কুমিল্লা সিটি নির্বাচন: বিএনপির প্রার্থী সাক্কু বিজয়ী

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপির প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু। তিনি ১১ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমাকে।

নগরীর টাউন হলে স্থাপিত ফলাফল ঘোষণা কেন্দ্রে রাত নয়টার দিকে এই বেসরকারি ফল ঘোষণা করেন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মন্ডল।

১০৩টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১০১টির ফলাফলে দেখা যায় ধানের শীষ পেয়েছে ৬৮ হাজার ৯৪৮ ভোট। অন্যদিকে নৌকায় ভোট পড়েছে ৫৭ হাজার ৮৬৩টি। দুই প্রার্থীর মধ্যে ভোটের ব্যবধান ১১ হাজার ৮৫টি। যে দুটি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করা হয়েছে, সেগুলোর ভোটের সংখ্যা পাঁচ হাজারের কিছু বেশি।

২০১২ সালের নির্বাচনে মনিরুল হক সাক্কু কুমিল্লার প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আফজল খানতে প্রায় ৩৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছিলেন। এবার তিনি আফজল খানের মেয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমাকে পরাজিত করলেন প্রায় সাড়ে ১০ হাজার ভোটের ব্যবধানে।

কুমিল্লায় মোট ভোটকেন্দ্র ১০৩টি। গোলযোগের কারণে দুটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। সেই দুটি কেন্দ্রে মোট ভোট পাঁচ হাজারের একটু বেশি।

এর আগে বিকাল চারটায় ভোটগ্রহণ শেষেই শুরু হয় গণনা। শহরের আশেপাশের কেন্দ্রগুলো থেকে প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফল নিয়ে আসেন সেখানে। রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মণ্ডল সেখান থেকে বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেন।

ভোট চলাকালে বড়ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও বিক্ষিপ্ত অনিয়ম, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও অভিযোগের বিভিন্ন ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় দুটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন।

তবে ভোটগ্রহণ ছিল স্বতস্ফূর্ত। সাড়ে ছয় ঘণ্টায় ৬০ ভাগের বেশি ভোট পড়েছে। পুরো সময়ে ৮০ ভাগের কাছাকাছি ভোট পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে কোনো নির্বাচনে এত অধিক হারে ভোট পড়েনি।

ভোটের আগের দিন কুমিল্লায় একটি জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ওই আস্তানাটি এখনো ঘিরে রেখেছে তারা। তবে এর কোনো প্রভাব আশপাশের এলাকার ভোটকেন্দ্রগুলোতে পড়েনি।

প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে। সকাল আটটা থেকে ১০৩ কেন্দ্রে ভোট শুরু হয়। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর একটি কেন্দ্রে এবং জাল ভোট দেয়ার চেষ্টার অভিযোগে আরও একটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করেছেন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা। এর বাইরে আরও তিন থেকে পাঁচটি কেন্দ্রে সাময়িক উত্তেজনার খবর জেনেছেন আমাদের প্রতিবেদকেরা।

এদিকে সকালেই বিএনপির প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু তিনটি কেন্দ্রে তার এজেন্টদের বের করে দেয়ার অভিযোগ করেন। এছাড়া কেন্দ্রীয়ভাবে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও তিন দফা সংবাদ সম্মেলনে ব্যাপক কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে ধরেন।

তবে রিটার্নিং কর্মকর্তা বলছেন, যেখানেই কোনো ঘটনা ঘটেছে সেখানেই তারা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছে।

ভোটগ্রহণ শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা জানিয়েছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ করতে তারা সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন। এজন্য নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। তারা দায়িত্ব পালনে সফল বলেও দাবি করেছেন সিইসি।



মন্তব্য চালু নেই