‘নির্দেশনা না মানলে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা’

সিটি নির্বাচনে বেগম খালেদা জিয়া যদি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্দেশনা না মেনে আবারো নির্বাচনী প্রচারণা চালান তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কমিশনের সচিব মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম।
শনিবার দুপুরে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের নিজ কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
সিরাজুল ইসলাম বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তা খালেদা জিয়াকে আচরণবিধি মেনে চলার জন্য চিঠি দিয়েছে। তারপরেও যদি তিনি নির্দেশনা না মানেন তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বেগম খালেদা জিয়া একটি গাড়ি নিয়ে প্রচারণায় বের হতে পারবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনী বিধিমালায় গাড়িবহর নিয়ে কোনো প্রার্থী অথবা প্রার্থীর পক্ষে কেউ প্রচারণা করতে পারবে না। গাড়িবহর নিয়ে প্রচারণা করলে রাস্তায় অনেক বিঘœ ঘটে। জনগণের চলাচলে অনেক সমস্যা হয়। তাই আমরা তাকে অনুরোধ করেছি তিনি যেন গাড়িবহর নিয়ে প্রচারণা না চালান। নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে প্রচারণা চালালে সেক্ষেত্রে কমিশনের কোনো আপত্তি নেই।
নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে কমিশন কি কি পদক্ষেপ নিয়েছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সিরাজুল ইসলাম বলেন, আপনারা জানেন তিনটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন আগামী ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে। আমরা এই তিনটি সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। আমাদের সকল লজিস্টিক প্রস্তুতি সম্পন্ন। আমাদের নির্বাচনী মালামাল প্রস্তুত করা হয়েছে এবং চট্টগ্রামের মালামাল গতকাল পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ ঢাকার দুই সিটির নির্বাচনী মালামাল দেওয়া হবে। এবং আগামীকাল রাত ১২ টার মধ্যে নির্বাচনী সকল প্রচার প্রচারণা বন্ধ হয়ে যাবে। তাই এই নির্বাচনকে সুষ্ঠু, নির্বিঘœ ও শান্তিপূর্ণ করার জন্য নির্বাচন কমিশন সকল আয়োজন সম্পন্ন করেছে।
নির্বাচনী কেন্দ্র ও কেন্দ্রের বাইরে নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়জিত থাকবে। প্রতি সাধারণ কেন্দ্রে ২২ জন করে নিরাপত্তা কর্মী ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ২৪ জন নিরাপত্তা কর্মী দায়িত্ব পালন করবেন। এর মধ্যে যথাক্রমে ১০ ও ১২ জন সশস্ত্র নিরাপত্তা কর্মী থাকবেন। এর বাইরে প্রতি ওয়ার্ডে ১ টি করে পুলিশের মোবাইল টিম নিয়োজিত থাকবে। প্রতি ২ ওয়ার্ডে র্যাব ও বিজিবির সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। তিন সিটিতে প্রায় ১০০ প্লাটুন বিজিবি সদস্য নিয়োজিত থাকবেন।
নির্বাচন কমিশন সচিব আরো বলেন, আমরা মোটামুটি হিসাব করে দেখেছি আনসার, পুলিশ, র্যাব, কোস্টগার্ড, বিজিবি মিলে প্রায় ৮০ হাজারের মতো নিরাপত্তা কর্মী নির্বাচনের দিন নিয়োজিত থাকবে। এ ছাড়া সেনাবাহিনী নিয়োজিত থাকবে। তারা ২৬ তারিখ থেকে সেনানিবাসে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবে। রিটার্নিং কর্মকর্তা যখনি মনে করবেন যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে এবং সেনাবাহিনীর প্রয়োজন আছে তখন আহবান করলেই সেনাবাহিনী চলে আসবে।
গত কয়েকদিন যাবত হালকা সহিংসতা দেখা গেছে এটাকে কি মনে করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ১৮ মার্চ তফসিল ঘোষণার পর থেকে প্রার্থীরা সঠিকভাবে আচরণবিধি পালন করেছে। এটা খুব ভালো একটা বিষয়। তা সত্ত্বেও কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটেছে। এটা নির্বাচন কমিশন ও আশা করেনি কখনো। এটি যাতে আর না হয় তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রচারণাকালে নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কোন প্রার্থী যদি প্রচারণা করার সময় বাধার মুখে পড়েন তাহলে তাকে অবশ্যই নির্বাচন কমিশন নিরাপত্তা দেবে। তবে কোন প্রার্থীর পক্ষে যদি কেউ প্রচারণা করার সময় নিরাপত্তাহীনতায় পড়েন তাহলে তাকে নির্বাচন কমিশনকে জানাতে হবে সেই ক্ষেত্রে কমিশন ব্যবস্থার কথা চিন্তা করবে।
মন্তব্য চালু নেই