মিডিয়ার নজর এড়াতে তীর্থযাত্রায়! মোদির সেই স্ত্রী!

এতদিন লোকচক্ষুর আড়ালেই ছিলেন তিনি। অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষিকার অতি সাধারণ জীবন যাপন করছিলেন। কেউই আলাদা করে ভেবে দেখেনি তাঁর কথা। কিন্তু একটা হলফনামা বদলে দিল সব কিছু। বহু টালবাহানার পর বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র দামোদর মোদি সরকারিভাবে স্বীকার করে নিলেন সাধারণ সেই স্কুল শিক্ষিকাই তাঁর স্ত্রী। এতেই বদলে গেল সব কিছু। হঠাৎ করেই ভারতের মিডিয়ার সব স্পট লাইট ঘুরে গেল তাঁর দিকে। নির্বাচনের ভরা বাজারে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু তিনিই। কিন্তু কোথায় তিনি- যশোদাবেন মোদী? তাঁকে আর খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না!
বুধবার ভাদোদাড়াতে মোদির নমিনেশন জমা দেওয়ার পর থেকেই যশোদাবেনের খোঁজে তৎপর রয়েছে ভারতের গোটা মিডিয়া জগত। কিন্তু বেমালুম অদৃশ্য হয়ে গেছেন মোদি পত্নী। কিন্তু মিডিয়াকে এড়াতে গা ঢাকা দিয়েছেন যশোদা। কেউ কেউ আবার বলছেন, ৪০ জন মহিলার সঙ্গে এখন তিনি তীর্থযাত্রায় বেড়িয়েছেন।
বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর স্ত্রী নাকি তাঁর অবসরের আগে এক সহকর্মীর কাছে আক্ষেপ করে জানিয়েছিলেন,  তিনি তাঁর স্বামীর কাছ থেকে কিছুই আর আশা করেন না, শুধু মাত্র চান মোদি যেন তাঁকে অন্তত স্ত্রী হিসাবে স্বীকার করে নেন। ‘ঈশ্বর তার প্রার্থণায় সাড়া দিয়েছে। মোদি তাকে পত্নী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।আমরা এতে ভীষণভাবে আনন্দিত। আমরা এখন সবাই মিলে প্রার্থণা করব যাতে তিনি প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন।’ – বলছিলেন যশোদার বড় ভাই কমলেশ মোদি।
আজ থেকে ৪৫ বছর আগে যশোদাকে ছেড়ে গিয়েছিলেন মোদি। এরপর থেকে একাই কাটাচ্ছেন সাবেক এই স্কুল শিক্ষিকা। পুনরায় বিয়ে করেননি। তিনি বিজেপি নেতা মোদিকে মনে প্রাণে স্বামী মানেন। তার জন্য নিয়মিত উপাসনা করেন। দল যাতে মোদিকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়, এ প্রার্থণায় দীর্ঘ চার মাস তিনি জুতা পরেননি- খালি পায়ে কাটিয়েছেন। এছাড় মোদি যাতে দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন সেই প্রার্থনায় গত কয়েক মাস ধরে ভাত খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। দিনে মাত্র একবার খাচ্ছেন তিনি।
১৯৬৮ সালে যশোদাকে বিয়ে করেছিলেন মোদি।তখন দুজনারই বয়স অল্প। যশোদার ভাই অশোক সেদিনের স্মৃতি বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, বিয়ের পর মোদি দেশসেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে স্ত্রীকে ছেড়ে আসার কথা বলেন। এসময় তিনি যশোদাকেও লেখাপড়া শিখে স্কুল শিক্ষক হওয়ার পরামর্শ দেন।যশোদা নীরবে স্বামীর ইচ্ছা মেনে নেন।কখনোই মোদির বিরুদ্ধে কারো কাছে কোনো অভিযোগ করেননি।
চাকুরি থেকে অবসর নেয়ার পর ধর্মকর্মে নিজেকে উৎসর্গ করেন যশোদা। ভোর চারটায় ঘুম থেকে উঠে পূঁজোয় বসেন। বেলা এগারটা পর্যন্ত চলে প্রার্থণা। তার সাবেক সহকর্মী প্রবীণ ভিয়াস বলেন,‘ গ্রামের সবাই তাকে মোদির স্ত্রী হিসেবে জানে। কিন্তু যশোদা কখনো এ বিষয়ে মুখ খুলেনি।’
এ কারণে মোদির পরিবারের সদস্যরাও যশোদাকে সম্মান করেন।তার সম্পর্কে মোদির বোন বাসন্তি বলেন,‘যশোদা মোদির সব খবর পড়েন। তাকে ত্যাগ করা সত্ত্বেও তিনি মোদি সম্পর্কে কখনও একটি কটূ কথা বলেননি।যশোদা হলেন প্রকৃত ভারতীয় নারীর জলন্ত উদাহরণ।’


মন্তব্য চালু নেই