লাইফ সাপোর্টে সেই কলেজ ছাত্রী, সিলেটে প্রতিবাদ-বিক্ষােভ
সিলেটে কথিত প্রেমিকের কোপে আহত সিলেট সরকারী মহিলা কলেজের ছাত্রীকে খাদিজা আক্তার নার্গিসকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। সোমবার বিকেলে এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে কুপিয়ে জখম করে বদরুল আলম নামের শাহজালাল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র।
বদরুল শাবি ছাত্রলীগের সহসম্পাদক। এ ঘটনার পর পুলিশ কথিত প্রেমিক বদরুল ইসলামকে আটক করেছে।
নার্গিসকে হামলার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। আর এ ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সোমবারই সিলেট-তামাবিল সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এমসি কলেজের শিক্ষার্থীরা আজ সকাল ১১টায় এ ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে। সেখানে এখনো তাদের প্রতিবাদ চলেছ।
ঘটনার পর নার্গিসকে প্রথমে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মধ্যরাত পর্যন্ত সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। অস্ত্রোপচার হলেও তার অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় আজ (মঙ্গলবার) ভোরে অ্যাম্বুলেন্সযোগে তাকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে নার্গিসকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
নার্গিসের স্বজনরা জানান, তার মাথায় ৫-৬টি কোপ দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকরা কোনো আশ্বাস দিতে পারেননি। তারা বলেছেন পরিস্থিতি ভাল না। কোপে মারাত্মক জখম হয়েছে।
ঘটনার পর এমসি কলেজের শিক্ষার্থীরা হামলাকারী বদরুলকে গনপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। গণপিটুনিতে আহত বদরুলকেও ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানায়, সিলেট সদর উপজেলার মোগলগাঁও ইউনিয়নের হাউসা গ্রামের মাসুক মিয়ার মেয়ে খাদিজা আক্তার নার্গিসের বাড়িতে লজিং থাকত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) অর্থনীতি বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র ও শাবি ছাত্রলীগের সহসম্পাদক বদরুল আলম। সেখানে থাকাকালে মেয়েটির কাছে প্রেম নিবেদন করে সে। নার্গিস বারবার প্রত্যাখ্যান করে।
সোমবার বিকেলে পরীক্ষা দিয়ে বের হওয়ার পর এমসি কলেজ মসজিদের পেছনে শিক্ষার্থীদের সামনে দা দিয়ে কোপাতে থাকে বদরুল। প্রত্যক্ষদর্শী লোকজন নার্গিসের চিৎকার শুনে এগিয়ে যায়। তারা নার্গিসকে সংকটাপন্ন অবস্থায় উদ্ধার করে এবং বদরুলকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দেয়।
এ ব্যাপারে এমসি কলেজের মনোবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর সালেহ আহমদ বলেন, ‘কিছু ছাত্র এসে একটি মেয়েকে কুপিয়ে দুই টুকরো করে ফেলেছে বলে আমাদের জানায়। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ এসে হামলাকারী যুবককে জনতার কবল থেকে উদ্ধার করে। আমরা ওই মেয়েকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠাই।’
প্রত্যক্ষদর্শী ইমরান কবির বলেন, ‘একটি মেয়েকে কোপাতে দেখে এগিয়ে যাই। কলেজ কর্তৃপক্ষ ও অন্যান্যের সহায়তায় আমরা মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। চিকিৎকরা বলেছেন, তার রক্তের প্রয়োজন। আমরা কিছু রক্তের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। তার অবস্থা সংকটাপন্ন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।’
প্রেম সংক্রান্ত বিরোধের জেরে খাদিজার ওপর হামলা হতে পারে বলে জানিয়েছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (উত্তর) জিদান আল মুসা। তিনি জানান, জনতার সহায়তায় হামলাকারীকে আটক করা হয়েছে। মেয়ের চিকিৎসার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষসহ সবাই চেষ্টা করছেন।
মন্তব্য চালু নেই