স্কুলে সালোয়ার-কামিজ নিষিদ্ধ!
ভারতের মেদিনীপুরের এক স্কুলে সালোয়ার-কামিজ নিষিদ্ধ করেছে স্কুল কমিটি। স্কুলের শিক্ষিকাদের এ বিষয়ে হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে। এমনকি সালোয়ার-কামিজ পরে স্কুলে না আসার জন্য স্কুল গেটের সামনে ব্যানারও টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নার এক বালিকা বিদ্যালয়ে এমন ঘটনায় রীতিমত স্তম্ভিত নাগরিক সমাজ।
ময়নার পরমানন্দপুর গ্রামের ‘বিবেকানন্দ কন্যা বিদ্যাপীঠ’-এর ৩৫ জন শিক্ষিকার মধ্যে দু’জন মৌসুমী পাত্র ও জানিসার খাতুন সালোয়ার কামিজ পরে স্কুলে আসেন। ভূগোলের শিক্ষিকা মৌসুমী দেবীর বাড়ি মেদিনীপুর শহরে, বিজ্ঞানের শিক্ষিকা জানিসার থাকেন পাঁশকুড়ায়। শিক্ষিকারা জানান, যাতায়াতের সুবিধার জন্যই তারা সালোয়ার-কামিজ পরেন। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার-ব্যানার দেখার পর থেকে তারা আতঙ্কে রয়েছেন। কারণ ব্যানারে লেখা ছিল ‘এটা যদি নিছক অনুরোধ ভাবেন তা হলে গ্রামবাসীরা বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য থাকবে এবং তা ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে।’
কারা ঘটাল এই কাণ্ড?
স্কুল সূত্রের খবর, গত এপ্রিলে তৃণমূল পরিচালিত স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক তাপস মণ্ডল ও এক সদস্য রবীন্দ্রনাথ সামন্ত বৈঠক ডেকে শিক্ষিকাদের সালোয়ার-কামিজ পরে আসতে বারণ করেছিলেন। তারা তখনই ঘোষণা করেছিলেন, এর পরে গ্রামবাসী কিছু করলে তার দায় তারা নেবেন না। এর পরে গরমের ছুটি পড়ে যায়। ২৬ জুন স্কুল খোলার পরে ওই দুই শিক্ষিকা সালোয়ার-কামিজ পরেই আসছিলেন। গত বুধবার তারা দেখেন, স্কুল গেটের উল্টো দিকে ওই ব্যানার টাঙানো হয়েছে। জানিসার ও মৌসুমী দেবী এই প্রসঙ্গে জানান, এর পরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকার মাধ্যমে পরিচালন সমিতির সম্পাদককে সমস্যা-সমাধানের জন্য একটি আবেদনপত্র জমা দিতে গিয়েছিলেন তারা। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা শান্তি মাইতি ‘স্কুলের বাইরের বিষয়’ বলে আবেদনপত্র নিতে চাননি। ফোন করা হলে শান্তি দেবীর দাবি, ‘ওই দুই শিক্ষিকাকেও শাড়ি পরে আসতে বলা হয়েছিল। ওঁরা মানেননি। আর আবেদনপত্র দিতে এসে ওঁরা আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।’
শিক্ষিকাদের সালোয়ার কামিজ পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসা নিয়ে এর আগেও রাজ্যে বিতর্ক হয়েছে। বিষয়টি গড়িয়েছে হাইকোর্টে। তবে আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, স্কুলে কী পোশাক পরে শিক্ষিকারা আসবেন, তা একেবারেই ব্যক্তিগত রুচির ব্যাপার। এর পরেও ছবিটা যে বদলায়নি ময়নার ঘটনাই তার প্রমাণ।
মন্তব্য চালু নেই