রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ায় অসামাজিক কাজে জড়িয়ে পড়ছে শিশু-কিশোররা

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেশের সর্ববৃহৎ দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে শিশু-কিশোররা মাদক ব্যবসা, মাদক সেবন ও নারী পাচারের মত বড় অবরাধ মূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িয়ে পড়েছে। সম্প্রতি র‌্যাবের হাতে ইয়াবাসহ গ্রেফতার হয় আশিক নামের এক শিশু। এছাড়া এ সপ্তাহে উদ্ধার হওয়া এক তরুনীর দায়ের করা মামলায় আসামী করা হয় রুহুল নামের এক শিশুকে।
সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রের সাথে কথা বলে জানা যায়, যৌনপল্লীতে জন্ম নেয়া বেশির ভাগ শিশু-কিশোররাই বর্তমানে মাদকাশক্ত হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া চুরি, ছিনতাই, নারীপাচারসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। প্রভাবশালী মাদক ব্যবসায়ী ও নারী পাচারকারীরা তাদেরকে এ ব্যবসায় নামিয়ে দিয়ে নিজেরা ফায়দা লুটছে। পল্লীতে বর্তমানে অর্ধশত মদের দোকান, শতাধিক গাজার দোকান ও ভাসমান হেরোইন, ফেন্সিডিল ব্যবসায়ী প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি অনেক প্রভাবশালী বাড়িওয়ালীরাও পল্লীর শিশু-কিশোরদেরকে মাদক ব্যবসা ও নারী ব্যবসার কাজে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
দেশের দক্ষিাণ-পশ্চিমাঞ্চল হতে প্রতিদিন সড়ক ও রেলপথে নানা ধরনের মাদক দ্রব্য যৌনপল্লীতে চলে আসে। এর বাইরে স্থানীয় সরকারী লাইসেন্সধারী মদের ডিলার হিসেবের মারপ্যাচে প্রতিদিন শত শত লিটার মদ যৌনপল্লীতে সরবরাহ করছে। এসকল মাদক বিক্রি ও সেবনকারীদের কাছে পৌঁছে দেয়ার কাজে প্রতিনিয়তই এ সব শিশুদের ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া সারা দেশ থেকে দালালদের মাধ্যমে পাচার করে আনা নারীদের যৌনপল্লীতে বিক্রি ও পাহাড়াসহ সব রকম কাজে তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে। আর এভাবে যৌনপল্লীর ভেতরে অন্তত শতাধিক শিশু-কিশোর মাদক সেবন, পরিবহন ও নারী পাচারসহ বিভিন্ন অনৈতিক কাজের সাথে যুক্ত হয়ে পড়েছে।
যৌনপল্লীর নারী ও শিশুদের নিয়ে কর্মরত বেসরকারী উন্নয়ন সংগঠন মুক্তি মহিলা সমিতির কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান মঞ্জু জানান, যৌনপল্লীর পরিবেশে একজন শিশু স্বাভাবিক বিকাশ কঠিন। পল্লীর শিশুকিশোরদের স্বাভাবিক ভাবে গড়ে তোলার জন্য তাদের সংস্থা শিক্ষা বিকাশ, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহন, নৈতিক শিক্ষা, সঞ্চয়সহ নানা ধরনের কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন বলে তিনি দাবি করেন। এ ছাড়া বিভিন্ন কারিগরি প্রশিক্ষন প্রদান করে পল্লীর অনেক শিশুকে স্বাভাবিক জীবন যাপনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে দাতাদের অর্থায়ন না থাকায় আর্থিক সংকটে ওই প্রকল্পটি আপাতত বন্ধ রয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই