেই তারা সেখানে বসবাস করছেন বলেও জানান তারা।

এ বিষয়ে আইএইচটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডা. এ বি মুনসর জানান, দীর্ঘ কয়েক বছর আগেই এ ভবনগুলো পরিত্যাক্ত ঘোষনা করা হয়। তবে মানবিক কারণে ভবনগুলোর বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়া হয় নি। তবে সেখানে যারা বসবার করছেন তারা নিজ দায়িত্বেই বসবাস করছেন বলে জানান তিনি।



মন্তব্য চালু নেই