শর্ত পূরণ না হলে যুদ্ধবিরতি নয়: হামাস

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি অবরোধ প্রত্যাহার করা না হলে কোনো যুদ্ধবিরতি মেনে নেওয়া হবে না জানিয়েছে হামাস।

হামাস নেতা খালেদ মেশালের বরাত দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামাসের শর্ত পূরণের আগ পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির সব আহ্বান প্রত্যাখ্যান করা হবে।

হামাসের শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে গাজার ওপর থেকে আট বছরের অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নেওয়া, মিসরের সাথে রাফা সীমান্ত খুলো দেওয়া এবং ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেওয়া।

তবে গাজায় ‘মানবিক যুদ্ধবিরতি’ মানতে হামাস রাজি আছে বলেও জানিয়েছেন খালেদ মেশাল।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের কয়েক ঘণ্টা শান্ত থাকা উচিত। এর মধ্যে যারা আহত হয়েছে তাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং ত্রাণ সরবরাহ বাড়ানোর জন্য কাজ করা উচিত।’ এছাড়া গাজাতে ওষুধ, জ্বালানি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ করতে এ সময় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান মেশাল।

হামাস নেতা খালেদা মেশালের এমন বক্তব্যের পর গাজায় ইসরায়েলি বিমান ও স্থল অভিযান আরো জোরদার করা হয়েছে। অন্যদিকে হামাসও ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে তাদের রকেট হামলা অব্যাহত রেখেছে।

হামাস গাজা থেকে ইসরায়েলের ওপর রকেট হামলা চালাচ্ছে- এমন অভিযোগ এনে গত ৮ জুলাই থেকে গাজা উপত্যকায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। পরবর্তীতে বিমান হামলার সঙ্গে যুক্ত হয় স্থল অভিযানও।

গাজার হাসপাতাল সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর ১৭ দিনে অন্তত ৭১৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশুসহ বেসামরিক নাগরিক।

এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি নেতাদের সাথে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সাথে বৈঠক শেষে রামাল্লায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট আব্বাস সমাধানের পথটি জানেন। তাই আমরা একটা অস্ত্র বিরতির জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাব। আমি বলতে পারি, গত ২৪ ঘণ্টায় আমাদের লক্ষ্যের দিকে বেশ অগ্রসর হয়েছি।’

অন্যদিকে গাজায় যুদ্ধাপরাধ সংঘটনের যে অভিযোগ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে উঠেছে তার তদন্ত করার ব্যাপারে ভোটাভুটির মাধ্যমে একমত হয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন।

তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর মিডিয়া অফিস থেকে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের এ পদক্ষেপের নিন্দা জানানো হয়েছে।

ইসরায়েলের বিচার বিভাগের মন্ত্রী এর আগে বলেছিলেন, তার দেশ আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী কাজ করছে।

গতকাল বুধবার জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের এক জরুরি বৈঠকে সংস্থাটির হাইকমিশনার নাভি পিল্লাই গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের নিন্দা জানিয়ে বলেন, এই অভিযানে ইসরায়েল যা করেছে তা যুদ্ধাপরাধ হিসাবে গণ্য হতে পারে।



মন্তব্য চালু নেই