বালিয়াকান্দিতে ভাড়াটিয়া গৃহবধুকে নির্যাতনে হত্যার অভিযোগে ৮জনের বিরুদ্ধে মামলা
বাড়ীর মালিকের বিরুদ্ধে মারপিট ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে মৃত্যুর আগে আদালতে মামলা দায়ের করে এক প্রসুতি। তার মৃত্যুতে সিলেটের শ্রীমঙ্গল থানার নাজিরাবাদ গ্রামের ওলি মিয়ার ছেলে ওই গৃহবধুর স্বামী মোঃ আলাউদ্দিন বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাজবাড়ী বিজ্ঞ ১ নং আমলী আদালতে বাড়ীর মালিকসহ ৮জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছে। মামলাটি আগামী ২০ অক্টোবরের মধ্যে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বালিয়াকান্দি থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দিয়েছেন।
জানাগেছে, রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলা শহরের হোটেল ব্যবসায়ী হোসন আলীর বাড়ীর ভাড়াটিয়া শাপলা (৩০)। তার স্বামীর নাম আলাউদ্দিন। বাড়ী বালিয়াকান্দি উপজেলার পাইককান্দি গ্রামে। শাপলা ২০১৫ সালের জানুয়ারী মাসে হোসেন আলীর বাড়ীতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস ও ভাড়া পরিশোধ করে আসছিল।
এরমধ্যে তাকে অন্যায় ও অবৈধ ভাবে হামলা ও ক্ষতিগ্রস্থ করতে থাকে। সে অন্যায় কাজে বাধা দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে গত ৮ আগষ্ট বিকাল ৩টার সময় লোহার শাবল দিয়ে মাথা লক্ষ্য করে আঘাত করলে ডান হাত দিয়ে ঠেকালে কনুইয়ে লেগে রক্তাক্ত জখম হয়। মারপিট করাসহ গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে ও রক্ষিত নগদ ৬০ হাজার টাকা লুটপাট করে নেয়। তাকে টানা হেচরা করে বিবস্ত্র করে ফেলে। শাপলা গর্ভবর্তী এবং ১৫ আগষ্ট তার ডেলিভারী হওয়ার তারিখ। মারপিটের কারণে শাপলার গর্ভের সন্তান নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়াও মামলা করলে জীবনে শেষ করে ফেলার হুমকি প্রদান করে। তাকে বালিয়াকান্দি হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। মৃত্যুর আগে ওই গৃহবধু শাপলা বাদী হয়ে রাজবাড়ী বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ১ নং আমলী আদালতে ৪৪৮/৩২৩/৩৫৪/৩৮০/৫০৬(২) দ.বি. ধারায় মিসপি- ২৭২/১৫ মামলা দায়ের করে।
মামলার আসামীরা হলো, বালিয়াকান্দি গ্রামের হোটেল ব্যবসায়ী হোসেন আলী, টিপু মিয়ার ছেলে আজাদ, হোসেন আলীর মেয়ে কামিনী, হোসেন আলীর স্ত্রী নাজমা বেগম ও মজিদ আলী। তদন্তের জন্য উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করে।
গত ২২ আগষ্ট প্রসব বেদনা উঠলে দুপুরে শাপলাকে বালিয়াকান্দি হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ফরিদপুর মেডিকেলে নেওয়ার পরামর্শ দেন। ফরিদপুর না নিয়ে শাপলাকে সারাদিন ঘোরাঘুরি করতে থাকে। পরে বালিয়াকান্দি জননী ক্লিনিক এন্ড ডায়গোনসিস্ট সেন্টারে গিয়ে বাচার আকুতি করলে তারা তাৎক্ষনিক ভাবে আল্ট্রাসনোগ্রামের প্রস্তুতি নেওয়ার কালে ২টি বাচ্চাসহ শাপলা বেগমের প্রসবের পূর্বে সন্ধ্যায় তার মৃত্যু ঘটে। শাপলার ৩টি সন্তান রয়েছে।
এদিকে শাপলার স্বামী আলাউদ্দিন বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাজবাড়ী বিজ্ঞ ১নং আমলী আদালতে বালিয়াকান্দি গ্রামের বেনু সেখের ছেলে হোসেন আলী, আঃ মজিদ, হোসেন আলীর মেয়ে কামিনী, চামেলী, বাকসাডাঙ্গী গ্রামের আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী রত্না বেগম, ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার আশাপুরের মনির হোসেনের স্ত্রী রাবেয়া বেগম, বাকসাডাঙ্গীর মনছের আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেন ও হোসেন আলীর স্ত্রী নাজমা বেগমকে আসামী করে মিসপি-৩১৮/১৫, ধারা ঃ ৩০২/৩৪দ.বি. দায়ের করেছে। মামলাটি আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বালিয়াকান্দি থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মামলার পরবর্তী তারিখ আগামী অক্টোবর।
মন্তব্য চালু নেই