সামরিক কবরস্থানে কোকোর মরদেহ দাফন হচ্ছে না

প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মরদেহ বনানীর সামরিক কবরস্থানে দাফন করা হচ্ছে না।

লাশ দাফনের জন্য যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে অনুতি চাওয়া হলেও এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো ধরনের ইতিবাচক কিছু জানা যায়নি।

কল্যাণ পার্টির শেখ মোহাম্মদ জগলুল মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে সাংবাদিকদের জানান, প্রাক্তন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানের সন্তান হিসেবে কোকোর মরদেহ বনানীর সামরিক কবরস্থানে দাফনের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। তবে অজ্ঞাত কারণে তার অনুমতি মেলেনি। এখন তাকে সাধারণ কবরস্থানে দাফন করা হবে।

তবে ঠিক কোথায় কোকোকে দাফন করা হবে সে বিষয়ে পরে জানানো হবে বলে জানান তিনি।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, শেষ পর্যন্ত সামরিক কবরস্থানে লাশ দাফনের অনুমতি না পাওয়া গেলে বগুড়ায় নিজের গ্রামের বাড়িয়ে কোকোর লাশ দাফন করা হতে পারে।

এদিকে, গুলশান-বনানীর ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কমিশনার আবদুল আলীম নকি জানিয়েছেন, কোকোর লাশ বনানীর সামরিক কবরস্থানে দাফনের জন্য অনুমতি না মিললেও কবরস্থানের পূর্ব পাশে বেসামরিক জনগণের জন্য নির্ধারিত স্থানে দাফনের জন্য অনুমতি মিলেছে।

এর আগে সোমবার রাতে প্রাক্তন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানের সন্তান হিসেবে বনানীর সামরিক কবরস্থানে আরাফাত রহমান কোকোর মরদেহ দাফনের অনুমতি পাওয়া যাবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছিল বিএনপি।

দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘প্রাক্তন একজন সেনাপ্রধানের সন্তান হিসেবে প্রচলিত নিয়মেই এটি তার (আরাফাত রহমান কোকো) প্রাপ্য। কিন্তু দেশের তো এখন সবকিছু ন্যায্যভাবে হচ্ছে না। তবুও প্রত্যাশা করি সেখানে লাশ দাফনের অনুমতি পাওয়া যাবে। অনুমতি না দিয়ে কেউ নষ্ট দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে না।’ বনানী কবরস্থানের ব্যাপারে অনুমতি চাওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর মরদেহ বিমানবন্দর থেকে সরাসরি গুলশান কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে কোকোর মরদেহ নিয়ে গুলশানের কার্যালয়ের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে বিএনপির উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল।

মঙ্গলবার মালয়েশিয়ার স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে মালয়েশিয়া এয়ারলাইনসের এমএইচ-১০২ বিমানে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন কোকোর স্বজনরা। দুপুর ১১টা ৩৭ মিনিটে বিমানটি ঢাকায় অবতরণ করে।

কোকোর মরদেহ বিমানবন্দর থেকে সরাসরি গুলশান কার্যালয়ে নেওয়া হবে। বিকেল ৪টার মধ্যে মরদেহের দ্বিতীয় জানাজার জন্য জাতীয় মসজিদ রায়তুল মোকাররমে নেওয়ার কথা রয়েছে। বাদ আসর এই জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে রোববার বাদ জোহর মালয়েশিয়ার নিগারা জাতীয় মসজিদে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

গত শনিবার বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মালয়েশিয়ায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ মারা যান বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র আরাফাত রহমান কোকো। তার মৃত্যুতে সোমবার থেকে তিন দিন বিএনপি দেশব্যাপী শোক দিবস পালন করছে। এ উপলক্ষে দেশের সকল দলীয় কার্যালয়ে সোমবার থেকেই কালো পতাকা উত্তোলন ও নেতা-কর্মীরা কালো ব্যাজ ধারণ করেছেন।

সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সেনানিবাসের বাড়ি থেকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে গ্রেফতার হন কোকো। ২০০৮ সালের ১৭ জুলাই জামিনে মুক্তি পাওয়ার পরদিন চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড যান তিনি। সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী শর্মিলা রহমান, দুই মেয়ে জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমান। থাইল্যান্ড যাওয়ার পর মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকায় সেখান থেকে মালয়েশিয়ায় চলে যান কোকো। গত শনিবার বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেলে কোকোকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।



মন্তব্য চালু নেই