সৌদিসহ মধ্যপ্রাচ্যে ঈদ উদযাপিত

সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে আজ শনিবার উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল আজহা। সৌদিতে সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত হবে পবিত্র মসজিদুল হারামে। এছাড়া মদিনা আল মনোয়ারা মসজিদে নববী, রিয়াদের ধিরা মসজিদসহ বড় বড় শহরগুলোতে হবে অসংখ্য ঈদের জামাত। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এসব জামাতে বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের সঙ্গে নামাজ আদায় করবেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

এর আগে গতকাল শুক্রবার থেকেই শুরু হয়েছে পবিত্র হজব্রত পালন। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়ায় এবারের হজ পেয়েছে ‘হজে আকবর’ এর মর্যাদা।

মোসলমানদের বৃহত্তম ধর্মীয় জমায়েত পবিত্র হজে বিশ্বের ১৬৩টি দেশ থেকে আগত ২০ লাখ মানুষ ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক- হে আল্লাহ, তোমার ডাকে আমি হাজির’ ধ্বনিতে গতকাল শুক্রবার মুখরিত হয়েছে সৌদি আরবের আরাফাত ময়দান। মহান আল্লাহর কাছে ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম হজ পালন করতে আসা মানুষদের এই সমবেত কণ্ঠের এই আকুল আনুগত্যের ধ্বনি ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বের প্রতিটি মোসলমানের হৃদয়ে।

স্থানীয় সময় অনুযায়ী আরবি মাস জিলহজ মাসের ৯ তারিখে উকুফে আরাফাত বা আরাফাতের পবিত্র এই দিনে বিগত দিনের গুনাহ মাফ ও মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যমে জান্নাত লাভের আশায় মুসল্লিদের কান্নায় ভারি হয়ে ওঠে গোটা আরাফাতের বিশাল প্রান্তর। তারা মহানবীর (সা.) বিদায় হজের স্মৃতিবিজড়িত আরাফাতে অবস্থান করেন সারাদিন। মধ্যাহ্নের পর মসজিদে নামিরা থেকে সৌদি গ্র্যান্ড মুফতি শেখ আবদুল আজিজ বিন আবদুল্লাহ আল শেখের দেয়া খুতবা শোনেন তারা। তিনি তার খুতবায় বিশ্ব মুসলিম জাহানের বর্তমান অবস্থার কথা উল্লেখ করে পবিত্র কোরআন ও হাদিসের আলোকে মোসলমানদের করণীয় সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দেন।

তিনি ইসলামের সুমহান ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দের কথা উল্লেখ করেন বলেন, ‘সন্ত্রাস মানবতার শান্তি আনতে পারে না। ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলাম কখনও সন্ত্রাস পছন্দ করে না। তিনি কোরআন ও হাদিসের আলোকে জীবন পরিচালিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। আলোকপাত করেন হজের গুরুত্ব ও মর্যাদার ওপর।’

খুতবা শেষে হাজিরা একই সঙ্গে ভিন্ন ভিন্ন ইকামতে জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করেন। সূর্যাস্তের পরই রওনা হন মুজদালিফার উদ্দেশে। সেখানে তারা সাদা-কালো, ধনী-গরিব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে খোলা আকাশের নিচে রাতযাপন করেন। সংগ্রহ করেন শয়তানকে নিক্ষেপের জন্য কংকর।

শনিবার ১০ জিলহজ ফযরের নামাযের পর তারা ফিরবেন মিনায়। সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়লেই কংকর নিক্ষেপ করবেন শয়তানের উদ্দেশে। কংকর নিক্ষেপ শেষে পশু কোরবানি করে মাথার চুল মুণ্ডনের মাধ্যমে ইহরাম ত্যাগ করবেন তারা। একইভাবে ১১ জিলহজ ও ১২ জিলহজ শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করবেন। হাজিরা ১০, ১১ ও ১২ তারিখ যে কোনো একদিন সুবিধা মতো সময়ে সেরে নেবেন হজের অবশ্য করণীয় একটি ফরজ পবিত্র কাবা শরিফ তাওয়াফ।

হজ উপলক্ষে মক্কা, মিনা, মুজদালিফা ও আরাফাত সর্বত্রই রয়েছে সৌদি নিরাপত্তা বাহিনীর কড়া নজরদারি। অগ্নিনির্বাপণ ও স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা ছিলেন তত্পর। সৌদি টেলিভিশন ২৪ ঘণ্টা সরাসরি সম্প্রচার করছে হজের যাবতীয় কার্যক্রম।



মন্তব্য চালু নেই