‘মামলা ধামাচাপা দেবার চেষ্টা চলছে’

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যার ৫০তম দিন আজ। ৪৯ দিন পার হলেও সিআইডির তদন্ত শেষ হয়নি।এদিকে হত্যাকারীদের শনাক্ত করার বিষয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) দিকে তাকিয়ে আছে পরিবার ও দেশবাসি।বহুল আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডে প্রথম ময়নাতদন্ত শেষে চিকিৎসকরা বলেছিলো তদন্তে কোন ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি। পরেদ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য গত ৩০ মার্চ তনুর লাশ কবর থেকে তোলা হয়।

এদিকে ৩৯ দিনেও পাওয়া যায়নি তনুর দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন। মামলাটি আড়ালে রাখতেই ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন প্রকাশেদেরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিশিষ্টজনেরা।

শনিবার দিনভর সিআইডি কুমিল্লা কার্যালয়ে ঘোরাঘুরি করেছেন তনুর বাবা ইয়ার হোসেন ও মা আনোয়ারা বেগম। তারা মেয়ের হত্যা মামলার অগ্রগতি জানতে এসেছিলেন। তবে তারা ইতিবাচক কোনও খবর নিয়ে বাসায় ফিরতে পারেননি।

তনুর বাবা ইয়ার হোসেন বলেছেন, মেয়েকে হারিয়েছি। মেয়ে হত্যার বিচার দেখে যেতে পারলে মনে মনে শান্তি পেতাম। সিআইডি অফিসে গিয়েছি মামলার খবর নিতে। সেখানে জানানো হয়েছে, তারা কাজ করছেন। আরও সময় লাগবে। আমি আল্লাহর কাছে বিচার দিয়ে রেখেছি, আল্লাহ বিচার করবেন।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কুমিল্লার জয়েন্ট সেক্রেটারি মাইমুনা আক্তার রুবী বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দিতে দেরি করা হচ্ছে, যাতে তনু হত্যা অন্য কোনও ঘটনার নিচে চাপা পড়ে যায়। তনু হত্যার বিচারে মানুষ আন্দোলন করেছে। তনু হত্যার বিচার না হলে বাংলাদেশের মানুষের নৈতিক পরাজয় হবে।

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. কামদা প্রসাদ সাহা বলেন, ডিএনএ রিপোর্ট পেলে একসঙ্গে দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দেওয়া হবে। তবে কবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দেওয়া হবে তা তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।

সিআইডি’র কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করিম খান বলেন, ময়নাতদন্তের বিষয়ে তদন্ত সহায়ক দলের প্রধান ভাল বলতে পারবেন। মামলার অগ্রগতির বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা থেমে নেই। আমরা কাজ করে যাচ্ছি, আশা করছি ইতিবাচক ফলাফল জানাতে পারবো।

উল্লেখ্য, ২০ মার্চ রাত সাড়ে ১০টার দিকে কুমিল্লা সেনানিবাসে বাসার কাছেই তনুর মরদেহ উদ্ধার করেন তার বাবা ইয়ার হোসেন। পরদিন ২১ মার্চ দুপুরে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মরদেহের প্রথম ময়নাতদন্ত হয়। ২১ মার্চ তনুর বাবা কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে মামলা দায়ের করেন।

মামলা পুলিশ, ডিবি হয়ে সিআইডির হাতে যায়। ছায়া তদন্ত করে র‌্যাব ও পিবিআই। কিন্তু এখনও কোনও ইতিবাচক খবর মেলেনি। প্রথম ময়নাতদন্তে তনুকে ধর্ষণের আলামত এবং মৃত্যুর সুনির্দিষ্ট কারণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য গত ৩০ মার্চ তনুর লাশ কবর থেকে তোলা হয়।



মন্তব্য চালু নেই