সাতক্ষীরার কিছু খবর
বর্ণাঢ্য আয়োজনে পাল্টাপাল্টি মুক্ত দিবস পালন ॥ দু’সমাবেশে দুই সংসদ সদস্য
৭ ডিসেম্বর। সাতক্ষীরা হানাদার মুক্ত দিবস। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে রোববার পাল্টাপাল্টিভাবে কর্মসূচি গ্রহণ করছে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের বর্তমান ও সাবেক কমান্ডার। দু’সমাবেশে দু’সংসদ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। নির্বাচিতরা সকালে পতাকা উত্তোলনের পর বিশাল একটি শোভাযাত্রা সাতক্ষীরা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ড কার্যালয় থেকে বের করে বড়বাজার সড়ক হয়ে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কার্যালয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডার মোশাররফ হোসেন মশু’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবর রহমান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য মুস্তফা লুৎফুল্লাহ ও প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যাপক আবু আহমেদ। স্মৃতিচারন করে বক্তব্য রাখেন ডেপুটি কমান্ডার আবুবকর সিদ্দিকী,হাসান-উজ-জামান, প্রচার কমান্ডার ড.এম এ বারী, মুক্তিযোদ্ধা কাজী রিয়াজ,জেলা জাসদের সাধারন সম্পাদক ইদ্রিস আলী, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হাসান-উজ-জামান প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালের ২ মার্চ সাতক্ষীরা শহরে পাকিস্তান বিরোধী মিছিলে রাজাকাররা গুলি করে হত্যা করে শহীদ আব্দুর রাজ্জাককে। আর এখান থেকে শুরু হয় সাতক্ষীরার দামাল ছেলেদের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া। ৮ম ও ৯ম সেক্টরের অধীনে ভারতের বিভিন্ন এলাকায় ট্রেনিং শেষে ২৭ মে সাতক্ষীরার ভোমরা সীমান্তে প্রথম সম্মুখ যুদ্ধ শুরু হয় । এ সময় পাক সেনাদের ২ শতাধিক সৈন্য নিহত হয়। ১৭ ঘন্টাব্যাপী এ যুদ্ধে শহীদ হয় ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা। আহত হয় আরো ২ জন মুক্তিযোদ্ধা। এরপর থেমে থেমে চলতে থাকে সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের গুপ্ত হামলা। এসব যুদ্ধের মধ্যে ভোমরার যুদ্ধ, টাউন শ্রীপুর যুদ্ধ, বৈকারী যুদ্ধ, খানজিয়া যুদ্ধ উল্লেখযোগ্য । এ সব যুদ্ধে শহীদ হয় ৩৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা। লাইটের আলোয় অসুবিধা হওয়ায় ৩০ নভেম্বর টাইম বোমা দিয়ে শহরের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত পাওয়ার হাউস উড়িয়ে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা ভীত সন্ত্রন্ত করে ফেলে পাক সেনাদের। রাতের আঁধারে বেড়ে যায় গুপ্ত হামলা। পিছু হটতে শুরু করে পাক সেনারা। ৬ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধাদের হামলায় টিকতে না পেরে বাঁকাল, কদমতলা ও বেনেরপোতা ব্রীজ উড়িয়ে দিয়ে পাক বাহিনী সাতক্ষীরা থেকে পালিয়ে যায়। ৭ ডিসেম্বর জয়ের উন্মাদনায় জ্বলে ওঠে সাতক্ষীরার দামাল ছেলেরা।
বক্তারা, সাতক্ষীরায় স্মৃতিস্তম্ভ নির্মান, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মান, ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা সনাক্তকরন ও মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা পাঁচ হাজার থেকে বাড়িয়ে দশ হাজার টাকা করার সরকারী ঘোষনা বাস্তবায়নের দাবী জানান।
অপরদিক, জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডের সাবেক কমান্ডার এনামুল হকের নেতৃত্বে একটি শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা শিল্পকলা একডেমী মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা-২(সদর) আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি।
সাতক্ষীরা বাস-মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস সমিতির ত্রি-বাষিক নির্বাচনে আবু আহমেদ-গোলাম মোরশেদ পরিষদ জয়ী:
সাতক্ষীরা জেলা বাস-মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস মালিক সমিতির ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনে অধ্যক্ষ আবু আহমেদ ও গোলাম মোরশেদ পরিষদ জয়ী হয়েছে। ভোট গননা শেষে শনিবার রাতে ফলাফল ঘোষনা করা হয়।
নির্বাচনে ১৩৩ ভোট পেয়ে অধ্যক্ষ আবু আহমেদ সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দি সাইফুল করিম সাবু পেয়েছেন ১১১ ভোট।
মো: গোলাম মোরশেদ ১৬৪ ভোট পেয়ে সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দি আব্দুল হান্নান পেয়েছেন ৭৯ ভোট। ১৪৮ ভোট পেয়ে উর্দ্ধতন সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন শেখ আব্দু সোবহান খোকন। ১২০ ভোট সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মো: আশরাফুল ইসলাম, ১৪৮ ভোট পেয়ে সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মো: জামালউদ্দিন, ১০৮ ভোট পেয়ে সহ-সভাপতি মো: জাহাঙ্গির হোসেন।
১২৫ ভোট পেয়ে যুগ্ম-সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন শেখ জাহাঙ্গির হোসেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দি শেখ হেলালুজ্জামান পেয়েছেন ১০৮ ভোট। ১১৭ ভোট পেয়ে সহ-যুগ্মসম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন শেখ জামাল উদ্দীন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দি মো: নাজমুল হাসান পেয়েছেন ১০১ ভোট। ১৩১ ভোট পেয়ে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন প্রাণ নাথ দাশ। তার নিকটতম শাহজান কবির পেয়েছেন ৯৮ ভোট। ১৩১ ভোট পেয়ে সহ সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন মো: আসাদুল ইসলাম। তার নিকটতম শহিদুল ইসলাম কালু পেয়েছেন ১০৩ ভোট। ৬৪ ভোট পেয়ে দপ্তর সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন শেখ নুর আহমেদ লাল্টু, ১৭০ ভোট পেয়ে কোষাধাক্ষ নির্বাচিত হয়েছেন মো: আবু নাসের। তার নিকটতম মীর মঞ্জুরুল ইসলাম পেয়েছে ৫৮ ভোট। ১৬১ ভোট পেয়ে কালিগঞ্জ আঞ্চলিক কর্মকর্তা আজিজ আহমেদ নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম নজরুল ইসলাম পেয়েছেন ৭২ ভোট।
শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভাবে সাতক্ষীরা আইনজীবী ভবনের এ ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়। ২৫১ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালন করেন এ্যাড. খোদাবখস, মোস্তফা আব্দুল্লা আল মামুন, এ্যাড. আমিনুর রহমান চঞ্চল।
জাতীয় বিদ্যুৎ সপ্তাহের উদ্বোধন:
‘জ্বলছে আলো চলছে দেশ, এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে সাতক্ষীরায় পালিত হচ্ছে জাতীয় বিদ্যুৎ সপ্তাহ-২০১৪। এ উপলক্ষে র্যালি করেছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড,সাতক্ষীরা। রোববার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বের হওয়া র্যালীর উদ্বোধন করেন সদর ২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। র্যালিটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, সাতাক্ষীরা কার্যালয়ে এসে শেষে হয়। র্যালীতে অংশ নেয় জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মহসিন আলী, আবাসিক প্রকৌশলী কওছার আলী, সহকারী প্রকৌশলী জুয়েল রানা প্রমুখ। এসময় সকল কর্মকর্তা কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
উপকূলীয় জনগোষ্ঠির দুর্যোগ ঝুকি নিরুপন ও হ্রাস বিষয়ক কর্মশালা:
সাতক্ষীরায় উপকূলীয় জনগোষ্ঠির দুর্যোগ ঝুকি নিরুপন ও ঝুকিহ্রাস বিষয়ক দিনব্যাপী এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার দুপুরে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন এই কর্মশালার আয়োজন করে।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা উত্তরণ ও উইমেন জব ক্রিয়েশন সেন্টারের সহযোগীতায় সেভ দ্য চিলড্রেন ও ইউরোপিয়ন ইউনিয়নের আর্থিক সহযোগীতায় কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক নামজুল আহসান।
এসময় কর্মশালায় বক্তব্য দেন, অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মহাসীন আলী, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু, কলারোয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ স্বপ্ন, সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদ, এম কামরুজ্জামান, আব্দুস সামাদসহ সরকারি বে সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি বৃন্দ। কর্মশালায় দুর্যোগ পূর্বকালীন ও দুর্যোগ পরবর্তীকালীন করনীয় বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
মন্তব্য চালু নেই