কালিগঞ্জের জাফরপুর টু-তেঁতুলিয়া সড়ক নির্মানের নামে লুটপাট
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলা সদরের জাফরপুর টু-তেঁতুলিয়া সড়ক নির্মান কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ায় তড়িঘড়ি করে দায়সারাভাবে কাজ করতে গিয়ে জনরোশে পড়ে কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হন। তবে লোকজন চলে গেলে সন্ধ্যায় গোপনে কাজ শেষ করে চলে যান ঠিকাদার।
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অফিস সুত্রে জানা গেছে, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৮৫ লাখ ৯৩ হাজার ৩৯৯ টাকা ব্যয়ে কালিগঞ্জ উপজেলার জাফরপুর-তেঁতুলিয়া সড়কের দ্ইু কিলোমিটার রাস্তা নির্মানের জন্য টেন্ডার আহবান করা হয়। এক বছর মেয়াদী ওই প্রকল্পের টেন্ডারটি পান কালিগঞ্জ উপজেলার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স তাজিম এন্টারপ্রাইজ। এরপর ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রকল্পের কার্যাদেশ পেয়ে ধীরগতিতে কাজ করতে থাকেন। এমনকি কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সময় বাড়িয়েও গতানুগতিক ভাবে কাজ করতে থাকে। এরপর এলাকাবাসির দাবীর প্রেক্ষিতে তড়িঘড়ি করে কাজ শেষ করার উদ্যোগ নেন ঠিকাদার।
ওই এলাকার ইউপি সদস্য আবুল হোসেন জানান, গত ৩/৪ দিন যাবত সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের লোকজন দায়সারাভাবে রাস্তার কাজ করছে। ধুলোবালির ওপর বিটুমিন মাখানো যে পাথরকুচি বা খোয়া ফেলছে তা ঠিকমত জমাট বাঁধছে না। কার্পেটিংয়ের ওপর রোলার টেনে যাওয়ার পর তা বিভিন্ন স্থানে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এলাকার লোকজনের অভিযোগ কার্পেটিংয়ে যে পরিমান বিটুমিন দেয়ার কথা তার ৩০ শতাংশও দেয়া হয়নি। এমনকি বিটুমিনের সাথে সিলেটি বালু দেয়ার নিয়ম থাকলেও দেয়া হয়েছে স্থানীয় বালু।
এসব ব্যাপারে এলাকাবাসির পক্ষে প্রতিবাদ করলেও তা আমলে নেয়নি ঠিকাদার বা প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ।চোখের সামনে এধরনের অনিয়ম দেখতে না পেরে শনিবার দুপুরের দিকে এলাকাবাসি প্রতিবাদ করলে কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হন ঠিকাদার।
এসময় কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এমদাদ হোসেন ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করে কাজ বন্ধ রাখার কথা বলে চলে যান। তবে লোকজন চলে গেলে সন্ধ্যার পর গোপনে কাজ শেষ করে চলে যান।
এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ কাজে কিছু অনিয়ম হচ্ছে শিকার করে বলেন, যে টুকু কাজ বাকি ছিল তা ঠকাদারকে দিয়ে সঠিকভাবে করিয়ে নেয়া হয়েছে।
কি পরিমান বিল পরিশোধ করা হয়েছে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রায় ৪৫ শতাংশ বিল ছাড় করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ফজলুর রহমান বলেন, কাজের মুল মালিক সাতক্ষীরার খালিদ হাসান। তিনি কাজটি না করায় এলজিইডি অফিসের কথামত আমি কাজটি নেই। আমি কখনও সেখানে যায়নি। ইয়াছিন আলী নামের এক সাব ঠিকাদারের কাছে ৮০ লাখ টাকায় চুক্তিতে কাজটি দিয়েছি। এত টাকা ইনভেস্ট করে কিছুতো লাভ করতে হবে। আপনাদের কিছু বলার থাকলে আমি সেগুলি দেখবো বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এব্যাপারে সাতক্ষীরা এল.জি.ই.ডি এর নির্বাহী প্রকৌশলী এ এস এম শাহেদুর রহিম বলেন, তিনি কাজে অনিয়মের কথা জানতে পরে তাৎক্ষনিকভাবে কাজ বন্ধের নির্দেশ দেন।
কাজের দূর্নীতি ও অনিয়ম খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি গঠন করে তদন্ত করা হবে। তিনি আরো বলেন, কাজ সঠিকভাবে না হলে ঠিাকাদারের বিল বন্ধ করে দেয়া হবে।
মন্তব্য চালু নেই