অনিয়ম ও দুর্নীতির আখড়া ॥ শিক্ষকরা জিম্মি

বালিয়াকান্দি প্রাথমিক শিক্ষা অফিস অর্থ ছাড়া ফাইল নড়ে না

অনিয়ম ও দুর্নীতির আখড়ায় পরিনত হয়েছে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। অর্থ ছাড়া কোন ফাইল নড়ে না। জিম্মি হয়ে পড়েছে শিক্ষকরা। মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।

এক অনুসন্ধান বিভিন্ন ভুক্তভোগী শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, দীর্ঘদিন যাবৎ প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার পদ শুণ্য থাকায় দায়িত্ব পালন করেন সহকারী শিক্ষক শুশান্ত কুমার বাড়ৈ। প্রায় ২মাস যাবৎ উপজেলা শিক্ষা অফিসার হিসাবে যোগদান করেছেন আঃ কাদের মিয়া। তিনি যোগদানের পরই উপজেলার সরকারী ৬০টি, সদ্য জাতীয়করণকৃত ৩৭টি ও অনরেজিঃ ৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষার্থীকে সিলেবাস সরবরাহ করে । প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর জন্য ৫টাকা ও তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৭টাকা করে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা আদায় করেছে। সদ্য জাতীয়করণকৃত শিক্ষকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করতে শিক্ষক প্রতি আদায় করা হচ্ছে ১হাজার টাকা করে। শিক্ষক বদলী হতে হলে ৫হাজার টাকা করে আগাম না দিলে ফাইল নড়ে না। জিপি ফান্ড থেকে ঋন নিতে হলে দিতে হয় ১ হাজার থেকে ৫হাজার টাকা পর্যন্ত। বদলীর অর্ডার হলেও অর্থ না দেওয়ায় ঘুরতে হয় দিনের পর দিন। অবসরজনিত পেনশন তুলতে অর্থ ছাড়া কোন কাজ হয় না।

হাবাসপুর সদ্য জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করলে জবাব দিলেও দাবীকৃত চাহিদা পুরণ না করায় তাকে বিভাগীয় মামলা রুজুর সুপারিশ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। ছোট ঘিকমলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিল করতে তাকে ১০ হাজার টাকার মত গুনতে হয়েছে বলে জনশ্রুতি আছে। পদমদী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বদলী হয়েও অর্থ না দেওয়ায় দিনের পর দিন ঘুরতে হয়েছে। প্রতিনিয়ত শিক্ষকরা নাজেহাল হচ্ছে। ঝামেলা এড়াতে কিছু কিছু শিক্ষক তাদের বাড়ীতে দাওয়াত দিয়ে খাইয়ে কাছে আসার চেষ্টাও করছেন। তবে তাদের কাজ করতে অর্থ দিতে হয়েছে। আর এসব কাজ ম্যানেজ ও তদারকি করতে কয়েকজন শিক্ষক স্কুল বাদ দিয়ে বেশির ভাগ সময় কাটান শিক্ষা অফিসে।

নাম না প্রকাশের শর্তে কয়েকজন শিক্ষক জানান, নিজ ইউনিয়নের মধ্যে স্কুলে বদলী না করে বাইরের অন্যান্য স্কুলে বদলী করা হয়েছে। এতে প্রতিদিন বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে। পঞ্চম শ্রেণীর সার্টিফিকেট কম্পিউটারে প্রিন্ট করে দেওয়ার কথা থাকলেও প্রিন্ট ছাড়াই স্কুল গুলোতে সরবরাহ করেছে। এতে শিক্ষকদের বাড়তি অর্থ গুনতে হচ্ছে।

শিক্ষকরা শিক্ষা কর্মকর্তার এহেন দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন।



মন্তব্য চালু নেই