বরিশালে তাপদাহের সাথে বেড়েছে লোডশেডিং জনজীবন দুর্বিসহ, শিশু ও বৃদ্ধরা মৃত্যু ঝুকিতে

হঠাৎ করে জ্যৈষ্ঠের প্রচন্ড তাবদাহে পুড়ছে বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের প্রকৃতি। ভ্যাপসা গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে ভয়াবহ বিদ্যুতের লোডশেডিং শুরু হওয়ায় ক্রমেই দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে জনজীবন। একটু স্বত্ত্বি পেতে একপশলা বৃষ্টির আশায় শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর জেলার বিভিন্ন মসজিদে বিশেষ দোয়া-মোনাজাত করা হয়েছে। তীব্র গরমে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন জীবিকার তাগিদে বাইরে বের হওয়া খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষেরা,সেই সাথে শিশু ও বৃদ্ধরা রয়েছেন মৃত্যু ঝুকিতে।

আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, বাতাসে জলীয়বাস্পের পরিমাণ বেশি থাকায় অনুভূত তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। সেই সাথে ঘণ ঘণ লোডশেডিংয়ে দুর্ভোগের মাত্রা পৌঁছেছে চরমে। বরিশাল আবহাওয়া অফিস সূত্রে আরো জানা গেছে, জ্যৈষ্ঠের প্রথম থেকেই সূর্যের প্রখরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। মাথার ওপর গণগণে সূর্য, ঘরের বাইরে বেরুলেই শরীর যেন পুড়ে যায়। তবে বাতাসে জলীয়বাস্প বেশি থাকার কারণে ভ্যাপসা গরম অনুভূত হচ্ছে বেশি। নগরীতে গরমের এই তীব্রতাকে আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে তুলেছে ইট-পাথরের বাড়ি-ঘর আর ইঞ্জিনচালিত যানবাহন।

একইসাথে লোডশেডিংয়ের কারণে নাভিশ্বাস উঠেছে জনজীবনে। জেলার সর্বত্র বৃদ্ধি পেয়েছে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশই হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধ। ব্যবসায়ীরা জানান, গত কয়েকদিনের ভ্যাপসা গরমের সাথে পল্লাদিয়ে বেড়েছে বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে জেলা সদরসহ গৌরনদী, উজিরপুর, মুলাদী, বাকেরগঞ্জ ও বাবুগঞ্জ উপজেলায় সবমিলিয়ে একঘন্টাও বিদ্যুৎ ছিলোনা।

বৃষ্টি হওয়ার পর তাপমাত্রা কমার আশংকা করে বরিশাল আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক প্রণব কুমার রায় জানান, মাঝে মধ্যে বৃষ্টি হলে কিছুটা তাপমাত্রা কমবে। তবে আগামী ৭ জুনের পর দক্ষিণাঞ্চলসহ গোটা দেশের অসহনীয় গরমের পুরোটা স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তিনি আরও জানান, বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা ছিলো বৃহস্পতিবার ৩৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবারের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৫.৫ ডিগ্রি ও সর্বনিন্ম ২৮.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার বেলা দুইটার দিকে বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৬১ শতাংশ।

জেলা সির্ভিল সার্জন ডা. এটিএম মিজানুর রহমান গরমের এই দিনগুলোতে সুস্থ্য থাকার জন্য বেশি করে পানি পানের পরামর্শ দিয়ে বলেন, প্রচন্ড গরমে সবচেয়ে প্রধান কাজ হচ্ছে বেশি করে নিরাপদ পানি পান করা। লবনশূন্যতা পূরণের জন্য খাবার স্যালাইন খাওয়ার পাশাপাশি তিনি বেশি তেল, ঝাল ও মশলাযুক্ত খাবার কম খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে আরও বলেন, যেকোন খাবারের সতর্কতা অবলম্বনের পাশাপাশি সবাইকে তরল জাতীয় খাবার বেশি বেশি গ্রহণ করতে হবে।



মন্তব্য চালু নেই