ব্রিটিশ সরকারের মুসলিমনীতির কড়া সমালোচনায় ওয়ার্সি

ব্রিটিশ সরকারের মুসলিমনীতির তীব্র সমালোচনা করেছেন সাবেক মন্ত্রি পাকিস্তান বংশোদ্ভূত ব্যারোনেস সাঈদা ওয়ার্সি। ব্রিটিশ দৈনিক অবজারভারে লেখা নিবন্ধে তিনি বলেছেন, ব্রিটেনে বসবাসরত মুসলমানদের প্রতি সরকারের আচরণ সন্দেহ ও অবিশ্বাসের পরিবেশ তৈরি করেছে। মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব পালনের সময় তিনি দেখেছেন, মুসলমানদের উদ্বেগের বিষয়গুলো প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এবং মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্য কীভাবে উপেক্ষা করেছেন।

সাঈদা ওয়ার্সি ব্রিটিশ মন্ত্রিপরিষদে দায়িত্ব পালন করা প্রথম মুসলমান। তিনি দেশটির ক্ষমতাসীনদল কনজারভেটিভ পার্টির কো চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথ বিষয়ক জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী এবং ফেইথ অ্যান্ড কমিউনিটি বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। গত বছর অক্টোবরে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বোমা হামলা চলাকালে ব্রিটিশ গাজা নীতিকে ‘নৈতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য’ দাবি করে ওয়ার্সি মন্ত্রিসভা থেকে পদ ত্যাগ করেন।

মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের মুহূর্তগুলোর কথা তুলে ধরে ওয়ার্সি লিখেন, তিনি যে সরকারের দায়িত্ব পালন করেছেন মুলমান সংগঠন কিংবা মুসলমান অধিকারকর্মির সংখ্যা বাড়লে বিষয়টি তারা সন্দেহের চোখে দেখতো।

প্রতিবছর প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ব্রিটেনের ইহুদি কমিউনিটির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে তাঁদের সমস্যা এবং উদ্বেগের কথা শোনেন। কিন্তু মুসলমান এবং অন্যান্য ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে একইরকম বৈঠকের অনুরোধ জানানো হলে প্রধানমন্ত্রী তাতে সায় দেননি।

২০১১ সালের জানুয়ারিতে ওয়ার্সি সরকারকে সতর্ক করে বলেছিলেন, ব্রিটেনে মুসলমান বিদ্বেষ একটি সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য সংস্কৃতিতে রূপ নিচ্ছে।এর ফলে মুসলমানরা ঘৃণার শিকার হবেন। এরপর মুসলমানদের প্রতি ঘৃণা এবং বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ উদ্বেগজনকহারে বেড়ে চলেছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত সরকার এ ব্যাপারে কোনো কথা বলেনি।

সম্প্রতি প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় পশ্চিমা দেশগুলোতে বসবাসরত মুসলমানদের নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার যুক্তরাজ্যের সমাজকল্যান মন্ত্রী এরিক পিকলস দেশটির এক হাজার ইমামের কাছেই সলামি উগ্রবাদ দমনে সহায়তা চেয়ে চিঠি লেখেন।ওই চিঠিতে মুসলমানরা ব্রিটিশ সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন—এমন ইঙ্গিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।

এ প্রসঙ্গে ওয়ার্সি বলেন, মুসলমানরা ব্রিটিশ মূল্যবোধ সম্পর্কে কথা বলবে, যখন তাঁরা বুঝবে যে তাঁদের কথা আমলে নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, পারস্পরিক বিশ্বাসে ঘাটতি থাকায় সরকারের মহৎ উদ্দেশে পাঠানো চিঠি নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে।



মন্তব্য চালু নেই