প্রচন্ড খরতাপে সাতক্ষীরা জেলার পাটের বেহাল অবস্থা, মহা বিপদে পড়েছেন হাজারো পাট চাষী।

প্রচন্ড খরতাপের কারনে সাতক্ষীরা জেলায় পাটের অবস্থা বেহাল হয়ে পড়েছে । মহা বিপদে পড়েছেন পাট চাষীরা। পাট চাষে এবারে লাভ হওয়া তো দুরের কথা খরচের টাকা ও ঘরে আসবেনা বলে আশংঙ্খা করছেন জেলার হাজারো পাট চাষীরা।

জেলা কৃর্ষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী এবারের মৌসূমে পাট চাষ হয়েছে ১০ হাজার ৬ শত ২ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে ১৮ হেক্টর বেশী। গত বছর প্রচন্ড খরতাপ এবং বাজার মূল্য বেশী না হওয়ার কারনে পাট চাষ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্র অর্জন করতে পারেনি। ফলে এবারে বাংলাদেশ পাট অধিদপ্তর থেকে জেলার তালা ও কলারোয়া উপজেলার মোট ১০০ জন চাষীর মধ্যে জন প্রতি ২.৩২৫ কেজি ০৯৮৯৭ জাতের পাট বীজ বিনা মূল্যে বিতরণ করা হয়। পাট বপনের পর পরই জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায়ই বৃষ্টি পাত হওয়ার কারনে পাটের বাম্পার ফলন হওয়র সম্ভবনা দেখা দেয়।

কিন্ত সে সম্ভবনা গত কয়েক দিনের প্রচন্ড খরতাপ ম্লান করে দিয়েছে। জেলার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা দেখা গেছে পাটের আগা নুয়ে পড়েছে, শুকিয়ে গেছে,বিভিন্ন ধরনের পোকা আক্রমন করেছে। বিশেষ করে সদর উপজেলার ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নের পাথরঘাটা গ্রামের পাট চাষী আব্দুর কাদের এর পাট ক্ষেতের অবস্থা একেবারেই বেহাল হয়ে পড়েছে। আঃ কাদেরের পাট ক্ষেত পাথরঘাটা মাঠে । ঐ মাঠের একই প্লটে ত ১০/১৫ জন চাষী ৪০ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন।
তিনি জানান, চৈত্র মাসের প্রথম সপ্তাহে পাট বীজ বপণ করে এ পর্যন্ত ৩/৪ বার সেচ দিয়েছন।

পোকার আক্রমন থেকে বাচার জন্য দেশের স্বনাম ধন্য একটি কীটনাশক কোম্পানীর কীটনাশক দিয়েছেন। পাট বর্তমানে ৪ থেকে ৫ হাত লম্বা হয়েছে। পাটের অবস্থা খুবই ভাল ছিল। কিন্ত গত ১ সপ্তাহ আগে থেকে পাটের ক্ষেতে বিছা পোকা ও লাল মাকড় আক্রমণ করেছে। পাট গাছে ফুল এসে গেছে। আগা ফেটে ৪/৫ টা করে ডাল তৈরী হয়েছে এবং আগা মরে গেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ব্লক সুপাভাইজার বা অন্য কোন কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, ক্ষেতের এই অবস্থা দেখে মন খারাপ। সে জন্য কার ও কছে যাইনি।

গত ২৪ মে বিকালে বিষয়টি নিয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামার বাড়ির, সাতক্ষীরার উপ-পরিচালক কাজী আব্দুল মান্নান সাহেবের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান আগামী কাল এলাকাটি পরিদর্শন করে বিস্তারিত জানানো হবে। এরই অংশ হিসেবে ২৫ মে সকালে সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা শিকদার মোঃ মোহাইমেন আক্তার,ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়ন ব্লক সুপারভাইজার শেখ কামাল রেজা , কৃষি উপকরণ ও সার কীট নাশক সরবরাহ কোম্পানী সিনজেনটার এস,পি ও মাহাবুবুর রহমান এবং স্থানীয় সরবরাহ কারী আলহজ্জ্ব আঃ লতিফ পাথরঘাটাস্থ একই প্লটে চাষকৃত ৪০ বিঘা জমির ঐ পাট ক্ষেতটি পরিদর্শনে আসেন।

পাট ক্ষেত পরিদর্শন শেষে কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা শিকদার মোঃ মোহাইমেন আক্তার জানান ,পাটের পাতা, কান্ড ও গাছ বিভিন্ন ভাবে পরীক্ষা নিরিক্ষা করে বোঝা গেল প্রচন্ড খর তাপ হলো পাটের এ অবস্থার জন্য দায়ী। তবে পাটের বীজের কারনে ফুল আসতে পারে। ভারতীয় নিন্ম মানের এন,এস,সি ও দেবগারী জাতের পাট বীজ বপন করা হয়েছে বলে সংািশ্লষ্ট চাষীরা স্বীকার করেন। পাটের এ অবস্থা দেখে চাষীরা হতাশায় ভুগছেন।

তারা জানান, বীজ বপন থেকে এ পর্যন্ত বিঘা প্রতি ৮থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তাদের লাভ তো দুরের কথা আসল পয়সাও তাদের ঘরে আসবে না।
কিন্তু উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা শিকদার মোঃ মোহাইমেন আক্তার শোনান আশার কথা । তিনি উপস্থিত পাট চাষীদেরকে বলেন, কোন চিন্তা নেই। আপনাদের পাটের অবস্থা খুবই ভাল । দু’এক দিনের মধ্যে বৃষ্টি হলেই পাটের অবস্থা ভাল হয়ে যাবে।

তবু ও মন মানছে না অবুঝ ঋন গ্রস্থ কৃষকের । পাটের অবস্থা ভাল না হলে তারা সরকারী সাহায্যের প্রার্থনা করেছেন।



মন্তব্য চালু নেই