৪০ বছরে হজ ট্রাজেডিতে নিহত তিন সহস্রাধিক

ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ পবিত্র হজ পালন করতে গিয়ে গত ৪০ বছরে প্রাণ হারিয়েছেন তিন হাজারের বেশি হাজি। বিভিন্ন সময় পদদলিত, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, সড়ক দুর্ঘটনা, বোমা বিস্ফোরণ, শিয়া-সুন্নি সংঘর্ষ, ভবন ধস, অগ্নিকাণ্ড এবং ক্রেন ভেঙে পড়ার মতো দুর্ঘটনায় ঘটে এসব ট্রাজেডি।

১৯৭৫ সালের ডিসেম্বরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে মিনার তাবুতে আগুন লাগে। এতে নিহত হয় কমপক্ষে ২০০ হাজি।

এ ঘটনার ১১ বছর পর ১৯৮৭ সালের ৩১ জুলাই মক্কায় সৌদি নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে শিয়াদের সংঘর্ষে ৪০২ জন হাজি নিহত হন। যাদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন ইরানি। এ ঘটনায় আহত হন আরও ৬৪৯ জন।

১৯৮৯ সালের ৯ জুলাই মক্কায় দুইটি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহত হন এক হাজি এবং আহত হন আরও ১৬ জন।

১৯৯০ সালের ২ জুলাই মক্কায় মারা যান ১৪২৬ জন হাজি। তাদের বেশির ভাগই ছিলেন মালয়েশীয়, ইন্দোনেশীয় ও পাকিস্তানি। সুড়ঙ্গ পথে পদপিষ্ট হয়ে এই বিপুল মানুষের মৃত্যু হয়। হজ ট্র্যাজেডিগুলোর মধ্যে এটিই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা।

১৯৯৪ সালের ২৩ মে মক্কার আল-জামারাতে পদদলিত হয়ে ২৭০ জন হাজি মারা যান। যাদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন ইন্দোনেশীয়।

১৯৯৭ সালের ১৫ এপ্রিল মিনায় তাবুতে আগুন লেগে পুড়ে মারা যান ৩৪৩ জন। এ ঘটনায় আহত হন আরও প্রায় ১৫০০ মানুষ। গ্যাসের চুলা থেকে এ আগুনের সূত্রপাত হয়ে বলে পরবর্তীতে সৌদি কর্তৃপক্ষ জানায়।

১৯৯৮ সালের ৯ এপ্রিল মক্কার আল-জামারাতে শয়তানকে পাথর মারতে যাওয়ার সময় একটি ব্রিজের কাছে পদদলিত হয়ে ১৮০ জন হাজির মৃত্যু হয়।

এরপর ২০০১ সালের ৫ মার্চ ওই আল-জামারাতে শয়তানকে পাথর মারতে গিয়ে পদদলিত হয়ে ৩৫ জন হাজি মারা যান।

২০০৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারিতে ওই একই জায়গায় শয়তানকে পাথর ছুঁড়ে মারার সময় পদদলিত হয়ে মারা যান ২৪৪ জন হাজি।

২০০৬ সালে মক্কায় বহুতল আল-গাজা হোটেল ধসে ৭৬ জন নিহত হন এবং আহত হন আরও ৬৪ জন। একই বছর আল-জামারাতে শয়তানকে পাথর ছুঁড়ে মারতে গিয়ে পদদলিত হয়ে মারা যান আরও ৩৪৫ জন। সব মিলিয়ে ওই বছর দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ৪২১ হাজি।

চলতি বছরের ১১ সেপ্টেম্বর হজ শুরুর ১০ দিন আগে মক্কার প্রধান মসজিদের (মসজিদ আল-হারাম) নির্মাণ কাজের ক্রেন ভেঙে পড়ে কমপক্ষে ১০৭ জন হাজির মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন প্রায় ১৮৮ জন।

আর সবশেষ ২৪ সেপ্টেম্বর মিনায় ঘটলো আরেকটি দুর্ঘটনা। এতে এখন পর্যন্ত দেড়শ হাজির মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।



মন্তব্য চালু নেই