সেনাবাহিনীতে বিদ্রোহের ইঙ্গিত? প্রথা ভাঙার ফল হাতে নাতে পাচ্ছে মোদী সরকার

লেফটেন্যান্ট জেনারেল বিপিন রাওয়াতকে সেনাপ্রধান হিসবে নির্বাচিত করছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। এতেই বিতর্কের শুরু। কারণ লে.জে. রাওয়াতের উপরেও অন্তত দু’জন অফিসার ছিলেন, পূর্ব কমান্ডের প্রধান লে.জে. প্রবীণ বক্সি এবং দক্ষিণ কমান্ডের লে.জে. পিএম হারিজ। বয়সের বিচারে, প্রথা অনুযায়ী এই দু’জনের মধ্যে কারও একজনের সেনাপ্রধা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাঁদের টপকে সরকার লে.জে. রাওয়াতকেই নির্বাচন করায় শুধু রাজনৈতিক বিতর্কই নয়, সেনাবাহিনীর অন্দরেও অসন্তোষ জন্মেছে।

পূর্ব কমান্ডের অফিসারদের মধ্যে এই নিয়ে অসন্তোষ এতই তীব্র হয়েছে যে বিদায়ী সেনাপ্রধান দলবীর সিংহ সুহাগ তাঁর কলকাতা সফরের সময় বেশিক্ষণ ফোর্ট উইলিয়ামে থাকতে চাননি। সেনা সূত্রের খবর, যে কোনও বিদায়ী সেনাপ্রধানই দায়িত্ব ছাড়ার আগে দেশের নানা প্রান্তে সেনাঘাঁটিতে একবার করে ঘুরে আসেন। তাঁকে বিদায় সংবর্ধনা জানানোর সুযোগ পান সেনাকর্তা এবং জওয়ানরা। সেই প্রথা মেনেই, তাঁর দু’দিনের কলকাতা সফরের সময়সূচী চূড়ান্ত হলেও, তিনি সেই সফর কাটছাট করে মাত্র চার ঘণ্টা ফোর্ট উইলিয়ামে কাটিয়েই কলকাতা ছাড়েন। কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি না হলেও, জেনারেল সুহাগ অসন্তোষের আঁচ পেয়েছিলেন বলেই খবর।

পূর্ব কমান্ডের প্রধান লে.জে. প্রবীণ বক্সি ইতিমধ্যেই দিল্লি গিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পরিকরের সঙ্গে দেখা করে এসেছেন। সরকার প্রথা ভাঙায়, তা সেনাবাহিনীর মনোবলেও আঘাত করেছে বলে সেনা সূত্রের খবর। কারণ এর ফলে সেনাবাহিনীতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের আশঙ্কা আরও বাড়ছে।

আর এই বিতর্কের মাঝে সবচেয়ে বড় বোমাটি ফাটাতে পারেন লে.জে. প্রবীণ বক্সি। একটি আশার আলো দেখা যাচ্ছিল তাঁকে সেনাপ্রধান না করে মোদী সরকার লে.জে. বক্সিকে চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ করতে পারে। কিন্তু সে আশাও ক্রমশ ক্ষীণ হতে শুরু করেছে। যে গুঞ্জন বাড়ছে তা হল আগামী ৩১ ডিসেম্বর মোদী সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে লে.জে. বক্সি পদত্যাগ করতে পারেন।

যদি তিনি সত্যিই পদত্যাগ করেন তা হবে মোদী সরকারের জন্য একটি বড় ধাক্কা। সাম্প্রতিক অতীতে সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সেনাবাহিনীতে এইরকম ঘটনার নজির নেই।



মন্তব্য চালু নেই