শিশুকে হত্যার দায়ে বাবা-মায়ের কারাদণ্ড

ফ্রান্সে ক্রিসটোফি চ্যাম্পেনয়েস নামে এক ব্যক্তি (৩৬) বেস্টেন নামে তার তিন বছরের ছেলেকে শাস্তি দিতে ওয়াশিং মেশিনে ঢুকিয়ে হত্যা করেছিলেন। এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছিল ২০১১ সালের নভেম্বরে। চার বছর আগে ছেলেকে হত্যার দায়ে আদালত ওই ব্যক্তিকে ৩০ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে।

স্কুলে দুস্টুমি করায় শিশুটিকে শাস্তি দিতে ওয়াশিং মেশিনে ঢুকিয়ে এর সুইচ অন করে দিয়েছিলেন নিষ্ঠুর বাবা। এরপর শিশুটি চলন্ত ওয়াশিং মেশিনের ভেতর ঘুরতে ঘুরতেই এক সময় প্রাণ হারায়।

শিশুটির মা চার্লেনে কোট্টি (২৯) তদন্ত কর্মকর্তাদের জানিয়েছিলেন, তিনি তার মেয়ের সঙ্গে পাজল খেলছিলেন আর ক্রিসটোফেন ইন্টারনেট চালাচ্ছিলেন। সেসময় চলন্ত ওয়াশিং মেশিন থেকে তার ছেলের চিৎকার শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু তিনি স্বামীর ভয়ে তার ছেলেকে বের করে আনতে পারেন নি।

এতটুকুন একটা শিশুকে তার বাবা এভাবে শাস্তি দিচ্ছিলেন অথচ মা হয়ে কোট্টি এই অন্যায়ে বাধা দেননি বরং সহায়তা করেছেন বলে আদালত তাকেও ১২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে।

কোট্টি পুলিশের কাছে ওই দিনে ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, যখন তার স্বামী বেস্টেনকে ওয়াশিং মেশিন থেকে বের করলেন তখন সে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সেসময় ক্রিসটোফেন ব্যাঙ্গ করে বলেছিলেন, ‘সে এখন আর আমাদের বিরক্ত করতে পারবে না।’

ওই দুর্ঘটনার পর ক্রিসটোফেন নিজেই প্যারিসের পূর্বাঞ্চলীয় জেরমিগনি-১’এভেক শহরের জরুরি বিভাগে ফোন করেছিলেন। তিনি জরুরি বিভাগে জানিয়েছিলেন, তার ছেলে সিড়ি থেকে পড়ে যাওয়ায় তাদের ‘ছোট্ট সমস্যা’ হচ্ছে।

সেসময় তার কথা বিশ্বাস করেছিলেন সবাই। কিন্তু পরে তার পাঁচ বছরের মেয়ে ডাক্তারকে জানিয়েছিল, ‘স্কুলে দুস্টুমি করার কারনে বাবা বেস্টেনকে ওয়াশিং মেশিনে ঢুকিয়েছিল।’

তাদের এক প্রতিবেশি শিশুটির মৃত্যুর পরে জানান, ‘শিশুটি একেবারে নগ্ন ছিল আর তার সারা শরীর বরফের মত ঠান্ডা ছিল। পুরোপুরি সাদা বাচ্চাটাকে দেখতে একেবারে পুতুলের মত লাগছিল।’

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বেস্টেইনকে তার বাবা ভালেবাসতেন না। তিনি প্রায়ই শিশুটিকে কঠোর সাজা দিতেন। স্কুল বা বাড়িতে কোনো ধরনের দুস্টুমি করলেই তাকে আলমারিতে আটকে শাস্তি দেওয়া হতো বলেও জানিয়েছেন তারা।



মন্তব্য চালু নেই