রাজবাড়ীর কিছু খবর :

বালিয়াকান্দিতে সড়কের ৪টি পয়েন্টে সামান্য বৃষ্টিতেই মরণ ফাঁদে পরিনত

সামান্য বৃষ্টিতেই রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলাতে সড়কের ৪টি পয়েন্ট মরণ ফাঁদে পরিনত হয়েছে।
বুধবার রাতে সামান্য বৃষ্টি হলে বালিয়াকান্দি- রাজবাড়ী সড়কের বহরপুর কলেজ এলাকার গোরস্থান, রায়পুর ইটভাটা, বালিয়াকান্দি-মধুখালী সড়কের ওয়াপদা মোড় ও নারুয়া-বালিয়াকান্দি সড়কের পশ্চিম বালিয়াকান্দি এলাকা মরণফাঁদে পরিনত হয়েছে। ইটভাটার জন্য মাটি নেওয়ার ফলে সড়কের উপর মাটির স্তর পড়ে। এতে বৃষ্টি হওয়ায় যানবাহন চলাচল করতে গিয়ে পড়ে বিপাকে। ঘটেছে কয়েকটি দুর্ঘটনা। এসব এলাকায় দুর্ঘনায় অন্তত ৪জন মারাত্বক আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। সড়কে চলাচলরত যানবাহন চালকরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

 

বালিয়াকান্দিতে বজ্রপাতে এক কৃষক আহত
বৃহস্পতিবার সকালে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি ইউনিয়নের শালমারা গ্রামে বজ্রপাতে এক কৃষক আহত হয়েছে। ওই কৃষকের নাম রবিউল সেখ (৩০)। পিতার নাম মেরু সেখ। বাড়ী সদর ইউনিয়নের শালমারা গ্রামে। তাকে বালিয়াকান্দি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সোহেল ফকির জানান, সকাল ৮টার দিকে রবিউল শালমারার শনুর বিলে মাঠে কাজ করা অবস্থায় বজ্রপাতে হঠাৎ আহত হয়ে পড়ে। আমিসহ আশপাশে থাকা লোকজন তাকে দ্রুত উদ্ধার করে বালিয়াকান্দি হাসপাতালে ভর্তি করি।

 

৩দিনব্যাপী ধর্মীয় অনুষ্ঠান
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার জঙ্গল ইউনিয়নের আগপোটরা গ্রামে ৩দিনব্যাপী ধর্মীয় অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আগপোটরা সার্বজনীন লোকনাথ আশ্রমের সভাপতি স্বপন কুমার মন্ডল জানান, শিব চতুদশী উদযাপন উপলক্ষে আগপোটরা গ্রামের প্রবাহমান গড়াই নদীর তীরে সার্বজনীন লোকনাথ আশ্রম অঙ্গনে এ অঞ্চলের ধর্মপ্রান শত শত হিন্দু নর-নারীর অংশগ্রহনে ১৭ ফেব্রুয়ারী শিবচতুদশী পুজা, ব্রত ও জল ঢালা, ১৮ ফেব্রুয়ারী কৃষ্ণকান্ত সরকার ও সঞ্চয় সরকারের পরিবেশনায় কবি গান, ১৯ ফেব্রুয়ারী মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ধর্মীয় আলোচনার মধ্যে দিয়ে ৩দিনব্যাপী বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

 

অলংকারপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রিড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার জঙ্গল ইউনিয়নের অলংকারপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২দিনব্যাপী বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

অলংকারপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি তমিজ উদ্দিন বিশ্বাসের সভাপতিত্বে ১৮ ফেব্রুয়ারী বার্ষিক ক্রিড়া ও ১৯ ফেব্রুয়ারী মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে ২দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এসময় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।

 

জমি নিয়ে বিরোধে স্বামী-স্ত্রীকে মারপিট
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের রায়পুর গ্রামে জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে বৃহস্পতিবার সকালে স্বামী-স্ত্রীকে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। আহতরা হলেন, রায়পুর গ্রামের নারদ সরকারের ছেলে নয়ন সরকার (২৩) ও তার স্ত্রী গৌরি সরকার (২০)। আহতদেরকে বালিয়াকান্দি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নয়ন সরকার জানায়, তার বাড়ীর ১১ শতাংশ জমি দানপত্র করে দেয় দাদু। এ জমিকে কেন্দ্র করে তার বাবা নারদ সরকার, ভাই নগেন সরকার, জয় সরকার দু,দফা মারপিট করে ও তার কাছ থেকে সাদা স্ট্যাাম্পে স্বাক্ষর করে নেয়। বিষয়টি নিয়ে সাবরেজিষ্ট্রি অফিসে আবেদন ও বালিয়াকান্দি থানায় জিডি করে। ওই জমির অংশ তাদের নামে লিখে না দেওয়ায় বৃহস্পতিবার কথাকাটাকাটির সুত্রধরে পুনরায় মারপিট শুরু করে। তাদের আতœচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে আহত অবস্থায় স্বামী-স্ত্রীকে উদ্ধার করে বালিয়াকান্দি হাসপাতালে ভর্তি করে।

বালিয়াকান্দির ৫টি নদী নাব্যতা হারিয়ে ধু-ধু বালু চর রাজবাড়ী প্রতিনিধি ঃ ফারাক্কার হিংস্র ছোবলে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার এক সময়ের প্রবাহমান প্রমত্তা গড়াই, চন্দনা, হড়াই, চত্রা ও পুষস্বলী নদী এখন নাব্যতা হারিয়ে ধু ধু বালুচরে পরিণত হয়েছে। প্রতিবেশী দেশের ইচ্ছামত পানি প্রত্যাহার, জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব আর অবৈধ দখল ও ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের মহোৎসবের কারণে দিন দিন গ্রাস করছে এই পাঁচটি নদী। এখন নদীগুলো শুধুই ইতিহাসে পরিনত হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গড়াই নদীতে মাইলের পর মাইল জেগে উঠেছে বিশাল বালুচর। নদীতে নেই কোনো স্রোত, নেই কোনো গভীরতা। অনেক জায়গায় নদীগুলোর বুক দিয়ে বয়ে চলছে বালুবোঝাই ট্রাক ও ট্রলি। অনেক কৃষক আবার জেগে ওঠা চরে ইরি-বোরো ধান রোপণ করছে। শুধু দেখা মেলেনি নদীতে মাছ ধরার সারিসারি নৌকা ও জেলেদের জাল। নদীগুলো মরে যাওয়ায় আজ এ অঞ্চলের কৃষি, বাণিজ্য, মৎস্য সম্পদ ও পরিবেশ বিপন্ন হয়েছে। হারিয়ে গেছে দেশীয় প্রজাতির অর্ধশতাধিক মাছ। এসব নদীর বুকে জেগে ওঠা চরের কারণ হিসেবে এলাকাবাসী আন্তর্জাতিক নদীগুলোর সুষ্ঠু পানিবণ্টন ব্যবস্থাপনা না থাকা এবং ফারাক্কা বাঁধের নেতিবাচক প্রভাবকেই দায়ী করছেন।

১৯৭৫ সালের ২১ এপ্রিল ভারত ফারাক্কা ব্যারেজ চালু করার পর এই নদীগুলোর মরণদশা শুরু হয়েছে । নদী আছে, পানি নেই। প্রতি বছর বালু জমতে জমতে এখন পুরো গড়াই বিশাল বালুচরে পরিণত হয়েছে। এবারের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। বিগত বছরগুলোয় গড়াই নদীতে একটা ক্ষীণ স্রোতধারা থাকলেও এবার পানি কমে যাওয়ার আগেই তা নেই। এসব নদী বিল কিংবা খালে পরিণত হয়েছে। ফলে এ অঞ্চলের পরিবেশ এবং কৃষক ও জেলেদের জীবন-জীবিকায় নেমে এসেছে ভয়াবহ বিপর্যয়। এ অঞ্চলের মানুষের জীবনে অভিশাপ বয়ে এনেছে মরণবাঁধ ফারাক্কা। প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের বিমাতাসুলভ আচরণের কারণে ফারাক্কা ব্যারেজ এ অঞ্চলের মানুষের জন্য রীতিমত অভিশাপ বয়ে এনেছে। একতরফা পানি প্রত্যাহার করে ভারত তাদের বন্দর, কৃষি, সেচ, বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা সচল রাখলেও এদেশের কৃষি, বন্দর, নৌ-যোগাযোগ, পরিবেশ ও জীবন-জীবিকায় নেমে এসেছে ভয়াবহ বিপর্যয়। বালিয়াকান্দির এ নদীগুলোর উৎসমুখ পদ্মা নদীতে হওয়ায় আজ বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে পদ্মার সঙ্গে সঙ্গে এর শাখা নদী গড়াই, চন্দনা, হড়াই, চত্রা ও পুষস্বলী নদী হারিয়ে যাচ্ছে। ফলে এ অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতি মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়েছে। বর্ষাকালে এসব নদীতে কিছুদিনের জন্য পানি থাকলেও প্রায় সারা বছরই থাকে পানিশূন্য। আর এসব নদী মরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দু’পাশ দখল করে নিয়েছে একশ্রেণির দখলবাজরা।

মহাজোট সরকার চন্দনা-বারাশিয়া প্রকল্পের মাধ্যমে খনন কাজ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন করেছে। তবে পানির উৎসমুখ বন্ধ থাকার কারনে এর সুফল পাচ্ছে না কৃষকরা। তাদের দাবী পানি প্রবাহের ব্যবস্থা করা। একসময় চন্দনা নদী দিয়ে নৌকা যোগে ব্যবসা বানিজ্যের প্রসার ঘটে। তবে কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে নৌকার যোগাযোগ।

পল্লী বন্ধু সংস্থার পরিচালক রুহুল আমিন বুলু জানান, নদীতে পানি না থাকার কারণে ভুগর্ভের পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। ফলে নদীর তীরবর্তী এলাকার টিউবয়েল গুলোতে পানি উত্তোলন করা দুষ্কর হয়ে পড়ে। এতে মানুষ নানা ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার হাবাসপুরের ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে সরকার গঙ্গা ব্যারেজ নামে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এ প্রকল্পটি চালু হলেই পদ্মার সঙ্গে সম্পৃক্ত সব শাখা নদী ফিরে পাবে তাদের অতীত যৌবন।

গঙ্গা ব্যারেজ প্রকল্পের একজন কর্মকর্তা জানান, এই প্রকল্পটি চালু হলে পদ্মাসহ এর শাখা নদীগুলো আবার পানিতে ভরে উঠবে এবং মৃত নদীগুলো আবার পুনরুজ্জীবিত হবে। এ অঞ্চলের মৎস্য ও কৃষি অর্থনীতিতে ব্যাপক উন্নয়ন হবে।



মন্তব্য চালু নেই