থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে ইংলাক ৫ বছর নিষিদ্ধ
থাইল্যান্ডের প্রাক্তন ও দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রাকে অভিশংসন ও রাজনীতি থেকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করার পক্ষে ভোট দিয়েছেন দেশটির আইনপ্রণেতারা।
শুক্রবার সামরিক শাসক সমর্থক জাতীয় আইনপ্রণেতা পরিষদের ২১৯ সদস্যের মধ্যে ১৯০ জন ইংলাকে অভিশংসনের পক্ষে ভোট দেন। এর বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ১৮ সদস্য। একজন ভোটদান থেকে বিরত থাকেন। সিদ্ধান্তটি পাসের জন্য ২২০ সদস্যবিশিষ্ট পরিষদের ১৩২ সদস্যের ভোট প্রয়োজন ছিল।
শুক্রবার পার্লামেন্টের ভোটাভুটির ফলাফল একটি হোয়াইট বোর্ডে লেখা হয়। ভোটাভুটি প্রচার করে দেশটির রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলো। ইংলাকের অভিশংসনের বিষয়টি ভোটে পাস হলেও এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশটির জান্তা সরকার কিছু জানায়নি। তবে থাইল্যান্ডে বিবিসির সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, ইংলাককে আনুষ্ঠানিকভাবে অপসারণ ও রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধের ঘোষণা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
চাষিদের কাছ থেকে বাজারমূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত দামে চাল ক্রয়ের একটি প্রকল্পে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ ওঠে ইংলাকের বিরুদ্ধে। ওই প্রকল্প গরিব চাষিদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় হলেও বিরোধীদের অভিযোগ, এর মাধ্যমে ইংলাক ভোট কিনে থাকেন। তাই ওই অভিযোগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ওই ভোটাভুটির আয়োজন করেন আইনপ্রণেতারা।
যদিও গত বছর দেশটিতে সামরিক ক্যুর হওয়ার কয়েকদিন আগে একটি আদালত প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইংলাককে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপর সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করে। তবে দেশটির আইনপ্রণেতারা ওই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে শুক্রবার ভোট দেন শুক্রবার।
এদিকে এর আগে দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল ঘোষণা দিয়েছেন, চাল ক্রয় প্রকল্পে দায়িত্বে অবহেলার দায়ে ইংলাকের বিরুদ্ধে ফোজদারি মামলা করা হবে। অভিযোগ গঠনের পর আদালতে তা প্রমাণিত হলে ইংলাকের ১০ বছরের জেল হতে পারে।
দেশজুড়ে বিরোধীদের অস্থিরতার কারণে গত বছরের মে মাসে থাইল্যান্ডের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার বোন ইংলাক সিনাওয়াত্রাকে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করে সেনাবাহিনী।
এদিকে শুক্রবারের অভিশংসনের পরে এখন এটি খুবই স্পষ্ট, সিনাওয়াত্রা পরিবারের সঙ্গে সামরিক বাহিনী বা প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো সমঝোতা হয়নি এবং অদূর ভবিষ্যতেও আর হচ্ছে না।
ইংলাক ও তার ভাই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা থাইল্যান্ডের গ্রামাঞ্চলে এখনো তুমুল জনপ্রিয় মুখ। ২০০১ সালের পর থেকে যত নির্বাচন হয়েছে, তাতে জয়লাভ করেছে সিনাওয়াত্রাদের দল। কিন্তু নাগরিক সমাজে তাদের গ্রহণযোগ্যতা কমেছে। নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও সেনাকর্মকর্তারা সিনাওয়াত্রা পরিবারকে দুর্নীতিগ্রস্ত ও ক্ষমতার অপব্যবহারকারী হিসেবে অভিহিত করে আসছেন।
তথ্যসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স।
মন্তব্য চালু নেই