ট্রাম্পের কর ফাঁকি: যত দোষ হিলারির

মার্কিন কর আইনের মারপ্যাঁচে প্রায় দু’দশক ধরে আয়কর পরিশোধ না করার তথ্য জাতীয় দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশের পর থেকে এ নিয়ে বেশ চাপের মধ্যে আছেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু ইস্যুটি খোলাসা করার বদলে পরিস্থিতি সামাল দিতে ট্রাম্প ধরেছেন তার চিরাচরিত পথ: হিলারিকে দোষারোপ করা।

নিজের করের হিসাব না দিয়ে ট্রাম্প উল্টো বলেছেন, ডেমোক্রেটিক দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন ‘সারাজীবনে একটা ডলার সৎভাবে আয় করেননি’। হিলারির অার্থিক কর্মকাণ্ডকে তিনি ‘সর্বোচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতি’ বলেও দাবি করেন।

‘আপনার প্রায় সব উপার্জনই আসে অর্থের বিনিময়ে দেয়া বক্তৃতা আর ট্রেডিং অ্যাকসেস থেকে। আপনার কি মনে হয় আমাদের জাতির কর্মসংস্থানকারী ও কর্মীদের পক্ষে লড়াই করার মতো ব্যবসায়িক জ্ঞান আপনার আছে?’ হিলারিকে উদ্দেশ্য করে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে প্রশ্ন ছোঁড়েন তার অনুসারী জেসন মিলার।

এছাড়াও সোমবার ভার্জিনিয়ায় অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যদের মাঝে সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক এক ভাষণে ডোনাল্ড ট্রাম্প হিলারির সামরিক নীতির সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি এবং ওবামা প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার নিরাপত্তা বিধানের জন্য তেমন কিছুই করেননি।

পররাষ্ট্র বিভাগের কাজে ব্যক্তিগত ইমেইল ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় তথ্যের সাইবার নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলার জন্য হিলারি ক্লিনটনের নামে মামলা হওয়া উচিৎ বলেও উল্লেখ করেন এই রিপাবলিকান প্রার্থী।

এমনকি হিলারি ক্লিনটন-বিরোধী একটি ওয়েবসাইটও চালু করেছে ট্রাম্পের নির্বচানী প্রচারণা শিবির। হিলারি ক্লিনটন এবং তার ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী টিম কেইনের বিরুদ্ধে জনগণকে নিয়ে যাওয়ার জন্য সহায়ক সংবাদ ও বক্তব্য দিয়ে সাজানো হয়েছে clintonkaine.com নামের ওই ওয়েবসাইটটি।

প্রথমে হিলারির সঙ্গে বিতর্কে ভালো পারফর্ম করতে না পারা এবং তার সপ্তাহখানেক পরই নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন – এসব থেকে বেরিয়ে আসতে অনেকটা এভাবেই আগ্রাসী ভূমিকা নিয়ে রোববারের বিতর্কের দিকে এগোনো হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প ও তার অনুসারীরা।

আর আত্মপক্ষ সমর্থন করে কলোরাডো অঙ্গরাজ্যে সমর্থকদের ভীড়ে দেয়া ভাষণে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমি এখন আপনাদের জন্য কাজ করছি, ট্রাম্পের জন্য নয়।’ বলেন, তিনিই একটি ‘ত্রুটিযুক্ত কর আইন’ মেরামতের জন্য সবচেয়ে বেশি যোগ্য।

গত ৪০ বছরের ইতিহাসে প্রত্যেক প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রার্থীই নির্বাচনের আগে তার আয়কর রিটার্ন প্রকাশ করে এসেছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পই প্রথম প্রার্থী যিনি আয়কর রিটার্ন প্রকাশে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। এর কিছুদিন পরই নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশ পায় ট্রাম্পের ১৮ বছর ধরে রাষ্ট্রীয় কর না দেয়ার খবর। ডোনাল্ড ট্রাম্প বিষয়টি স্বীকার বা অস্বীকার – কোনোটাই না করলেও এর মধ্য দিয়ে সবাই যেন দু’য়ে দু’য়ে চার মেলাচ্ছেন।



মন্তব্য চালু নেই