পেট্রোল বোমার আগুনে পুড়ছে ঈদ

‘ঈদ তো পেট্রোলের আগুনে পুড়ে কবেই শেষ হয়ে গেছে। এখন কোনোমতে খেয়ে না খেয়ে দিনপার করতে হচ্ছে। ঈদ মানুষের আসে আনন্দ নিয়ে। আমার ঈদ এসেছে এক বুক দুঃখ নিয়ে। মনে হয় কিভাবে দিনগুলো পার করবো। পাড়ার ছোট ছেলেমেয়েরা নতুন পোশাক পরবে। আর আমি বাবা হয়ে আমার ছোট ছেলেমেয়ের জন্য একটা পোশাক পর্যন্ত কিনতে পারছি না।’ দুঃখভারাক্রান্ত মন নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন পেট্রোলবোমায় দগ্ধ সাহেব আলী।

তিনি বলেন, আমার ছোট ২ বছরের ছেলে কাফি নতুন পোশাকের জন্য খালি কাঁদে। ৬ বছরের মেয়ে শ্রাবণী বুঝতে পারে বাবার কেনার ক্ষমতা নাই। কাফির কান্নাকাটি দেখে তার ও শ্রাবণীর জন্য ঈদের নতুন পোশাক কিনে দিয়ে গেছে তার নানা।

অনেক স্বপ্ন ছিলো এবার হয়তো ধার দেনা শোধ করতে পারবো। ভালোভাবে জীবন যাপন করতে পারবো। তাই ৫০ হাজার টাকা কিস্তি তুলে ছিলাম। আলুর ব্যবসা করবো বলে টাকাটা তুলেছিলাম। এর সঙ্গে কিছু টাকা যোগ করে ৯০ হাজার টাকার আলু কিনেছিলাম। আমি তো জানতাম না আমার এতোবড় ক্ষতি করবে হরতাল-অবরোধকারীরা।

তিনি আরো বলেন, তারা আমার আলুর বস্তা পোড়ায় নি, তারা আমার স্বপ্ন পুড়িয়েছে। তাদের জন্য আজ আমার ছোট ছেলেমেয়েরা ঈদের নতুন পোশাক পরতে পারছে না।

আমার কি অপরাধ ছিলো? আর এ ছোট ছেলেমেয়ের কি অপরাধ ছিলো? সেই ঘটনার পর থেকে এখনো ঠিক মত চলাফেরা করতে পারি না। ঠিকমত খেতে পারি না। যেখানে পোড়া ক্ষত বেশি সেখানে খুব জ্বলে। ডাক্তার বলেছে, ঈদের পরে আবার অপারেশন করতে হবে।

উল্লেখ্য, গত ২৩ জানুয়ারি তানোর ব্র্যাক অফিসের সামনে যাত্রীবাহী বাসে হরতাল-অবরোধকারীদের ছোঁড়া পেট্রোলবোমায় সাহেব আলীসহ ১৫জন যাত্রী দগ্ধ হন। এসময় সাহেব আলীর শরীরের ৪৬ শতাংশ পুড়ে যায়।



মন্তব্য চালু নেই