লন্ডনে হাসিনার হোটেলের সামনে বিএনপির বিক্ষোভ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লন্ডন সফর উপলক্ষে বিক্ষোভ করেছে লন্ডনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের নেতা কর্মীরা। নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন, বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের দমন-পীড়নসহ গুম-খুন ইস্যুতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিভিন্ন দাবি দাওয়া সংক্রান্ত পোস্টারসহ তারা স্লোগানও দেয়।
বুলগেরিয়ায় অনুষ্ঠেয় গ্লোবাল উইমেন লিডারস ফোরামে যোগ দিতে ইউরোপ সফরে আছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এখন তিনি লন্ডনে অবস্থান করছেন, সেখানে দুদিন অবস্থান করে বুলগেরিয়ার রাজধানী সোফিয়ায় যাবেন শেখ হাসিনা। সেখানে বুধ থেকে শুক্রবার অনুষ্ঠেয় উইমেন লিডারস ফোরামে অংশ নেবেন তিনি।
রোববার (১৫ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি নিয়মিত ফ্লাইটে লন্ডনের পথে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় (লন্ডন সময় বিকাল ৪টা) তিনি লন্ডন পৌঁছান। হিথরো বিমানবন্দরে শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান তার ছেলে ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার আবদুল হান্নান। মায়ের সফর উপলক্ষে জয় যুক্তরাষ্ট্র থেকে যুক্তরাজ্যে গেছেন। শেখ হাসিনার সঙ্গে তার বোন শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিও রয়েছেন। বিমানবন্দরের বাইরে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জড়ো হয়ে শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান।
প্রধানমন্ত্রীর লন্ডন সফরকে কেন্দ্র করে সেন্ট্রাল লন্ডনের ওয়েস্ট মিনিস্টারের তাজ হোটেলের সামনে স্থানীয় সময় বেলা ২ টা থেকে ৭টা পর্যন্ত অবস্থান করে ২০ দলীয় জোটের নেতা কর্মীরা ও যুক্তরাজ্য বিএনপির বিভিন্ন জোনের নেতাকর্মীরা। কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে যুক্তরাজ্য জামায়াতও, একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের দায়ে দলটির আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির প্রতিবাদেরও স্লোগান দেয়। ব্যানার ও ফেস্টুন উঁচু করে প্রতিবাদও জানায় নেতাকর্মীরা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লন্ডনে অবস্থানের সময় এই হোটেলেই অবস্থান করবেন। যুক্তরাজ্য বিএনপি’র সভাপতি এম এ মালেক জানান, শেখ হাসিনা যতদিন এখানে অবস্থান করবেন, নিয়ম করে প্রতিদিন এই হোটেলের সামনে ২০ দলীয় জোটের নেতা কর্মীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করবে।
বিক্ষোভ কর্মসূচি প্রসঙ্গে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক বলেন, ‘বাংলাদেশের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যে কোনো মূল্যে প্রতিহত করা হবে। গণতান্ত্রিক দেশ বৃটেনে কোনো স্বৈরাচারের জায়গা হবে না। শেখ হাসিনার লুটপাট আর স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে আমাদের এই গণতান্ত্রিক প্রতিবাদ ব্রিটেনে অব্যাহত থাকবে।’ যেখানেই হাসিনা সেখানেই প্রতিরোধ এই মর্মে শপথ নিয়ে কর্মসূচি সফল করা হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
যুক্তরাজ্য বিএনপি সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদ বলেন, ‘৫ জানুয়ারির অবৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের কবর রচনা করে তিনি দেশে বাকশাল কায়েম করেছেন, তাই আমরা তাকে ব্রিটেনে স্বাগত জানাতে পারি না।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ইউরোপের মূখপাত্র ব্যারিস্টার আবু বকর মোল্লা বলেন, ‘ক্ষমতা দখলের পর থেকেই এই ফ্যাসিস্ট সরকারবিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হত্যা, গুম ও নির্যাতনের যে স্টিম রোলার চালাচ্ছেন তা ১৯৭১ সালের পাক বাহিনীর বর্বরতাকেও হার মানায়। অত্যাচার ও নির্যাতন চালিয়ে কোনো সরকারই টিকে থাকতে পারেনি আর শেখ হাসিনাও পারবেন না। বাংলাদেশের জনগণ তাকে টেনে হিঁচড়ে ক্ষমতা থেকে নামাবে।’
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের উদ্যোগে ওয়েস্ট মিনিস্টারের তাজ হোটেলের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে ইউকে বিএনপি’র সভাপতি এম এ মালেকের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন, যুক্তরাজ্য বিএনপি সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদ, বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ইউরোপের মূখপাত্র ব্যারিস্টার আবু বকর মোল্লা, জমিয়তে ওলামা ইউকের সভাপতি মুফতি শাহ সদর উদ্দিন, বিএনপির নেতা আব্দুল হামিদ চৌধুরী, আবুল কালাম আজাদ, লুৎফর রহমান, আকতার হোসেন, গোলাম রব্বানী, ফরিদ উদ্দিন, শহিদুল ইসলাম, তাজ উদ্দিন, কামাল উদ্দিন, শামসুর রহমান, জসিম উদ্দিন, নাসিম আহমেদ চৌধুরী, খসরুজ্জামান খসরু, জাহেদ আলী, শামীম আহমেদ, নসরুল্লাহ খান যুনায়েদ প্রমুখ ।
বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক সম্পাদক পারভেজ মল্লিক, সাংবাদিক নুরে আলম, ছাত্রনেতা হাসিবুল হাসান, নাজমুল হাসান জাহিদ,সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ফরিদুল ইসলাম, বিশিষ্ট মানবাধিকার আইনজীবী ব্যারিস্টার বদরে আলম দিদার, মুহম্মদ এবি সেলিম, সাংবাদিক মাহবুব আলী খানশূর, সাংবাদিক আমিমুল আহসান তানিম, মনিরুল হক, অনলাইন একটিভিসট শরিফুজ্জামান তপন, বিএনপি নেতা শাহিন আহমেদ, মানবাধিকারকর্মী এসকে তরিকুল ইসলাম, মাহবুবুর রহমান, গরীব হোসেন, মাহবুব আলম তোহা, আমিনুল ইসলাম, শরফুজ্জামান শরফু, আব্দুল মতিন প্রমুখ।
মন্তব্য চালু নেই