অবশেষে নুয়ে এলো গ্রিস, জার্মানির ঋণপ্রদান-সময়সূচি বৃদ্ধির উদ্যোগ
অবেশেষে নিজেদের ভাষ্যই ওপরে রাখতে যাচ্ছে জার্মানি। গ্রিসকে আগামী চার মাসের জন্যে আরও ঋণ দেয়ার অনুকূলে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে চাইছে দেশটি। এ বিষয়ক একটি প্রস্তাবনার ওপর ভোট গ্রহণ শেষে সিদ্ধান্ত নেবে আজ জার্মান পার্লামেন্ট। ইউরোজোনের অনেক সদস্যই জার্মানির এ উদ্যোগকে ‘কঠোর আচরণ’ বলে সমালোচনা করেছেন। জার্মান দাতাগোষ্ঠীর অনেকে ইতোমধ্যেই এ প্রস্তাবনার প্রতি সায় প্রদান করেছেন। এ ঘটনায় জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, গ্রিক প্রশাসন কি তবে সংকোচনবিরোধী/ঋণবিরোধী অবস্থান থেকে থেকে সরে আসছে?
ইউরোজোনের অর্থমন্ত্রী গত মঙ্গলবার গ্রিসের নতুন প্রস্তাবনাপত্র অনুমোদন করেন। তার সাপেক্ষেই জার্মানির পক্ষ থেকে এ নতুন উদ্যোগে ব্রত হওয়া সম্ভব হচ্ছে। জানা যায়, গ্রিসের কাছে জার্মানির প্রাপ্য ২৪ হাজার কোটি ইউরো। আসছে ২৮ ফেব্রুয়ারি তা পরিশোধ করার শেষ সময়। কিন্তু দেশটি প্রকৃতই তা পরিশোধে সমর্থ নয়। এ অবস্থায় গ্রিসের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নিরুপায় মনোভাব রাজধানী এথেন্সে একটি সাধারণ মানুষকে ক্ষুব্ধ করেছে। বৃহস্পতিবার নাগরিক-পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। বিক্ষোভের কিছুক্ষণ পরই জার্মানির এ সিদ্ধান্তের কথা জানা যায়।
জার্মানির পার্লামেন্ট সদস্যদের অনেকেই আশু সিদ্ধান্তের কার্যকারিতার ব্যাপারে সন্দিহান। তারপরও খোদ অ্যাঙ্গেলা মের্কেলের বলয় সিডিইউ/ সিএসইউ যখন এর পক্ষে, তখন এটিই চূড়ান্ত হওয়া হয়তো সময়ের ব্যাপার মাত্র। জানা গেছে, মধ্যমপন্থী অ্যাঙ্গেলা-অনুসারী দল ছাড়াও মধ্য-বামপন্থী সমাজতান্ত্রিক গণতন্ত্রপন্থী দলসহ নবীন সাংসদদের অনেকে বেনামে আরও ঋণ দেয়ার পক্ষে মত ভোট দিয়েছেন।
গ্রিসের নাগরিকেরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিই সিপ্রাস তার সাবেক নীতি থেকে সরে এসেছেন। একই অভিযোগ তুলেছেন দলের অনেক সিনিয়র নেতাকর্মীও। বিশেষ করে অতিবামপন্থা অনুসারীরা সিপ্রাসকে এমন ‘আপোষকামী নীতির’ কারণে দুষছেন। সিরিজা পার্টির ভেতর এ নিয়ে ব্যাপক বিসংবাদ তৈরি হয়েছে। রাজপথে সাধারণ বিক্ষোভকারীরা পুলিশের দিকে পাথর ও পেট্রোল বোমা ছুড়েছেন এবং একাধিক যানবাহন জ্বালিয়ে দিয়েছেন।
সংকোচননীতি ও ঋণবিরোধী সিরিজা পার্টির প্রায় মাসব্যাপী বৈঠক-প্রচারণার পরও ইউরোজোনের সঙ্গে কোনো স্থায়ী সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব হয়নি। শোনা যাচ্ছিল ইউরোজোনের সঙ্গে মিতের অমিল ঘটলে পশ্চিমা শক্তির দ্বারস্থ হবে গ্রিস। ও পথ মাড়ানোর পূর্বেই জার্মানির ঋণদান সময়সীমা বাড়ানোর ইস্যুতে, জানুয়ারিতে গ্রিসের ক্ষমতায় আসা সিরিজা পার্টি পরোক্ষভাবে সম্মত হলে, প্রতিশ্রুতিপ্রাপ্ত নাগরিকদের ক্ষেপে ওঠা খুব স্বাভাবিক বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্লেষকরা।
মন্তব্য চালু নেই