শেখ হাসিনার সাক্ষাতের অপেক্ষায় বাংলাদেশি ক্ষুদে আইন স্টাইন সুবর্ণ

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিস্ময় শিশু সুবর্ণ আইজ্যাক বারী। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত এ শিশু ইতোমধ্যে বিজ্ঞান ও গণিতে প্রতিভা দেখিয়ে মুগ্ধ করেছে সবাইকে। ব্যাপক প্রতিভাবান সুবর্ণ সাড়া ফেলেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গণমাধ্যমে।

সুবর্ণ অক্সফোর্ড থেকেও স্বীকৃতি পেয়েছে। বিজ্ঞান মহলে সাড়া জাগানো এই বিস্ময় শিশুর মেধার স্বীকৃতি দিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। চিঠিতে ওবামা লিখেছিলেন, ‘আমেরিকায় তোমার মতো শিক্ষার্থী দরকার।’

সুবর্ণর বাবা রাশিদুল বারী যুক্তরাষ্ট্রের একটি কলেজের গণিতের প্রফেসর। তিনি চট্রগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এবং নেতৃবৃন্দের কাছ থেকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা পেয়েছে সুবর্ণ। চলতি মাসের ৯ তারিখে সুবর্ণের ৫ম জন্মদিন।

পাঁচ বছরে পা রাখার আগেই গণিত এবং পদার্থের ওপর ব্যাপক দক্ষতা অর্জন করেছে এই ক্ষুদে আইন স্টাইন। দেড় বছর বয়সে সে রসায়নের পর্যায় সারণী মুখস্থ করে ফেলে। প্রভাবশালী মার্কিন গণমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা তার সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে।

সম্প্রতি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি লুইস রিচার্ডসন তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে একটি চিঠি দেন। এর আগে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাদ সুবর্ণকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা সম্বলিত চিঠি পাঠিয়েছেন।

তবে সবকিছু ছাপিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে সুবর্ণ এবং তার পরিবার। এত কিছুর পরও সুবর্ণর বাবা রাশিদুল বারীর আরো একটি প্রতীক্ষা আছে। তিনি চান প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও যেন সুবর্ণের কৃতিত্বকে মূল্যায়ন করে স্বীকৃতি দেয়।

সুবর্ণর বাবা জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি সামিয়া ইসরাত রোনি তাকে ই-মেইল করেছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন যে, তারা সুবর্ণর সঙ্গে দেখা করতে চান। গত সোমবার (৩ এপ্রিল) ফার্স্ট সেক্রেটারি সামিয়া ইসরাত রোনি এবং ফার্স্ট সেক্রেটারি আল মামুন সুবর্ণর সঙ্গে সাক্ষাত করেন।

এ সময় সুবর্ণ কিছুটা অসুস্থ ছিল। কিন্তু তার বাবা তার এই অসুস্থতার কথা গোপন রাখেন। কারণ এতে বাংলাদেশি দূতাবাসের কর্মকর্তারা ভাবতে পারেন যে, তিনি হয়তো তাদের এড়িয়ে চলছেন। তিনি সেটা চাননি- লিখেছেন রাশিদুল বারী।

পরে ওই কর্মকর্তারা গণিত, রসায়ন এবং পদার্থে সুবর্ণর দক্ষতা যাচাই করেন। অসুস্থ থাকার পরও দুই মিনিটেরও কম সময়ে সুবর্ণ রসায়নের পর্যায় সারণী লিখে দেখিয়েছে। পরে তাকে কিছু গাণিতিক সমস্যা সমাধান করতে বলা হয়। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই বিস্ময় শিশু সেসব সমস্যাও অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সমাধান করেছে। তারা সুবর্ণর দক্ষতা এবং তার হাতের লেখা দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।

সুবর্ণর বয়স যখন মাত্র সাত মাস তখন থেকেই প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে চলেছে সুবর্ণ। তার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে চলে যাওয়ার সময় আল মামুন সুবর্ণর বাবাকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি কি চান নিউ ইয়র্ক বা বাংলাদেশে সুবর্ণর সঙ্গে আমাদের প্রধানমন্ত্রী সাক্ষাত করুক?’ তখন খুব দ্রুতই রাশিদুল বারী উত্তর দিয়েছিলেন ‘বাংলাদেশে’।

এখন সুবর্ণর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে পুরো বিশ্ব।

সূত্র : হাফিংটন পোস্ট, বারী সাইন্স ল্যাব।



মন্তব্য চালু নেই