তনু হত্যাকাণ্ড জাতীয় কলঙ্ক: পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর আহবান প্রবাসী বিএনপির

সোহাগী জাহান তনু। দুভাইয়ের একমাত্র বোন। বাবা-মায়ের চোঁখের মনি। সুমিষ্ট ভাষা, নমনীয় ব্যবহার আর সারাক্ষণ ঠোঁটের কোনে এক চিলতে হাসিতে মাতিয়ে রাখতো পুরো বাড়ি। তার চারিত্রিক মাধুর্য ও পর্দানশীলতায় মুগ্ধ আশপাশের মানুষসহ সব আত্মীয়-স্বজন। ছোটদের সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠার আদর্শও ছিল সে। কিন্তু তাকে বাঁচাতে দিল না কলুষিত সমাজের নর্দমার কিট-পাপিষ্ঠ ধর্ষকচক্র। শকুনের দল শুধু তনুকে ধর্ষণ করে তার শরীরে ক্ষত সৃষ্টি করে হত্যা করেছে বিষয়টি এমন নয়, তারা আমার স্বাধীন বাংলা মাকে বিবস্ত্র করেছে। লাল সবুজের পতাকা খাবলে-খাবলে ছিড়েছে। রক্তে রঞ্জিত করেছে আমার সোনার মাটি। যারা আমার মায়ের সঙ্গে এমন আচরণ করেছে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে এমন শাস্তি দেয়া হোক যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ ধর্ষণের কথা চিন্তাও করতে না পারে।

নিরাপত্তার চাদরে মোড়া খোদ ক্যান্টনমেন্ট এরিয়ায়র মধ্যে এমন জঘন্য হত্যাকাণ্ড হলেও সরকারের পুলিশ প্রশাসন সম্পূর্ণ নিরব। অবৈধ সরকার প্রধান শেখ হাসিনাকে একটা কথাও বলতে শোনা যায়নি। সুশিল সমাজ, বুদ্ধিজীবী মহল মুখে কুলুপ এটে বসে আছে। সরকারের আজ্ঞাবাহ ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ায় এসংক্রান্ত কোনো কার্যকরী রিপোর্ট প্রচার ও প্রকাশ হতে দেখিনি। অথচ এই একটি মাত্র ঘটনার দায় নিয়ে হাসিনার পদত্যাগ করা উচিত ছিল। কিন্তু এমন হজার ঘটনা ঘটলেও তিনি তা করবেন না। এজন্য জাতিকে জাঁগতে হবে। এমন অন্যায়ের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সাধারণ মানুষের ডাকে অন্তত একদিন হরতাল পালন করতে হবে। যেখানে দল, মত নির্বিশেষে সব মানুষের সতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ থাকবে। প্রতিবাদে দেশের সবখানে রিকশা ওয়ালা থেকে শুরু করে পরিবহন চালক, মুটে-মজুর থেকে অফিসের বড় কর্মকর্তা সবায় অন্তত একদিন কাজ বন্ধ করে প্রতিবাদ জানাবে। তবেই প্রশাসন প্রকৃত অপরাধীদের ধরতে বাধ্য হবে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত বিএনপির একজন সেবক হিসেবে দেশ নেত্রী, গণতন্ত্রের জননী বেগম খালেদা জিয়াকে আন্দোলনের ডাক দেয়ার আহবান জানাচ্ছি। কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রতি অনুরোধ থাকবে অসহায় পরিবারটির পাশে থেকে সব ধরণের সহায়তার করার। দূর প্রবাস থেকে তরুণ প্রজন্মকে জেগে ওঠার আহবান থাকলো । এভাবে চুপকরে ঘরে বসে থাকলে একদিন আমাদের মা-বোনেরও একই অবস্থা হবে।

গত রোববার (২০ মার্চ) রাতে ময়নামতি সেনানিবাসের অলিপুর এলাকায় একটি কালভার্টের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় তনুর লাশ। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের (সম্মান) শিক্ষার্থী সোহাগী জাহান তনুকে (১৯) ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। সে ওই কলেজেরই নাট্য সংগঠন ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটারের (ভিসিটি) সদস্য ছিল।

মঞ্চের ‘আঁধারি আলো’ই মানুষের মনে জ্বালায় মনুষত্বের আলো। সেই আলোয় নিজেকে আলোকিত করতেই চেয়েছিল তনু, সোহাগী জাহান তনু। নাট্যচর্চায় পরিশুদ্ধ মানুষ হতে চেয়েছিল সে। কিন্তু কিছু নরপশুর মনুষত্বের অভাবে তাকে চলে যেতে হল দুনিয়া ছেড়ে। তার স্বপ্নের নীল আকাশে আক্রোশের নীলে ছেয়ে গেল। সেই উড়ে বেড়ানো পেঁজা তুলার মতো সাদা মেঘগুলো ক্রমেই কালো থেকে কালো হয়ে হারিয়ে গেল নিমিষেই। অথচ আমরা কিছুই করতে পারলাম না। আমার আহবানে সাড়াদিয় জাতি জেগে উঠলে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে নতুন সমাজ বির্নিমান করা সম্ভব হবে। তখন হয়তো আর কোনো সোহাগীকে এভাবে অকালে দুনিয়া ছেড়ে চলে যেতে হবে না।

এম এ তাহের
সাধারণ সম্পাদক,
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)
ফ্রান্স শাখা



মন্তব্য চালু নেই