দুই জেলায় নিহত ৩

সংঘাত-সহিংসতায় ভোট চলছে ৭১৭ ইউপিতে

সংঘাত, সংঘর্ষ, কেন্দ্র দখল ও অনিয়মের মধ্যে দিয়ে দেশের ৭১৭টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে। শনিবার সকাল আটটায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। বিরতিহীনভাবে এই ভোটগ্রহণ চলবে বিকাল চারটা পর্যন্ত। সকাল সাড়ে ১১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জামালপুর ও নোয়াখালীতে কেন্দ্র দখলের চেষ্টার সময় সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে দুইজন এবং নোয়াখালীতে একজন নিহত হয়েছে। এছাড়া বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে জাল ভোট দেয়ার খবর পাওয়া গেছে।

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে কেন্দ্র দখলকে কেন্দ্র করে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্য ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুইজন নিহত হয়েছেন। উপজেলার বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের খুঁটিরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। নিহতদের নামপরিচয় জানা যায়নি।

জানা গেছে, সকালে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকরা কেন্দ্র দখল করতে চাইলে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকরা বাধা দেন। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ শটগানের কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। সংঘর্ষের সময় গোলাগুলিতে দু’জনের মৃত্যু হয়। তবে তারা কোন পক্ষের সমর্থক তা জানা যায়নি। দেওয়ানগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবদুল হান্নান সংঘর্ষের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জের রাজগঞ্জ ইউনিয়নে কেন্দ্র দখল করে ভোট দেয়ার চেষ্টার সময় সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। হতাহতদের নামপরিচয় জানা যায়নি।

চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের বেঙ্গুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এছাড়া করুমডাঙ্গার তালুকদারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সংঘর্ষে সেকান্দর মিয়া নামে একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এছাড়া উপজেলার চরণদি গাটিয়ালপাড়া কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ব্যালট ছিনতাইয়ের কারণে ভোট স্থগিত করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

কুমিল্লার তিতাস উপজেলার সাতানি ইউনিয়নে ভোটকেন্দ্র দখল নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। শনিবার সকাল নয়টার দিকে শুরু হওয়া সংঘর্ষে পাঁচজন গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন।

এছাড়া দেশের আরও কয়েকটি স্থানে সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে।

উল্লেখ্য, দেশের ৭১৭ ইউনিয়নে পঞ্চম ধাপের ভোটগ্রহণ আজ সকাল নয়টায় শুরু হয়েছে।

সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্নের জন্য নির্বাচন কমিশন (ইসি) পক্ষ থেকে সব ধরণের প্রস্তুতি নেয়ার করা জানানো হয়। এজন্য মাঠে পুলিশ, বিজিবি ও র‌্যাব সদস্যদের পাশাপাশি মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য জুডিশিয়াল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের দায়িত্ব দেয়া হয়।

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, পঞ্চম ধাপে চেয়ারম্যান পদে ৭১৭ ইউপিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন ৩,২৫৪ জন। এর মধ্যে ১৫টি দলের প্রার্থী ১,৭২৭ জন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ১,৫২৭ জন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী রয়েছে ৭২০ ইউপিতে, ৬২৩ ইউপিতে রয়েছে বিএনপির প্রার্থী। এ ধাপে নৌকা প্রতীকের ৪২ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

এ ছাড়া জাতীয় পার্টি ১৭৭টি, জাসদ ২১টি, বিকল্পধারা দু’টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ১৩টি, ইসলামী আন্দোলন ১২২টি, জেপি দু’টি, ইসলামী ফ্রন্ট ১১টি, এলডিপি ছয়টি, সিপিবি পাঁচটি, জেএসডি একটি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ছয়টি, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট সাতটি এবং অপর একটি দল এক ইউপিতে প্রার্থী দিয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই