তদন্ত কমিটি গঠন
রামেকে ব্যাথায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা
রাজশাহী : রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মাজেদা বেগম (৪০) নামের এক রোগী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। নিহত মহিরা বাগমারা উপজেলার বাগমারা এলাকার করিমের স্ত্রী। গত বুধবার দিবাগত রাত পৌনে দু’টার দিকে হাসপাতালের ১৫ নম্বার ওয়ার্ডের টয়লেটের মধ্যে তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। কারণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গলায় ফাঁস দিয়ে রোগী আত্মহত্যার ঘটনা এর আগে কখনো ঘটে নি।
এ ঘটনায় রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির উদ্দিন মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. আজিজুল হককে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. বেলাল উদ্দিন, ইএমও তৌহিদুল ইসলাম, ১৫ নং ওয়ার্ডের রেজিস্ট্রার ডা. সাগর। আগামী ৩ জুনের মধ্যে কমিটির সদস্যদের রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ মে রাত সাড়ে বারটার দিকে বাগমারা উপজেলার করিমের স্ত্রী মাজেদা পেটে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালের ১৫নং ওয়ার্ডে ভর্তি হন। ভর্তির পর থেকেই তিনি ১৫ ওয়ার্ডের ১৮নং বেডে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। হাসপাতালে ভর্তির পর থেকেই তার সাথে তার মা এবং শাশুড়ি তার দেখভাল করছিলেন।
এদিকে, গত বুধবার দিবাগত রাত পৌনে দু’টার দিকে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে মাজেদা টয়লেটের মধ্যে গিয়ে শাড়ির পাড় ছিড়ে গলায় ফাঁস দেন।
এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর এক রোগী টয়লেটে গিয়ে তাকে ঝুলে থাকতে দেখে চিৎকার দেন। এতে ওয়ার্ডের অন্য রোগীরা টয়লেটের কাছে ভীড় জমায়। পরে হাসপাতালের পুলিশ বক্সের পুলিশ এবং আনসার সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। রাতেই রাজপাড়া থানা পুলিশ ওই মহিলার লাশের সুরতহাল করেন। এ বিষয়ে নগরীর রাজপাড়া থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
মাজেদার ছেলে মাজেদুল ইসলাম (২৫) জানান, গত ৮ দিন ধরে তার মায়ের পেটে প্রচন্ড ব্যাথা হচ্ছিল। তাই তার মাকে বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থা খারাপ হলে তাকে রামেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। কেন আত্মহত্যা করলেন তার মা এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমার বাবা-মায়ের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত ভাল ছিল। এ ছাড়াও তার বাবা করিম দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ্য হয়ে পড়ে আছে। পেটে প্রচন্ড ব্যাথা হওয়ার কারণে সহ্য না করতে পেরেই তার মা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে তার দাবী।
এ বিষয়ে রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির উদ্দিন বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী আত্মহত্যা করার ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ৩ জুনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরেই তার আত্মহত্যার কারণ জানা যেতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
রাজপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মেহেদি হাসান বলেন, খবর পেয়ে থানা পুলিশ হাসপাতালের গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। পরে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে লাশটি ময়নাতদন্তের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
মন্তব্য চালু নেই