দেবহাটা (সাতক্ষীরা) সংবাদ (২৮/৯/১৪)

বিজিবির অভিযানে ৯ জন নারী পুরুষ আটক, থানায় মামলা:
সাতক্ষীরার দেবহাটার ভাতশালা বিজিবির অভিযানে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে অনুপবেশের দায়ে শিশু সহ ৯ জন নারী পুরুষকে আটক করেছে। তাদের বিরুদ্ধে দেবহাটা থানায় বিজিবির পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। জানা গেছে, ৩৪ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন, নীলডুমুর এর ভাতশালা বিওপির জেসিও-৬৩৪৪ নাঃ সুবেদার নুরুল আমিনের নেতৃত্বে টহল দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার রাত ১০ টার দিকে কুলিয়া পাকা রাস্তা নামক স্থান হতে অবৈধভাবে ভারত হতে বাংলাদেশ আসার প্রাক্কালে ১) লুৎফর রহমান (৫৫), পিতা-মৃত আব্দুল জলিল, গ্রাম ও পোষ্ট- পরতাসি, থানা-জিয়ানগর, জেলা- পিরোজপুর ২) মোঃ জসিম হাওলাদার (২২), পিতা-ইনছার হাওলাদার, গ্রাম-রামচন্দ্রপুর, পোষ্ট-পরতাসি, থানা-জিয়ানগর, জেলা-পিরোজপুর ৩) সেলিম মোল্লা (৩১), ৪) ইয়াসমিন আক্তার (১২), পিতা-খালেক মোল্লা ৫) কাইয়ুম মোল্লা (০২), পিতা সেলিম মোলা উভয়ের গ্রাম- কালিকাবাড়ী, পোষ্ট-ফকিরবাড়ী, থানা-মোড়লগঞ্জ, জেলা-বাগেরহাট ৬) আলমগীর হোসেন (৪৯), পিতা-জয়েন উদ্দিন, ৭) সুমাইয়া খাতুন (০৪), পিতা- আলমগীর হোসেন উভয়ের গ্রাম ও পোষ্ট-কালিকাবাড়ী থানা-মোড়লগঞ্জ, জেলা-বাগেরহাট ৮) ইয়াছমিন বেগম (৩৫), স্বামী- মহিদুল ইসলাম ৯) শামিম (১২), পিতা-মহিদুল ইসলাম উভয়ের গ্রাম ও পোষ্ট-পরতাসি, থানা-জিয়ানগর, জেলা-পিরোজপুরকে আটক করেন। আটককৃতদের বিরুদ্ধে দেবহাটা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার মামলা নং- ১৯ তারিখ- ২৭-০৯-১৪ ইং।

দূর্গাপূজাকে সামনে রেখে উৎসবের আমেজ, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার:
আর মাত্র ১ দিন বাকি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজার। পূজা উপলক্ষ্যে দেবহাটা উপজেলাব্যাপী নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। প্রতিমা বানাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন দেবহাটার মৃতশিল্পীরা। তাদের সুনিপুন রঙতুলির ছোয়ায় বেজে উঠছে দেবী দূর্গার আগমনী সুর। দূর্গাপূজা আর ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে দেবহাটায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে নিরবিচ্ছিন্ন নিরাপত্তা ব্যবস্থা। দূর্গাপূজা নির্বিগ্ন ও শান্তিপূর্নভাবে পালনের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে দেবহাটা থানার ওসি আশরাফ হোসেনের আয়োজনে এবং দেবহাটা উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে মন্ডপের সভাপতি ও সম্পাদকদের নিয়ে মতবিনিময় সভা হয়েছে। সেখানে সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা এবং নিরাপত্তার জন্য কি কি করনীয় সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে জানা গেছে, এবছর উপজেলার ৫ টি ইউনিয়নে মোট ২০ টি পূজা মন্ডপে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আগের বছর ছিল ১৯ টি মন্ডপ। এবছর একটি বেড়েছে। সেগুলো হলো কুলিয়া ইউনিয়নের বহেরা দূর্গাপূজা মন্ডপ, কুলিয়া ঘোষপাড়া দূর্গাপূজা মন্ডপ, শ্যামনগর পশ্চিমপাড়া দূর্গাপূজা মন্ডপ, বালিয়াডাঙ্গা দূর্গাপূজা মন্ডপ, হিজলডাঙ্গা দূর্গাপূজা মন্ডপ, শ্যামনগর পূর্বপাড়া দূর্গাপূজা মন্ডপ ও সুবর্নাবাদ দূর্গাপূজা মন্ডপ, পারুলিয়া ইউনিয়নের সন্ন্যাসখোলা সার্বজনীন দূর্গাপূজা মন্ডপ, উত্তর পারুলিয়া চারা বটতলা দূর্গাপূজা মন্ডপ, দক্ষিন পারুলিয়া জেলেপাড়া দূর্গাপূজা মন্ডপ, নোড়ারচক দূর্গাপূজা মন্ডপ, বড়শান্তা দূর্গাপূজা মন্ডপ, উত্তর কোমরপুর দূর্গাপূজা মন্ডপ, সখিপুর ইউনিয়নের পালপাড়া দূর্গাপূজা মন্ডপ, কোড়াঁ পাকড়াতলা দূর্গাপূজা মন্ডপ, নওয়াপাড়া ইউনিয়নের গাজীরহাট দূর্গাপূজা মন্ডপ, দেবহাটা সদর ইউনিয়নের ফুটবল মাঠ দূর্গাপূজা মন্ডপ, দেবহাটা বাজার দূর্গাপূজা মন্ডপ, টাউনশ্রীপুর দূর্গাপূজা মন্ডপ ও টাউনশ্রীপুর পালপাড়া দূর্গাপূজা মন্ডপ। দেবহাটা থানার ওসি আশরাফ হোসেন জানান, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দূর্গাপূজা শান্তিপূর্নভাবে সম্পন্নের লক্ষ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর সমন্বয়ে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনম তরিকুল ইসলাম জানান, সরকারী বরাদ্দকৃত চাউল ইতিমধ্যে প্রতিটি মন্ডপের সভাপতি ও সম্পাদকদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। যাতে কেউ কোন বিশৃঙখলা বা অশান্তি সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য সকল ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।

সীমান্ত নদী ইছামতির ভেড়ীবাধে ভয়াবহ ভাঙ্গন:
দেবহাটার সীমান্ত নদী ইছামতির ভেড়ীবাধে আবারো ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ভেড়ীবাধের দেবহাটা উপজেলা সদরের পাঠবাড়ি ও নাংলা এলাকার ভেড়ীবাধটি মারাত্মক ঝুকিতে রয়েছে। সেটি যেকোন সময় বেঙ্গে যেতে পারে বলে এলাকাবাসী আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। যার কারনে কয়েকটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ বিপদের ঝুঁকিতে রয়েছেন। অনতিবিম্বে ভেড়ীবাধগুলো মেরামত না করলে কয়েকটি গ্রাম তলিয়ে ফসলী জমির ধান, মৎস্য ঘের সহ ব্যাপক প্রানহানির আশঙ্কা দেয়া দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ ভেড়ীবাধগুলো প্রশাসনের ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা সরেজমিনে পরিদর্শন করলেও এখনো পর্যন্ত বাধ মেরামতে কার্যকর কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। গ্রামবাসীরা জানান, অপরিকল্পিতভাবে চিংড়ি চাষ এবং গুটিকয়েক মানুষের ঠেলা জাল নদীতে ফেলার কারণে দেবহাটার সুশীলগাতির সীমান্ত নদীর বাঁধ ও পাঠবাড়ির সামনের বাধটি নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। ইছামতির এই বাঁধই বাংলাদেশ ও ভারতের আন্তর্জাতিক নদী সীমা বিভাজন করেছে। ১৮ ফুট চওড়া বাঁধটি ক্ষয়ে ক্ষয়ে মাত্র এক/দুই ফুটে চলে এসেছে। সাম্প্রতিক অতিবর্ষনে বাঁধটি ভেঙ্গে ভেঙ্গে অর্ধেকের বেশী ভেঙ্গে পড়েছে। এছাড়া নাংলা মাহী ফিস কালচারের পাশের ভেড়ীবাধটিও মারাত্মক ঝুকিতে রয়েছে। গ্রামবাসীরা জানান, চিংড়ি চাষীরা খেয়াল খুশী মতো ছোট বাঁধ দিয়ে মুল বাঁধের সর্বনাশ ডেকে এনেছে। গত তিন বছর আগেও সুশীলগাতী এলাকার ঐ একই বাঁধটি ভেঙ্গে যেয়ে ডুবে যায় ৬/৭ টি গ্রামের মানুষ। বহু ফসলী জমি, মৎস্য ঘের ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং গবাদী পশুর প্রানহানী ঘটে। সে মসময় কয়েকটি গ্রাম পানিতে তলিয়ে ছিল এক মাসেরও বেশি সময় ধরে। তারা জানান, অমাবস্যার কারনে নদীর পানি স্ফীত হয়েছে। এতে জোয়ারের চাপ বেড়ে যাওয়ায় বাঁধটি ধসে যাবার উপক্রম হয়েছে। এ অবস্থা থাকলে যে কোনো সময় বাঁধটি ধসে পানিতে বিলীন হয়ে যাবার আশংকা করছেন তারা। এ বিষয়ে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় সচিত্র সংবাদ প্রকাশিত হলে গত কয়েকদিন আগে নাংলা এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ ভেড়ীবাধ জলবায়ু ট্রাষ্ট ফান্ডের (পরিবেশ শাখা-১) এর যুগ্ম সচিব ড. নুরুল কাদির, জলবায়ু ট্রাষ্টের প্রশাসন ও অর্থ উপ-পরিচালক আবি আব্দুল্লাহ, খুলনা বিভাগীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসই আবুল কালাম আজাদ, সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড (১) এর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হামিদ, দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনম তরিকুল ইসলাম সহ প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। এসময় তারা দ্রুত বাধগুলো মেরামতের আশ্বাস দিলেও একমাস অতিবাহিত হতে চললেও বাধ মেরামতে কোন কাজ শুরু করা হয়নি। জানা গেছে, এখনো পর্যন্ত অর্থ বরাদ্দ না হওয়ায় বাধ সংষ্কার করা যাচ্ছেনা। সূত্র মতে, কয়েক বছর আগে বাংলাদেশের শীবনগরের পাশে রাজনগর নামে একটি মৌজার সম্পুর্ন্ন জমি ইছামতি নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। তাই যদি উল্লেখিত ভেড়ীবাধগুলো অবিলম্বে সংষ্কার করা না হয় তাহলে হয়তো মানুষের অনেক জানমালের ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। এ বিষয়ে বিষয়টি এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ড সহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন।



মন্তব্য চালু নেই