সারদার মালিক সুদীপ্তর সঙ্গে বৈঠকের কথা ‘স্বীকার’ মুকুলের

সারদার মালিক সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে প্রথমবার মুখ খুললেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক মুকুল রায়। সেইসঙ্গে যে বৈঠক ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে চর্চা তুঙ্গে সেই বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা স্বীকার করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।

তিনি বলেছেন, ‘সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে দুবার বৈঠক হয়েছিল।’কিন্তু, কলকাতা থেকে পালানোর পর সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে তাঁর কোনও বৈঠক হয়নি বলেই দাবি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের।

বর্তমানে দিল্লিতে রয়েছেন মুকুল। দিল্লি পৌঁছে গিয়েছেন তাঁর বিধায়ক-পুত্র শুভ্রাংশুও। বাবা-ছেলে দু’জনে মিলে এদিন পুজোও দেন। মুকুলের বক্তব্য, তিনি সোজাসাপটা লোক, তাই অসুস্থ বলে সিবিআইকে এড়াবেন, এমনটা নয়। তিনি কলকাতায় ফিরে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের সঙ্গে দেখা করবেন। মুকুলের এই বক্তব্যের পেছনে মদন মিত্রকে খোঁচা রয়েছে কি না, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তুঙ্গে। কারণ, অসুস্থতার অজুহাতে বারবার সিবিআইকে এড়ানোর এবং গ্রেফতার হওয়ার পরও অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে জেলযাত্রা এড়ানোর অভিযোগ উঠেছে মদন মিত্রর বিরুদ্ধে। সেই প্রেক্ষিতে মুকুল রায়ের বক্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। এদিকে, মুকুল রায় এদিন ফের দাবি করেন, তিনি কখনও কোনও অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকেননি।

ডেলোর বৈঠকে, সুদীপ্ত সেন, মুকুল রায়ের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন বলেও দাবি কুণাল ঘোষের। মুকুল রায় বৈঠকের কথা স্বীকার করলেও, এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কিন্তু মুখে কুলুপ। যা রহস্য আরও বাড়িয়েছে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের। এদিকে, মৌখিকভাবে মুকুল রায় প্রথমবার বৈঠকের কথা স্বীকার করলেও, জেরার মুখে যদি অস্বীকার করেন, তাহলে তার জন্য রণকৌশলও ঠিক করে রেখেছে সিবিআই। সিবিআই সূত্রে খবর, জেরায় মুকুল রায়কে প্রশ্ন করা হতে পারে,ডেলোর বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছিল?

মুকুল রায় যদি বলেন, তিনি ওই বৈঠকে ছিলেন না বা ওই বৈঠক সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না, তাহলে তাঁর সামনে পেশ করা হবে, তাঁরই মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন সংক্রান্ত তথ্য। সূত্রের খবর, যাতে স্পষ্ট দেখা গিয়েছে, বৈঠকের সময় ডেলোতেই ছিলেন মুকুল রায়। এরপরও যদি মুকুল রায় বৈঠকে থাকার কথা স্বীকার না করেন, তাহলে তাঁর সামনে পেশ করা হতে পারে, বিমান বা ট্রেনের ট্রাভেল চার্ট।

যাতে দেখা গিয়েছে কোন সময়ে, কোন পথে কালিম্পং গিয়েছিলেন মুকুল রায়। কত দিন ছিলেন এবং সেখান থেকে আর কোন কোন জায়গায় গিয়েছিলেন তিনি।  রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, সারদা কেলেঙ্কারির তদন্ত ক্রমশ কান ছেড়ে মাথার দিকে এগোচ্ছে। সাংসদ, মন্ত্রী হাজতে যাওয়ার পর, এবার সিবিআইয়ের তলব সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে। সিবিআই সূত্রে খবর, মুকুল রায়কে সামনে রেখে এবার তারা আরও বড় মাথার বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করতে চাইছে।



মন্তব্য চালু নেই