‘রাষ্ট্রকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়ানো উচিৎ’

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড.মিজানুর রহমান বলেছেন, ‘নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে রাষ্ট্র ব্যর্থ। এজন্য রাষ্ট্রকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়ানো উচিৎ।

শনিবার বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ভবনের সেমিনার হলে বাংলাদেশ পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) আয়োজিত ‘বিষমুক্ত খাদ্য নিশ্চিতকরণ গৃহীত ব্যবস্থা ও করণীয়’ শীর্ষক সভায় তিনি এ কথা বলেন।

মিজানুর রহমান বলেন, ‘খাদ্যে ভেজাল মেশানো বা বিষ মেশানোর অভিযোগে ফুটপাতের ছোট ছোট ব্যবসায়ীদের শাস্তি দেয়া হচ্ছে। কিন্তু এর পেছনে যারা ইন্ধনদাতা তারা ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছেন। তাদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেয়া উচিৎ। আর এটি পারবে রাষ্ট্র।’

আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘কারো পায়ে বন্দুক ঠেকিয়ে গুলি করা আপনাদের কাজ নয়। আপনাদের উচিৎ যেকোনো অপরাধের সঠিক তদন্ত করা এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া।’

‘দেশে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে যে আইন প্রণয়ন করা হয়েছে তা খুবই দুর্বল’ উল্লেখ্য করে মিজানুর রহমান বলেন, ‘এটাকে আরো শক্তিশালী করা উচিৎ এবং নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। এটা অন্য কারো কাজ নয়।’

তিনি বলেন, ‘কাউকে এমনিতেই জঙ্গি বলা যাবে না। জঙ্গি প্রমাণ করে আদালতের বিচার শেষে তারপর তাকে জঙ্গি বলা যাবে। আগে বলা যাবে না। আইন আমাকে এমন দায়িত্ব দেয়নি যে আমি একজনকে সন্দেহ করে তার পায়ে বন্দুক ঠেকিয়ে গুলি করবো।’

মানবাধিকার কমিশনের এই চেয়ারম্যান বলেন, ‘রাষ্ট্র যখন নিরাপদ খাদ্যসহ সকল নাগরিকের সকল অধিকার নিশ্চিত করতে পারবে তখনই রাষ্ট্র সফল। আর তখনই রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালন হবে।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক বলেন, ‘পবা যে কাজটি করছে তা আমাদের সবারই দায়িত্ব। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে এর সাথে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে সচেতন হতে হবে। ১৯৭১ সালে বিষযুক্ত খাবারের জন্যই কি আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি? নিরাপদ খাদ্য ১৬ কেটি মানুষের জন্য, পবার একার জন্য নয়। আমরা যদি নিরাপদ খাদ্য আমাদের প্রজন্মকে খাওয়াতে না পারি তাহলে পাঁচ থেকে সাত বছর পর আমাদের ছেলেমেয়েরা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরবে। এজন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব।’

মানবাধিকার সংগঠন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মানবাধিকার সংগঠনগুলো শুধু সরকারের সমালোচনা করে কিন্তু গঠনমূলক কাজ করে না। যেমন একজন ধর্ষিতার পাশে, হত্যার শিকার পরিবারের পাশে কেউ দাঁড়ায় না, তাদের হয়ে কথা বলে না।’

সভায় পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক বিচারপতি এটিএম ফজলে কবির, রশিদ ই মাহবুব, লেলিন চৌধুরী। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পবার নির্বাহী সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আব্দুস সোবহান।



মন্তব্য চালু নেই