কলারোয়ায় দুর্গাপূজা মন্ডপ ৩৫ টি
প্রতিমা রাঙাতে শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততায় প্রতিমা শিল্পীরা
আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে কলারোয়া উপজেলাব্যাপী চলছে প্রতিমা তৈরির শেষ সময়ের কাজ। সকল মন্ডপেই ইতোমধ্যে প্রতিমা তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন শুধু প্রতিমাকে রাঙিয়ে দেয়ার পালা। প্রতিমা শিল্পীরা ব্যস্ত পার করছেন প্রতিমা পরিচর্যার শেষ মুহূর্তের কাজে। রঙ-তুলির অনুপম পরশে দেবি দুর্গাকে মোহনীয় সাজে সজ্জিত করা হবে দু’এক দিনের মধ্যেই। কেননা, হাতে সময় নেই একেবারে। আবহাওয়া সুপ্রসন্ন থাকায় প্রতিমা সম্পন্নের কাজে বিঘœ ঘটছে কোথাও এতটুকু। কাজ চলছে বিরামহীনভাবে। হাতে ফুরসত নেই প্রতিমা শিল্পীদের। উপজেলার বিভিন্ন মন্ডপ ঘুরে প্রায় অভিন্ন চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। সবখানেই প্রতিমা তৈরি হয়ে গেছে। কেবল রঙ-তুলির কাজ বাকি। বৃহস্পতিবার থেকে শনি-রোববারের মধ্যে অধিকাংশ মন্ডপে রঙের কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টার দিকে পৌরসভাধীন তুলসিডাঙ্গা গোয়ালঘাটা পূজা মন্ডপে যেয়ে দেখা যায়, সেখানে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ। প্রতিমায় পরম মমতায় দু’হাতে পলিশ করছেন দুই প্রতিমা শিল্পী তপন ও সুনীল সরকার। এরা এসেছেন সাতক্ষীরার আশাশুনি থেকে। এরা জানালেন, আজই তারা প্রতিমায় রঙের কাজ শুরু করবেন। পুরো প্রতিমায় রঙের কম্বিনেশন ও ম্যাচিং করতে প্রায় ৩ দিন সময় লেগে যাবে বলে তারা জানান। নজরকাড়া প্রতিমা গড়তে গেলে নিবিড় পরিশ্রম করতে হয়। আপন মনের মাধুরি মিশিয়ে সৃষ্টি করতে হয় প্রতিমা। রঙের মিশেলে শতভাগ দক্ষতা ও কারুকাজ দেখাতে হয়। পারিশ্রমিকের কথা তুললে তারা বিনয়ের সাথে বলেন, সার্থক একটি প্রতিমা গড়ে তুলতে পারলে মনের যে ভালোলাগা তৈরি হয়, তার কাছে পারিশ্রমিক অতি নগণ্য। আলাপচারিতায় জানা গেলো রং করার পারিশ্রমিক মেলে ২০ হাজার টাকার মতো। সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বড় উৎসব এই দুর্গাপূজাকে ঘিরে এখন ঘরে ঘরে উৎসবের আমেজ। হিন্দু ধর্মাবলম্বী প্রতিটি ঘরের সব বয়সী মানুষ সময় পেলেই চলে আসেন মন্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ নিজ চোখে দেখতে। তাদের বিশ্বাস, পৃথিবীর সকল দুর্গতির অবসান ঘটিয়ে শান্তির বাতাবরণ দিতে দেবি দুর্গার মর্ত্যে আবির্ভাব ঘটে। তাই তো তিনি দুর্গতিনাশিনী। তাই দেবির মর্ত্যে অবস্থানের দিনগুলো তাদের বিশ্বাসমতে অতি তাৎপর্যপূর্ণ। সেকারণে একই সাথে আনন্দ ও শ্রদ্ধা প্রদর্শনের এই দুর্লভ সুযোগ ভক্তবৃন্দ ছাড়তে চান না। আনন্দ চিত্তে দেবিকে বরণ আর বেদনা বিধূর বিদায়-ভক্তগণকে মোহিত করে রাখে সারাটি বছর। প্রতীক্ষা থাকে পরবর্তী বছরে আবার দেবিকে বরণ করার বাসনা। এবারের দুর্গাপূজার সার্বিক প্রস্তুতি, পরিবেশ ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে কথা হয় উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাবু মনোরঞ্জন সাহা ও সাধারণ সম্পাদক বাবু সিদ্ধেশ্বর চক্রবর্তীর সাথে। এঁরা দু’জনেই সার্বিক প্রস্তুতি ও পরিবেশে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, সম্প্রীতি ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এবার উপজেলার ৩৫ টি মন্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হতে যাচ্ছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি দাবি করে তাঁরা বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, অনুকূল আবহাওয়া ও সর্বোপরি সকল এলাকার আপামর মানুষের প্রাণঢালা সহায়তায় আনন্দঘন পরিবেশে এবার দুর্গোৎসব হচ্ছে। এজন্য তাঁরা উপজেলার সকল ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
মন্তব্য চালু নেই