আতিয়া মহলের সেই মিনারা রোজিনা কোথায়

‘জঙ্গি আস্তানা’ আতিয়া মহলের চারতলার একটি ফ্ল্যাটে মেয়ে রোজিনাকে নিয়ে থাকতেন মিনারা বেগম। মিনারা ছিলেন আতিয়া মহলের তত্ত্বাবধায়ক। জঙ্গিরা মিনারার সঙ্গে আলাপ করেই আতিয়া মহলের নিচতলার একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিল। জঙ্গিদের ফ্ল্যাটে ছিল মিনারার যাতায়াত। এসব বিষয় নিয়ে পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে তাদের জিজ্ঞাসাবাদও করেছে। কিন্তু বর্তমানে এ দু’জনের হদিস মিলছে না। আতিয়া মহলের মালিক কিংবা পুলিশ, কেউই নির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না মিনারা ও রোজিনা কোথায় আছেন।

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার রিফাত আলীর স্ত্রী মিনারা বেগম। তার জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ৯১৯৬২২৫৩৮২৭৪৩। দীর্ঘদিন ধরে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ীর পাঠানপাড়ার আতিয়া মহলের চারতলার একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন তিনি। সঙ্গে তার মেয়ে রোজিনা বেগমও থাকতেন।

আতিয়া মহলের মালিক সাবেক সরকারি কর্মকর্তা উস্তার আলী জানান, মিনারা বেগম তার (উস্তার) বাবা আসদ্দর আলীর বন্ধুর স্ত্রী। তার বাবা মারা যাওয়ার আগে মিনারার পরিবারকে দেখে রাখার জন্য বলে গেছেন। এর পর থেকে মিনারার পরিবারকে সাহায্য-সহযোগিতা করে আসছেন উস্তার আলী। এ সুবাদেই আতিয়া মহলে তাদের থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন তিনি। মিনারা বেগমকে আতিয়া মহলের তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব দেন উস্তার আলী। ভাড়াটেদের কাছ থেকে ভাড়া আদায় ও পুরো ভবন দেখাশোনার দায়িত্ব ছিল মিনারার। আতিয়া মহলে নিহত কথিত কাওসার, মর্জিনা ও আরও দুই পুরুষ ভবনের নিচতলার একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলেন মিনারা বেগমের সঙ্গে আলাপ করে।

সূত্র জানায়, জঙ্গিদের ফ্ল্যাটে যাতায়াত ছিল মিনারার। তাদের বাজার করে দেওয়ার কাজও করতেন তিনি। আতিয়া মহলে জঙ্গি আস্তানা চিহ্নিত হওয়ার কয়েক দিন আগে মর্জিনাকে নিয়ে হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর দরগায় যান মিনারা বেগম—এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয়রা। আতিয়া মহলে জঙ্গিবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে মিনারা ও তার মেয়ে রোজিনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। কিন্তু তাদের কাছ থেকে কী তথ্য পাওয়া গেছে তা ‘তদন্তের স্বার্থে’ প্রকাশ করতে রাজি নয় পুলিশ। তাদের দাবি, মিনারা ও রোজিনা আতিয়া মহলের মালিক উস্তার আলীর জিম্মায় রয়েছেন। তবে উস্তার আলী তা অস্বীকার করছেন।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জেদান আল মুসা বলেন, ‘দুই মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর বাড়ির মালিকের জিম্মায় দেওয়া হয়। তারা এখন বাড়ির মালিকের জিম্মায় থাকার কথা। ’

অন্যদিকে উস্তার আলী বলেন, ‘এরা আমার জিম্মায় নেই। ’ জঙ্গিদের সঙ্গে সম্পর্ক বা বাজার করে দেওয়ায় মিনারার সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেন তিনি। মিনারা ও রোজিনার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি জানি, এরা খুবই ভালো। জঙ্গিদের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক থাকার কোনো অবকাশ নেই। বর্তমানে তারা কোথায় আছে তা আমি জানি না। ’



মন্তব্য চালু নেই