প্রার্থীদের অভিযোগ ওসির বিরুদ্ধে

পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থীতা চূড়ান্ত হওয়ার পর গত তিন দিনে বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকার এক ডজন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা।

এসব প্রার্থীর বেশির ভাগই বিরোধী দল বিএনপি সমর্থিত বলে ইসির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তবে প্রার্থীদের দেওয়া এসব অভিযোগের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রার্থীদের দেয়া অভিযোগ যাচাই করে ব্যবস্থা নেবে সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠান।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, ইতোমধ্যে যে সব অভিযোগ এসেছে তা তাৎক্ষনিকভাবে আমলে নিয়ে অভিযোগগুলো রিটার্নিং কর্মকর্তাদের মাধ্যমে যাচাই করছে কমিশন। প্রার্থী এবং রিটার্নিং কর্মকর্তাদের প্রতিবেদন অভিন্ন হলে সংশ্লিষ্ট ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তারা জানান, এসব অভিযোগের মধ্যে নির্বাচনী প্রচারে হয়রানিসহ সরকার দলীয় প্রার্থীদের অনৈতিক সুবিধা দেওয়ার বিষয় রয়েছে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম-সচিব জেসমিন টুলী বলেন, নির্বাচনী প্রচার শুরুর আগে-পরে বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি ও প্রার্থীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ তারা পাচ্ছেন। কিন্তু প্রার্থীদের অভিযোগের আলোকে তাৎক্ষণিক কাউকে শাস্তি প্রদান সঠিক সিদ্ধান্ত বলে তার মনে হয় না। অভিযোগ এলে সেগুলো যাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়া যুক্তিযুক্ত বলে মত দেন তিনি।

নির্বাচন ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয় শাখার উপ-সচিব মো. শামসুল আলম বলেন, নির্বাচনে পক্ষপাতিত্বের কারণে প্রার্থীদের পাশাপাশি উপজেলা চেয়ারম্যানরা কয়েকটি থানার ওসিকে প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছেন। অভিযোগসমূহ নথিভুক্ত করে কমিশনে উত্থাপন করলে পুনরায় তাদের কাছে নথি ফেরত দিয়েছে কমিশন।

সংক্ষুদ্ধ ব্যক্তিদের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাদের দিয়ে যাচাই করে পুনরায় নথি উত্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন তারা বলে জানান এই কর্মকর্তা। এর আগে গত সোমবার নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বলেছিলেন, কোন প্রার্থী কিংবা সংক্ষুদ্ধ যে কোন ব্যক্তি অভিযোগ করলে সত্যতা যাচাই করে ব্যবস্থা নেবে কমিশন।

ইসির কর্মকর্তারা জানান, প্রতিটি নির্বাচনে প্রার্থী কিংবা তাদের পক্ষে কর্মী-সমর্থক প্রতিপক্ষ প্রার্থী কিংবা নির্বাচনী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার জন্য করে থাকেন। দেখা যায়, তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে কমিশন কাউকে প্রত্যাহার কিংবা শাস্তি দেন। পরে জানা যায়, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ছিলেন নির্দোষ।

ইতিমধ্যে সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া থানার ওসির বিরুদ্ধে একজন প্রাথীর অভিযোগের ভিত্তিতে প্রত্যাহার করে নিয়েছে কমিশন। এ ঘটনার পর পরই বেশ কয়েকটি থানার ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে ইসিতে।

যেমন মাদারীপুরের কালকিনি, চাঁদপুরের দক্ষিণ মতলব, নরসিংদীর মাধবদী ও হবিগঞ্জ সদরসহ এক ডজন ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে ইসিতে। এসব অভিযোগ কমিশন রিটার্নিং কর্মকর্তাদের মাধ্যমে যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

অভিযোগকারী এবং রিটার্নিং কর্মকর্তার দেওয়া প্রতিবেদন অভিন্ন হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ফলে প্রাথীদের করা সব অভিযোগ ইসির কাছে এখন থেকে আমলযোগ্য হবে না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

প্রসঙ্গত, ইসির ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী আগামী ৩০ ডিসেম্বর দেশের ২৩৪ পৌরসভায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে।



মন্তব্য চালু নেই