কলারোয়ায় শিশু হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার আরও এক
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ৪ বছরের নিষ্পাপ শিশু নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে আরও এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। থানা পুলিশ জানায়, নিহত শিশুর সৎ পিতার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে কলারোয়া পৌর সদরের ঝিকরা গ্রামের মজিবুর রহমানের পুত্র মারুফ হোসেন (২৫) কে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। শিশু হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা ঘাতক পিতা স্বীকার করে ২/৩ জনের নাম প্রকাশ করেছে।
প্রসঙ্গতঃ কলারোয়া পৌর সদরের ঝিকরা মাঠপাড়া এলাকার মৃত ফেলু খাঁর মেয়ে ফাতেমা খাতুনের সাথে বছর কয়েক আগে একই গ্রামের সাইফুল নামের এক যুবকের বিয়ে হয়। তাদের ঘরে জন্ম নেয় ফুটফুটে পুত্র সস্তান শাওন (৪)। এরই মাঝে ফাতেমার সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ করে অন্যত্র চলে যায় সাইফুল। ৪ বছর বয়সের শিশুপুত্র শাওনকে নিয়ে দারিদ্রের মধ্যে কোন রকম চলে যাচ্ছিল ফাতেমার। এরই মাঝে মাসখানিক আগে পুত্র শাওনকে সাথে রেখেই ফাতেমার দ্বিতীয় বিয়ে হয় উপজেলার বামনখালী গ্রামের রফিকুল গাজির পুত্র সবুজ গাজির (২৭) সাথে। কলারোয়া পৌর সদরের ঝিকরার একটি বাড়িতেই বসবাস করছিল তারা।
সম্প্রতি ভারতের বোম্বে যাওয়ার জন্য ফাতেমা খাতুনকে চাপ দিতে থাকে স্বামী সবুজ। কিন্তু শিশু সন্তানকে রেখে বোম্বে যাবে না বলে জানিয়ে দিলে প্রায়ই ফাতেমা ও সবুজের মধ্যে ঝগড়া হচ্ছিল। এরই মাঝে গত বুধবার দুপুরের দিকে সৎপুত্র শাওনকে নিয়ে ঝিকরার বাড়ির পাশের জনৈক কাজী মজনুর আমবাগানের পুকুরে গোসল করতে যায় সবুজ। গোসল করে স্বামী সবুজ ফিরলেও পুত্র শাওন না আসায় ফাতেমা জিজ্ঞাসা করলে শাওন পরে আসবে বলে সবুজ জানায়। সন্ধ্যা পর্যন্ত পুত্র শাওনের কোন খোঁজ না পাওয়ায় মা ফাতেমা স্থানীয়দের জানান। রাতেই স্থানীয়রা সৎপিতা সবুজকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মারধোর করলে সে নিজেই পুকুরে নেমে পানিতে ডুবিয়ে কাদার মধ্যে মাথা পুতে রাখা শাওনকে উঠিয়ে নিয়ে আসে।
সংবাদ পেয়ে বুধবার রাতেই কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সৎপিতা সবুজ গাজীকে গ্রেফতার করেন। বৃহষ্পতিবার খুনের শিকার শাওনের মা ফাতেমা খাতুন বাদী হয়ে কলারোয়া থানায় ৩০২ ধারায় একটি হত্যা মামলা (নং-০৬/১৫) করে। বর্তমানে মামলাটি কলারোয়া থানার এসআই কেএম মোয়াজ্জেম হোসেন তদন্ত করছেন।
মন্তব্য চালু নেই