চৌদ্দগ্রামে বোমা হামলা তদন্তে কমিটি

কুমিল্লায় বাসে পেট্রোল বোমা হামলায় সাতজন নিহতের ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করেছে জেলা প্রশাসন।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. গোলামুর রহমানকে আহ্বায়ক করে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘নিহতদের পরিবার ও আহতদের সরকারিভাবে সহায়তা দেওয়া হবে।’

বোমা হামলার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উত্তম চক্রবর্তী।

এদিকে শনাক্তের পর সাতজনের মধ্যে ছয়জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহতরা হলেন- যশোর জেলা সদরের ঘোপ সেন্ট্রাল রোডের বাসিন্দা হাজী রুকনুজ্জামানের ছেলে গণপূর্ত বিভাগের ঠিকাদার নুরুজ্জামান পপলু (৫১), তার একমাত্র মেয়ে যশোর পুলিশ লাইন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী নাইমা তাসনিন মাইশা (১৫), কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার গাইনাকাটা গ্রামের মৃত ছিদ্দিক আহম্মদের ছেলে আবু তাহের (৩৮) ও একই গ্রামের সালেহ আহম্মদের ছেলে আবু ইউসুফ (৫৫), নরসিংদীর পলাশ উপজেলার বালুরচর পাড়ার জসিম উদ্দিন মানিকের স্ত্রী আসমা আক্তার (৩৮) ও তার ছেলে মাহমুদুল হাসান শান্ত (১৩) এবং শরীয়তপুরের ঘোষেরহাট থানার দক্ষিণ গজারিয়া গ্রামের প্রয়াত নজরখার ছেলে ওয়াসিম।

এদের মধ্যে ওয়াসিম ছাড়া বাকি ছয়জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

বিএনপি জোটের হরতাল-অবরোধের মধ্যে এই নাশকতায় জড়িতদের গ্রেফতার দাবিতে মঙ্গলবার বিকালে ঘটনাস্থল মিয়াবাজারে প্রতিবাদ সভা করেছে আওয়ামী লীগ। স্থানীয় সংসদ সদস্য রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আওয়ামী লীগের ওই সমাবেশে যোগ দেন।

সমাবেশে মুজিবুল হক বলেন, ‘বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার নির্দেশে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীরা এ নৃশংস ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে খালেদা জিয়া বোমা মেরে মানুষ হত্যা করে ক্ষমতায় যেতে পারবেন না।’

রেলপথমন্ত্রী ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে স্থানীয় একটি হোটেলে পুলিশ ও প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। বৈঠকে তিনি যেকোনো মূল্যে দুর্বৃত্তদের গ্রেফতার করার নির্দেশ দেন।

এদিকে কুমিল্লার পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তী বলেন, ‘দুর্বৃত্তদের গ্রেফতার করতে পুলিশের পাশাপাশি র্যা ব-বিজিবি সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।’ নাশকতাকারীদের বিষয়ে তথ্য দিতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তথ্যদাতাদের পরিচয় গোপণ রাখা হবে।’

মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে চৌদ্দগ্রামে মিয়াবাজারের জগমোহনপুরে মহাসড়কে কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী আইকন পরিবহণের ওই বাসে পেট্রোল বোমা ছোড়া হলে আগুনে পুড়ে মারা যান সাত যাত্রী। এতে অগ্নিদগ্ধ হন ২৫ জন। এদের মধ্যে ১০ জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়।

প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগে চৌদ্দগ্রামে একটি কাভার্ড ভ্যান পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় পুলিশ যে মামলা করেছিল, তাতে খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করা হয়।

৫ জানুয়ারি অবরোধ শুরু হওয়ার পর একক কোনো ঘটনায় চৌদ্দগ্রামেই সর্বাধিক মৃত্যু হয়েছে। এর আগে গত ১৪ জানুয়ারি রংপুরে বাসে পেট্রোল বোমায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান পাঁচজন।

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলের ডাকা লাগাতার অবরোধে নাশকতায় গত প্রায় এক মাসে নিহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। এদের বেশিরভাগই পুড়ে মারা গেছেন।



মন্তব্য চালু নেই