‘সেদিন প্রায় বিবস্ত্র এক নারী ঢুকে পড়েন রোকেয়া হলের গেস্ট রুমে’
বর্ষবরণের দিন। পরনে এলোমেলো শাড়ি। ব্লাউজ কিছুটা ছেঁড়া। দুই চোখে জল। চোখে-মুখে ভয়-আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। প্রায় বিবস্ত্র অবস্থায় তিনি ঢুকে পড়লেন রোকেয়া হলের গেস্টরুমে। এমন দৃশ্য দেখে দৌড়ে গেলাম। কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন মেয়েটি। এর পর যা বললেন, তা অবিশ্বাস্য, মর্মান্তিক। রাজু ভাস্কর্যের কাছে কিছু যুবকের হাতে চরমভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন তিনি। তাকে শাড়ি পরিয়ে দিয়ে আবরু রক্ষা করেছি।
নববর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিপীড়নের শিকার এক তরুণীকে রোকেয়া হলে আশ্রয় নেওয়ার পর তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে যান এক ছাত্রী। গতকাল রাতে ঢাবির মার্কেটিং বিভাগের এ ছাত্রী তিনি এ ঘটনা হলের প্রভোস্টকেও জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, সেদিন পুরো ক্যাম্পাস লোকে লোকারণ্য। কোথাও পা ফেলার জায়গা নেই। সন্ধ্যার দিকে আমার ভাইয়ের সঙ্গে হলের ফটকে দাঁড়িয়েছিলাম। হঠাৎ দেখি, একজন নারী হলের সামনে রিকশা থেকে নামছে। পোশাক একেবারেই এলোমেলো। দ্রুত হলের ভেতরে ঢুকলেন তিনি। গেস্টরুমে গিয়ে বসলেন। তার চেহারায় ক্ষোভ, ভয় আর আতঙ্কের ছাপ। তিনি জানালেন। একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেন তিনি। থাকেন আজিমপুরে। হবু বরের জন্য টিএসসি এলাকায় অপেক্ষা করছিলেন। টিএসসি এলাকায় এসে যে আচরণের শিকার হয়েছেন, তা জীবনের সবচেয়ে ভয়ংকর অভিজ্ঞতা। কিছু তরুণ বাজে মন্তব্য করে তাকে ঘিরে ফেলে। তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মনে হয়নি। তারা তাকে প্রায় বিবস্ত্র করে ফেলে।
ওই ছাত্রী জানান, হলের প্রভোস্টের মাধ্যমে ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন তিনি। প্রথমে তার ধারণা ছিল, শুধু ওই মেয়েটি বিচ্ছিন্নভাবে এমন ঘটনার শিকার হন। পরে একই ধরনের আরও কয়েকটি ঘটনা তাদের কানে আসে। হতবিহ্বল হয়ে পড়ায় তাৎক্ষণিকভাবে ওই তরুণীর বিস্তারিত নাম-পরিচয় নেওয়ার কথা তার মাথায় আসেনি। পরে ওই নারী একটি রিকশায় উঠে বাসায় চলে যান।
এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ এম আমজাদ জানান বলেন, বখাটেদের উত্ত্যক্তের শিকার এক নারী রোকেয়া হলে গিয়ে আশ্রয় নিলে ওই হলের ছাত্রী ইরা মেয়েটিকে সাহায্য করে। প্রভোস্ট ইরার বক্তব্য শুনেছেন। পরে তদন্ত কমিটি ইরাকে ডেকে নেবে।
আরো পড়ুন :
মন্তব্য চালু নেই