হোয়াইট হাউসে ফুল টাইম থাকতে নারাজ ট্রাম্প!

‘জবটা’ না হয় তার ফুল টাইমের, কিন্তু সেই ‘জব’টা করতে গেলে টানা চার বছর যেখানে থাকতে হয়, সেই হোয়াইট হাউসটাকে তিনি তার পার্ট-টাইম ঠিকানা করতে চান!

মানে, যখন ভাল লাগবে, থাকতে ইচ্ছে করবে, থাকবেন সেখানে, না লাগলে দিব্যি সময় কাটাবেন তার নিজের বিলাসবহুল পেন্টহাউস অ্যাপার্টমেন্টে। ২৪ ক্যারেটের সোনা আর মার্বেলে আদ্যোপান্ত মোড়া তার সেই সাধের অ্যাপার্টমেন্টটি রয়েছে নিউ ইয়র্কের ফিফ্‌থ অ্যাভিনিউয়ের ট্রাম্প টাওয়ারে।

তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভোট-বিজয়ের পর আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ নেননি বলে এখনো তিনি ভাবী মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু এই ‘ভাবী কাল’ কেটে গিয়ে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট হয়ে গেলে আমেরিকার সংবিধান মেনে তাকে সপরিবারে গিয়ে উঠতেই হবে হোয়াইট হাউসে। সেটা ওয়াশিংটনে। কিন্তু ম্যানহাটনে পাকাপাকিভাবে একটা বিলাসবহুল পেন্টহাউস অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে ধনকুবের ট্রাম্পের। সেখানে শখ-আহ্লাদের সুযোগ-সুবিধা অনেক বেশি। আমোদপ্রমোদের হরেক আয়োজন। সেই ‘শখ’ ছেড়েছুড়ে অন্তত চার বছরের জন্য হলেও, একটানা হোয়াইট হাউসের ‘সুখ’ উপভোগ করতে চাইছেন না ধনকুবের।

আমেরিকার শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্র ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’-এর খবর, যাতে বেশ কিছুটা সময় তার সাধ-আহ্লাদের ম্যানহাটন অ্যাপার্টমেন্টে কাটিয়ে ফাঁক-ফোকরের কিছুটা সময় তিনি হোয়াইট হাউসে কাটাতে পারেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই তার উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতে শুরু করে দিয়েছেন ভাবী মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

একটা খবর এখন খুব চাউর হয়ে গেছে গোটা মার্কিন মুলুকে। সেটা হল- ভোটে হই হই করে জেতার পরেই নাকি খুব মুষড়ে পড়েছিলেন ট্রাম্প। এবার কী হবে? সাধের ম্যানহাটন অ্যাপার্টমেন্ট ছেড়েছুড়ে দিয়ে যে এ বার অন্তত চার বছরের জন্য চলে যেতে হবে ওয়াশিংটনের হোয়াইট হাউসে!

তখনই নাকি আশপাশের জনাকয়েক ঘনিষ্ঠকে ট্রাম্প প্রশ্ন করতে শুরু করে দিয়েছিলেন, ‘সপ্তাহে ক’টা দিন থাকতে হবে হোয়াইট হাউসে?’

এমনও শোনা যাচ্ছে সারা দিনটা নিউ ইয়র্কে কাটিয়ে রাতটা ওয়াশিংটনের হোয়াইট হাউসেও কাটাতে পারেন ভাবী মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

ভাবী ‘ফার্স্ট লেডি’ মেলানিয়া ট্রাম্পের অবশ্য হোয়াইট হাউসে যেতে কোনো আপত্তি নেই। পা বাড়িয়েই আছেন তিনি ‘সাদা বাড়ি’তে যাওয়ার জন্য। তবে তার দশ বছর বয়সী ছেলে ব্যারনের স্কুলটা নিউ ইয়র্কে। বেশ খানদানি স্কুল। রেজাল্টও বেশ ভাল হয় ওই স্কুলের। চট করে ওয়াশিংটনে গিয়ে ওই মানের স্কুল পাওয়া বেশ মুশকিলের।

সেক্ষেত্রে শুধুই যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সংসারটা দু’টুকরো হয়ে ছড়িয়ে থাকবে নিউ ইয়র্ক আর ওয়াশিংটনে, তাই নয়, প্রেসিডেন্টর প্রশাসনিক টিমটাকেও দু’টুকরো হয়ে যেতে হবে দু’টি শহরে।

কখন, কোথায়, কতটা সময় কাটাবেন ভাবী মার্কিন প্রেসিডেন্ট, তার অবশ্য একটা বিকল্প ফিরিস্তিও দিয়েছেন তার উপদেষ্টারা। তারা বলছেন, কংগ্রেসের অন্য সদস্যদের মতোই ট্রাম্প বেশির ভাগ সময়টাই কাটাবেন ওয়াশিংটনে। আর উইক এন্ডে কখনো যাবেন ট্রাম্প টাওয়ারের পেন্টহাউস অ্যাপার্টমেন্টে, কখরনা-বা নিউ জার্সির গল্‌ফ কোর্সে বা পাম বিচের ‘মার-আ-লাগো’ এস্টেটে। ট্রাম্প টাওয়ারে ডোনাল্ডের খানদানি অ্যাপার্টমেন্টটি রয়েছে ৫৯ তলায়। সেখান থেকে এলিভেটরে চেপে ট্রাম্প তাঁর ২৭ তলার অফিসে আসতেন এতদিন।

খুব ভোর ভোর ঘুম থেকে ওঠার স্বভাব ট্রাম্পের। ভোর পাঁচটায় ঘুম ভাঙার পরেই নিউ ইয়র্ক টাইমস, নিউ ইয়র্ক পোস্টের মতো দৈনিকে চোখ বোলান তিনি। তার পরেই টিভি চ্যানেলগুলি মনিটরিং। -আনন্দবাজার।



মন্তব্য চালু নেই