বিশ্বের সবচাইতে উঁচু টাওয়ার নির্মিত হতে যাচ্ছে সৌদি আরবে

প্রায় সবকিছুতেই সবচেয়ে বৃহৎ, সবচেয়ে উঁচু এবং সবচেয়ে ব্যয়বহুল হিসেবে সবার উপরে থাকার দুবাইয়ের যে দীর্ঘ দিনের অর্জন খুব শীঘ্রই তাতে ভাগ বসাতে যাচ্ছে প্রতিবেশী দেশ সৌদি আরব।

সম্ভবত আগামী সপ্তাহেই অর্থাৎ এপ্রিলের শেষের দিকেই সৌদি আরবের জেদ্দা শহরে ‘কিনডম টাওয়ার’ নির্মাণ কাজ শুরু করতে যাচ্ছে। বর্তমানে বিশ্বের সর্বোচ্চ টাওয়ার দুবাইয়ের দৃষ্টনন্দন ‘বুরজ খলিফা’র থেকেও উঁচু হবে এই টাওয়ার। আর তাহলেই দুবাইয়ের সর্বোচ্চ টাওয়ার তার গিনিস রেকর্ড থেকে পিছে পড়ে যাবে, শোভা পাবে কিংডম টাওয়ারের নাম।

‘কিংডম টাওয়ার’ বা ‘বুরজ আল মামলাখ’ প্রাথমিক ভাবে ১.৬ কি.মি (১ মাইল) উঁচু করে নির্মাণ করার পরিকল্পনা থাকলেও নির্মাণাধীন স্থান ঐ উচ্চতায় টাওয়ার নির্মাণ উপযোগী সাব্যস্ত না হওয়ায় হয়েছে একটু সমস্যা।

টাওয়ার নির্মাণ কাজের কনসালটেন্ট কোম্পানী এডভান্সড কনসট্রাকসন টেকনলজি সার্ভিস সম্প্রতি নিশ্চিত করেছে টাওয়ারের উচ্চতা হবে ১ কি. মি (৩,২৮০ ফুট)। অন্যদিকে যেখানে বুরজ খলিফার উচ্চতা হলো ২,৭১৬ ফুট ( ৮২৭ মিটার)। বুরজ খলিফার থেকে ১৭৩ মিটার বেশি উচ্চতা সহজেই ‘কিংডম টাওয়ার’ কে এনে দেবে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু টাওয়ারের খেতাব।

সৌদি গেজেটের ভাষ্যমতে কিংডম টাওয়ারের নির্মাণ ব্যয় হবে ১.২৩ বিলিয়ন ইউএস ডলার। বিল্ডিংটিতে থাকবে ২০০ তলা যেখান থেকে লোহিত সাগর স্পষ্ট দৃষ্টিগোচর হবে। বিল্ডিংটির একটি অন্যতম বিষয় হচ্ছে এর ১৫৭ তম তলায় একটি ৯৮ ফুট খোলা বারান্দা থাকবে। বিল্ডিংটি নির্মাণে ৫.৬ মিলিয়ন বর্গ ফুট কনক্রিট এবং ৮০,০০০ টন ষ্টিলের প্রয়োজন পড়বে।

সাগর তীরবর্তী এলাকায় এত উঁচু একটি বিল্ডিং নির্মাণ খুব সহজ নয় কারণ নোনাজল খুব সহজেই একে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে। ২০০ ফুট( ৬০ মিটার) গভীর ভিত তৈরী করা হবে এবং তা এমন ভাবে করা হবে যাতে এই ভিত নিকটবর্তী সাগরের নোনাপানির ধকল সহ্য করতে পারে। সে কারণেই এডভান্সড কনসট্রাকশন টেকনলজি সার্ভিস বিভিন্ন ধরণের কনক্রিটের সহ্য ক্ষমতা পরীক্ষা নিরীক্ষা করছে।

এত উচ্চতায় বিল্ডিং নির্মাণের ক্ষেত্রে বাতাস আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান বিষয়। বাতাসের প্রতিকূলতা থেকে বাঁচার জন্য টাওয়ারের আকার একটু পরপরই পরিবর্তন করে নির্মাণ করা হবে। একদম নিচের দিকের আকৃতি হবে ত্রিকোণাকার এবং একদম উপরের অংশ থাকবে সূচালো। কিছু তলা পরপরই যেহেতু এর আকার পরিবর্তন করা হবে, সেহেতু বাতাসের চাপ বিল্ডিং ঘিরে ছড়িয়ে যাবে এবং অন্যান্য বিল্ডিংয়ের সলিড ব্লকের মত সে চাপ চরম আকার নেবে না।

উপরের দিকের তলাগুলোতে কনক্রিট সরবরাহ করা আরও একটি সমস্যাজনক বিষয়। সম্ভবত প্রকৌশলীরা বুরজ খলিফা নির্মাণের পদ্ধতিই এখানে প্রয়োগ করবে। ৬ মিলিয়ন কিউবিক ফুট এর একটি কংক্রিট একটি কেক পাম্পের মাধ্যমে ঠেলে দেয়া হবে। সাধারণ এই কাজটি করা হবে রাতে, যখন তাপমাত্রা যথেষ্ট কম থাকবে এবং কাজটি সুচারু ভাবে করা যাবে।

কাউন্সিল অব টল বিল্ডিং এর পরিচালক, সান দাই কিম বলেন, যদিও এটি খুবই উচ্চাভিলাষী একটি নির্মাণ কাজ তথাপি ১কি. মি. উচ্চতার কিংডম টাওয়ার নির্মাণ অসম্ভব নয় মোটেও।



মন্তব্য চালু নেই