জাকারবার্গের প্রশ্নে কান্না বিজড়িত নরেন্দ্র মোদি

ফেসবুকের টাউন হল প্রশ্নোত্তর পর্ব আজ অন্যান্য সময়ের মতো ছিল না। কারণ আজ এখানে উপস্থিত ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর তাই পুরো অনুষ্ঠানের চেহারাই আজ পাল্টে গিয়েছিল। আর এই অনুষ্ঠানে জাকারবার্গের একটি প্রশ্নে প্রায় কান্নাবিজড়িত হয়ে পড়েছিলেন মোদি।

৫০ মিনিটের এই প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছিল ফেসবুকের ক্যালিফোর্নিয়া ক্যাম্পাসের মেনলো পার্কে। সেখানে ভারত সরকারের বিনিয়োগ, ব্যবসা, নারীর ক্ষমতায়ন প্রভ্রতি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল নরেন্দ্র মোদিকে। তবে জাকারবার্গ নিজেই তাকে একটি প্রশ্ন করে বসলেন। মোদিকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি বুঝতে পেরেছি আপনার জীবনে আপনার মা খুব গুরুত্বপূর্ণ আসন গেঁড়ে আছেন। আমি আশা করি আপনি তার সম্পর্কে আমাদের কিছু বলবেন।”

জাকারবার্গের আগ্রহ মেটানোর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত শ্রোতাদের মাঝে থাকা জাকারবার্গের বাবা-মাকে দাঁড়াতে বললেন। আর এটি এজন্যই যাতে করে উপস্থিত বিপুল সংখ্যক মানুষ জাকারবার্গের বাবা-মাকে অভিনন্দন জানাতে পারেন।

এবার নরেন্দ্র মোদি বললেন তার মাকে নিয়ে। মাকে নিয়ে বলার সময় তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। “আমি খুবই গরিব পরিবারের সন্তান। আমরা যখন ছোট ছিলাম, আমরা তখন…আমারা পাশের প্রতিবেশীদের বাড়ি যেতাম আর তাদের থালাবাসন পরিষ্কার করতাম, পানি ভরে দিতাম, আরও অনেক কষ্টের কাজ করতাম। বুঝতেই পারছেন একজন মাকে কী পরিমাণ কষ্ট করতে হয়েছে তার সন্তানকে বড় করার জন্য।”

“তাকে যে পরিমাণ কষ্টের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল…এবং এটা শুধু নরেন্দ্র মোদির ক্ষেত্রেই নয়। সমগ্র ভারতে এমন হাজার হাজার নারী ও মা আছেন, সন্তানদের জন্য যারা তাদের পুরো জীবন বিলিয়ে দেন।”

এরপর আরও কিছু প্রশ্নের জবাব দেন মোদি। এর মধ্যে একটি প্রশ্ন ছিল, “প্রথম দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার শুরু করেছেন, এমন অনেকের মাঝে আপনি একজন। আপনি কি মনে করেন সরকার পরিচালনা, নাগরিক সেবা এবং পররাষ্ট্র নীতির জন্য সামাজিক মাধ্যম কিংবা ইন্টারনেট গুরুত্বপূর্ণ?”

এই প্রশ্নের জবাবে নরেন্দ্র মোদি বলেন, তিনি যখন প্রথম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার শুরু করেন, তখন এটি ছিল কেবলই কৌতূহলের কারণে। তখন তিনি ভাবতে পারেননি এটি এরকম প্রভাব ফেলবে। সরকার পরিচালনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইন্টারনেটের গুরুত্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা পাঁচ বছর পরপর নির্বাচন করতাম। আর এখন পাঁচ মিনিট পরপরই নির্বাচন হয়।”

ভারতের ৮০ কোটি থেকে ১০০ কোটি ইন্টারনেট সুবিধা বঞ্চিত মানুষকে ইন্টারনেট সেবার আওতায় আনতে কী ধরণের বিনিয়োগ পরিকল্পনা করছে ভারত সরকার, এমন প্রশ্ন ছিল তার কাছে। এর জবাবে তিনি বলেন, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ভারতের ৬ লাখ গ্রামকে অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সংযুক্ত করা হবে। তিনি বলেন, “সারা বিশ্বের দিকে খেয়াল করলে দেখা যাবে সভ্যতা গড়ে উঠেছে নদীকে ঘিরে। তবে আমি মনে করি ভবিষ্যতে শহর গড়ে উঠবে নেটওয়ার্ক ও অপটিক্যাল ফাইবারকে ঘিরে। আর এই বিষয়টিই ভবিষ্যতের জন্য আমাদের মনে রাখতে হবে।

লস অ্যাঞ্জেলস টাইমস অবলম্বনে



মন্তব্য চালু নেই