বন্ধুত্ব ঝালাই করতে ভারতে পুতিন

প্রতিবেশী ইউক্রেনের ঘটনায় পশ্চিমা দেশগুলো অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করেছে রাশিয়ার ওপর। এর মধ্যে বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবেচয়ে নিচে নেমে গেছে।

এর ফলে অর্থনৈতিকভাবে বেশ ভালো চাপের মুখে আছে সাবেক সমাজতান্ত্রিক দেশটি। আর এ বৈরী পরিবেশে পুরনো হয়ে যাওয়া বন্ধুত্বের সম্পর্কটি নতুন করে ঝালাই করতে ভারত সফর করছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

জ্বালানি, প্রতিরক্ষা ও পারমাণবিক শক্তি নিয়ে দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গতকাল বুধবার রাতে একদিনের সফরে নয়াদিল্লি পৌঁছেছেন তিনি।

সমাজতান্ত্রিক আমলে ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার বন্ধুত্বটা ঘনিষ্ঠ ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক কয়েক বছরে দু’দেশের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক কিছুটা শিথিল হয়েছে। চীন-রাশিয়ার তুলনায় ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিসংখ্যানেই ব্যাপারটি পরিষ্কার হয়ে যায়। ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ১০ বিলিয়ন ডলার হলেও তা চীনের সঙ্গে রাশিয়ার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের নয় ভাগের এক ভাগ মাত্র।

একদিকে পশ্চিমাদের অর্থনৈতিক অবরোধ অন্যদিকে জ্বালানি তেলের দাম পড়ে যাওয়ায় চাপের মুখে থাকা রাশিয়া অস্ত্র ও জ্বালানি বিক্রির জন্য এখন নতুন বন্ধু খুঁজছে।

ক্ষমতায় আসার পর ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মার্কিনপ্রীতিতে বেশ আতঙ্কেই ছিল রাশিয়া। তবে বহুদিনের এই ‘পরীক্ষিত মিত্র’ কিন্তু রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা বরাবরই করে এসেছে।

ভ্লাদিমির পুতিন আসার পর বুধবার রাতে রাশিয়ার সঙ্গে পুরনো সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি এক টুইটার বার্তায় বলেন, ‘সময় বদলেছে, তবে আমাদের বন্ধুত্ব নয়। আমরা আমাদের এই সম্পর্ক এগিয়ে নিতে যাই এবং এই সফর সে লক্ষ্যেরই একটি পদক্ষেপ।’

সফরকালে প্রেসিডেন্ট পুতিন ভারতকে ‘বিশ্বস্ত ও পরীক্ষিত প্রতিরক্ষা অংশীদার’ বলে মন্তব্য করেন।

এই সফরে ভারতের সঙ্গে ১৫ থেকে ২০টি চুক্তি করতে যাচ্ছে রাশিয়া। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সৈয়দ আকবর উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের বহুমাত্রিক সম্পর্কের বিবেচনায় টেবিলে বিভিন্ন ইস্যু রয়েছে। জ্বালানি, পারমাণবিক জ্বালানি সহযোগিতা, প্রতিরক্ষা ও জনগণের আন্তঃসম্পর্কের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় চুক্তির আলোচ্যসূচিতে রয়েছে।’



মন্তব্য চালু নেই