গোয়ালন্দে ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা অনুষ্ঠিত
গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই লাঠি খেলাটি এখন বিলুপ্তির পথে গেলেও জনপ্রিয়তা কমেনি। তারই প্রমাণ মিলেছে গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের জলিল মুন্সির পাড়া গ্রামে দিনব্যাপী লাঠি খেলা প্রতিযোগিতায়। বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লাঠিয়ালরা তাদের শারীরিক কসরত দেখিয়ে মন কেড়েছেন দর্শকদের।
খ্যাতিমান লাঠিয়াল প্রয়াত আ. কাদের মৃধার স্মরণে শুক্রবার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলার আয়োজন করা হয়। কাদের মৃধার পরিবার এ খেলার আয়োজন করে। বিকেলে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের লাঠিয়াল দল এতে অংশগ্রহন করেন। বাদ্যের তালে তালে খেলার বিভিন্ন কলা কৌশল দেখে মুগ্ধ হন উপস্থিত সহ¯্রাধিক দর্শনার্থী।
খেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উপভোগ করেন গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবিএম নুরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আতর আলী সরদার, আওয়ামীলীগ নেতা হাফিজুল ইসলাম, আব্দুল জলিল মুন্সি, প্রমুখ।
দর্শকরা তাদের অনুভূতিতে জানিয়েছেন, খেলা মানুষকে একত্রিত করে সৌহার্দ ও সম্প্রীতির বন্ধন দৃঢ় করে। যুব সমাজকে বিপথ থেকে ফেরাতে এ ধরণের আয়োজন চান অনেকেই। শিশুদের নির্মল বিনোদনের জন্য লাঠি খেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তবে গ্রাম বাংলার সাধারণ মানুষ ও লাঠিয়ালদের রক্তের সঙ্গে এই খেলা মিশে থাকলেও সরকারি পৃষ্টপোষকতা না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করলেন প্রবীন লাঠিয়ালরা।
লাঠিয়াল দলের দলনেতা রিকাত সরদার জানান, তিনি ১৫ বছর বয়স থেকে লাঠি খেলে আসছেন। জীবনে অনেক স্থানে খেলা করে মানুষকে আনন্দ দিয়েছেন। কিন্তু অন্যান্য খেলার মতো সরকারিভাবে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে কোনো প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা নেই। সরকার যদি লাঠিখেলা পৃষ্টপোষকতা করে তাহলে দেশ ছাপিয়ে বিদেশের মাটিতেও এই খেলায় দেশের সুনাম অর্জন হবে।
কাদের মৃধার ছেলে আবদুল হমিদ মৃধা জানান, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী অনেক খেলার মধ্যে লাঠি খেলা অন্যতম। কিন্তু সময়ের প্রয়োজনে সভ্যতার বিবর্তনে আধুনিক সব খেলার ভিড়ে প্রায় বিলুপ্তির পথে এ লাঠি খেলা। এক সময় গ্রাম-শহরের মানুষ ঢাক-ঢোল পিটিয়ে প্রতিনিয়ত আয়োজন করত লাঠি খেলার। বিয়ে, খাৎনাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে লাঠি খেলার আয়োজন না থাকলে সে অনুষ্ঠান যেন থেকে যেত অসম্পন্ন। প্রায় হারিয়ে যেতে বসা এ খেলাটি ধরে রাখতে বিগত ৫০ বছর ধরে তারা পারিবারিক ভাবে এ খেলাটি আয়োজন করে আসছেন। তার বাবা লাঠিয়াল কাদের মৃধা ছিলেন এ আয়োজনের প্রধান ব্যক্তিত্ব।
মন্তব্য চালু নেই